সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

অপরাধী চোখ কিছু খুঁজে ফিরে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৯:২৪ পিএম, ২১ এপ্রিল, ২০২৪

জীবন যখন ছন্দবিহীন। রাষ্ট্র তখন অস্থির পদচারণায় ক্ষত-বিক্ষত। সমাজের প্রতি রন্ধ্রে কত যে অসঙ্গতি! তবুও পথ চলতে হয়। প্রতিদিনের কষ্ট মাখা আলো আঁধারের লুকোচুরি চোখে পড়ে। মিরপুর থেকে প্রেসক্লাব কিংবা মতিঝিল, পল্টন যেতে হয় প্রায় প্রতিদিন। এই রুটিন চলছে ১৫ বছরের বেশী। ফেরার পথে বাংলামটর পার হয়ে হাতের বাম পাশে বেশ খানিকটা ফাঁকা জায়গা। হোটেল সুন্দরবনের পূর্ব পাশে, এখানে অনেকটা জায়গা জুড়ে জঙ্গল বেড়ে উঠেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ফেরার পথে প্রায়ই  চোখে পড়ে কিছু অপ্রিয় দৃশ্য। বিকেল কিংবা সন্ধ্যা নামলেই, আমাদের মা,বোনেরা সস্তা দামের কড়া মেকাপ মেখে, হরেক রকম সাজগোছ করে, ফুটপাতে,গাছে হলান দিয়ে, খামের আড়ালে বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গি করে দাড়িয়ে থাকে। ওরা খদ্দের এর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। খদ্দের পেলেই টুপ টুপ করে বনের আড়ালে চলে যায়। দৃশ্য টা প্রতিনিয়ত ফেরার পথে চোখে পড়ে। অনেক সময় প্রশাসন ও সমাজপতিদের প্রতি বিরক্তি সৃষ্টি হয়! রাজধানীর রাজপথে প্রকাশ্যে চলছে এসব দেখার কেউ নেই। এসব বন্ধ না অল্প বয়সী টিনএজারদের সমুহ ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে? যা হোক এখন প্রায় প্রতিদিন, এই জায়গায় এলেই চোখ আপনি চলে যায় ওই দিকে। ছায়া দৃশ্য অবলোকন করে দু‍‍`নয়ন।

এই যে একজন বুড়ো চাচা পা টেনে হাঁটছে, চুল, দাঁড়ি সব সাদা, খদ্দের হয়ে এলেন। চাচার মনে হলো বাজেট কম, উনার হাতে টাকা, কয়েক জন মেয়ের সামনে গেলেন। তারা চাচার সাথে যেতে রাজি নয়।শেষে একটা মেয়ে সম্মত হলো সম্ভবত মায়া দেখালো।সে চাচার হাত থেকে টাকা নিয়ে বুকের মাঝে ব্লাউজের ভিতর রেখে, চাচাকে নিয়ে জঙ্গলে আড়াল হলেন। অল্প সময় পরে ফিরে এলেন দু‍‍`জন। চাচা কে তৃপ্ত মনে হলো। মেয়েটা দাড়িয়ে গেলো আগের জায়গায়। ভাবনায় এলো চাচা হয়তো জীবন জীবিকার তাগিদে পাশে কোথাও কাজ করে। হয়তো লম্বা সময় বাড়ি যেতে পারে না কিংবা বাড়িতে কেউ নেই। কিন্তু জৈবিক চাহিদা সে এখনো সময় অসময়ে জেগে উঠে। পথের পাশে ওরা না থাকলে চাচা কোথায় যেতো?  এমনই শত ভাবনা।  

প্রতিদিন এখানকার দৃশ্য চিত্র দেখার যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। সামনে কাওরান বাজার, সার্ক ফোয়ারার আগে একটা লম্বা জ্যামে আটকা থাকা লাগে। এখন ভাদ্র পেরিয়ে আশ্বিন মাস শীত বর্ষার লুকোচুরি খেলা চলে। রাতে প্রচন্ড গরম, সকালে হাল্কা কুয়াশার চাদর। ঘন্টা ধরে ঝুম বৃষ্টি আবার মেঘমুক্ত নীল আকাশ। আজ বিকেলটা একেবারে বৃষ্টি ভেজা তেকতেকে।বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা নামছে,বিকল্প পরিবহন সেই জায়গায় থেমেছে। অপরাধী চোখ কিছু খুঁজে ফিরে, ময়লার ভেজা ঝুপঝাপ একেবারে বিশ্রী অনুভূতি। তবুও কি? হ্যাঁ ওরা অনেকেই চলে এসেছে। কারণ এদের ঘরে হয়তো রাতের খাবার নেই। হয়তো বা এদের ঘরই নেই। কিংবা অসুস্থ্য মা,বাবা কিংবা সন্তান!?

তারা কি সমাজের আবর্জনা নাকি ওদের জীবন দিয়ে সমাজের আবর্জনা কে ধারণ করে। ওরা শুধু বেঁচে থাকার সংগ্রাম করে না, সমাজ কলংক মুক্ত পরিচ্ছন্ন রাখার কাজটি ও করে থাকে। সমাজ কিংবা সমাজ পতি, রাষ্ট্র কিংবা তার কর্ণধার গণ কি অবলীলায় দায়িত্ব এড়িয়ে চলে যায়। মানবতা, মানবাধিকার আঁধারে মুখ লুকায়। আমরা সভ্য সমাজের বাবুরা নাক ছিটকে বলি রাস্তার পতিতা, গণিকা, বেশ্যা!? 
ওরা নারী আমাদের মা-বোন প্রণয়ীপ্রণয়িনী, কন্যা জায়া জননী ওদেরই জাত ----চলমান


একুশে সংবাদ/হা.ক.প্র/জাহা   
 

সাহিত্য বিভাগের আরো খবর