সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ইবি উপাচার্যের ‘কন্ঠ সদৃশ’ অডিও ইমেজ সংকটের কারণ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, ৪ এপ্রিল, ২০২৩

সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের ‘কন্ঠ সদৃশ’ একাধিক অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক প্রকার ইমেজ সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরাম।

 

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০ টায় অনুষদ ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তারা।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম-এর বেশ কয়েকটি কন্ঠসদৃশ অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ক্যাম্পাসে একধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ‘শাপলা ফোরাম’ প্রচারিত অডিওগুলোর বিষয়বস্তু নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রসহ স্টেকহোল্ডারদের জন্য একই সঙ্গে বিব্রতকর এবং অপমানজনক।

 

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুসারী শিক্ষকমন্ডলী ‘বঙ্গবন্ধু বঙ্গবন্ধু’ জিকির করেন বলে তিনি মন্তব্য করেছেন, যা আদর্শিক জায়গা থেকে খুবই আপত্তিকর। এককথায় অডিওগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক প্রকার ইমেজ সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি সরকারের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলে আমরা মনে করি।

 

তিনি আরও বলেন, উপাচার্যের ‘কন্ঠসদৃশ’ অডিওগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রদের নিয়ে আপত্তিকর কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দোযখের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এমনকি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় তিনি প্রশ্নপত্র ফাঁস ও আর্থিক লেনদেন করেছেন মর্মে অনুমিত হয়। বিষয়গুলো ‘শাপলা ফোরাম’র নীতি-আদর্শের বিরোধী হওয়ায় আমরা অডিওগুলো পর্যালোচনা করে স্ক্রিপ্ট তৈরি করার জন্য একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়।

 

তিনি বলেন, সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক একপ্রস্থ চিঠি উপাচার্যের নিকট পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য মহোদয় সংশ্লিষ্ট অডিওসমূহের কথোপকথন তাঁর নিজস্ব মনে করলেও লিখিতভাবে তাঁর অবস্থান ব্যাখ্যা করতে সম্মত হননি। তারপরও ‘শাপলা ফোরাম’ সতর্ক পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রেখেছে। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে নিরবিচ্ছিন্ন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সরকার যখন সার্বক্ষণিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তখন উপাচার্যের কন্ঠসদৃশ এধরনের অপ্রাসঙ্গিক ব্যক্তিগত আলাপ জনসম্মুখে উঠে আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উপর্যুক্ত বিষয়ে অনতিবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান। এছাড়াও ফোরামের সদস্য অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, অধ্যাপক ড. মিয়া মো. রাসিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন, ড. হোসাইন মো. ফারুকী, ড. সাদেক আলী এবং ড. শাহেদ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


প্রসঙ্গত, ‘ফারাহ জেবিন’, ‘মিসেস সালাম’ ও ‘আল বিদা’ পৃথক তিনটি ফেসবুক আইডি থেকে ইবি উপাচার্যের একাধিক অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। অডিওতে চাকরির প্রশ্নের বিষয়ে কথোপকথন, চাকরির বিনিময়ে আর্থিক লেনদেনসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ বাণিজ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে ভিসিকে কথা বলতে শোনা যায়। তবে অডিওগুলোতে অপরপক্ষের কোনো কথা শোনা যায়নি।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

ক্যাম্পাস বিভাগের আরো খবর