সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পান চাষ করে স্বাবলম্বী বিরামপুরের চাষীরা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৬:০০ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

দেশের উত্তরের কৃষিনির্ভর দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার কৃষি অর্থনীতি দিনদিন চাঙ্গা হচ্ছে, কমলা, মাল্টা, টিউলিপের মতো বাণিজ্যিক ভাবে এখানে চাষ হচ্ছে অর্থকারী ফসল পান।

 

এখানকার উৎপাদিত পান সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। পান চাষ করে বদলে গেছে এখানকার দুই শতাধিক চাষির জীবন। সম্ভাবনাময় এই দীর্ঘমেয়াদী ফসলটি প্রায় তিন দশক ধরে চাষ হয়ে আসছে।

 

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, বিরামপুর উপজেলার মোট পান বরজের আবাদ রয়েছে প্রায় ২৫ হেক্টর। এসব পান আবাদ হয়  উপজেলার কাটলা ও মুকুন্দপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে এবং কিছু পৌরসভা মধ্যে।

 

শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা মেলে, পৌর শহরের ভবানীপুর মুন্সিপাড়া, মুকুন্দপুর, হাকিমপুর, নয়ানগর, বাসুপাড়া, চৌগরীয়া এলাকায় ছোট-বড় শত শত পানের বরজ রয়েছে। এসব পানের বরজের ভেতরে চোখ জুড়ানো সারি সারি পানের গাছ যেমন সৌন্দর্য বর্ধন করছে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবেও সমৃদ্ধি এনেছে চাষীদের।

 

চাষীরা জানান, এখানকার উৎপাদিত পানের কদর থাকায় বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এই পান কিনতে সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার বিরামপুর হাটে ও বাজারে ছুটে আসেন বিভিন্ন জেলার পানের পাইকাররা।

 

মুকুন্দপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের পান চাষী জামাল উদ্দিন বলেন, পানের বরজ দেড় বিঘা জমিতে লাগিয়েছি। ১৫ বছরের অনেক পুরোনো এই বরজই তাঁর পরিবারের আয়ের প্রধান উৎস। প্রতিবছর পানের বরজ পরিচর্যার সব খরচ বাদ দিয়েও আয় হতো এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা। তবে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় এখন কমে এসেছে লাভের পরিমাণ।

 

মুন্সিপাড়া গ্রামের পান চাষী আনিছুর রহমান বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে পান চাষ করছি। পান চাষ করতে গেলে পানের বিভিন্ন রোগ-বালাই দেখা দেয়। সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করতে না পারায় অনেক সময় কার্যকারী বালাইনাশক প্রয়োগ করতে পারি না। এজন্য আমাদের কৃষি বিভাগের পরামর্শ প্রয়োজন হয়।

 

পান চাষী আনিছুর রহমান আরো বলেন, আমাদের এখানে পান চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে পানের বরজ করার শুরুটা ব্যয়বহুল। ফলে অনেকের আগ্রহ থাকলেও পান চাষ করতে পারছেন না। যদি আগ্রহী চাষীরা সরকারি সহযোগিতা পায় তাহলে এখানে চাষের পরিমাণ অনেকটা বাড়বে এবং অর্থনৈতিকভাবেও সমৃদ্ধি আনবে। কৃষি বিভাগ থেকে ন্যায্যমূল্যে সার, কীটনাশক, খৈলসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রদান করলে কৃষক ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত হতো। এছাড়াও আমাদের কৃষকদের প্রয়াজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে পানচাষে লাভবান হবে।

 

বিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নিক্সন চন্দ্র পাল জানান, পানচাষীদের কোন উপকরণ সহায়তা কিংবা প্রশিক্ষণ দেওয়ার মত সুযোগ আমাদের এখানে নাই। তবে আমরা তাদের পরামর্শ প্রদান ও সহায়তা করে থাকি।

 

একুশে সংবাদ/ন.হা/এসএপি/

কৃষি বিভাগের আরো খবর