সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মাত্র ২০ দিনে ২৩ বছরের রেকর্ড ভাঙলো ডেঙ্গু

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১১:২০ এএম, ২১ নভেম্বর, ২০২২

রাজধানীসহ সারাদেশে অসময়ে ভয়াল আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। চলতি বছরের অক্টোবর ও নভেম্বরে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। অক্টোবরে ডেঙ্গুতে ৮৬ জনের মৃত্যু হয়, যা ২৩ বছরের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ। কিন্তু নভেম্বরের প্রথম ২০ দিনে ৮৯ জনের মৃত্যুতে সেই রেকর্ডও ভেঙে গেছে।

 

এরআগে ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ২৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুনের বেশি।

 

সাধারণত বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মূলত ডেঙ্গুর প্রভাব থাকে। গত কয়েক বছরের ডেঙ্গু আক্রান্তের হিসাব বলছে, বাংলাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কখনোই অক্টোবর কিংবা নভেম্বর মাসে চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকে না। গত বছরেও সর্বোচ্চ আক্রান্ত হয়েছিল আগস্ট মাসে। এরপর সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ আস্তে আস্তে কমে আসতে থাকে।

 

এ ছাড়া গত বছর ডেঙ্গুতে ২৮ হাজার ৪২৯ জন আক্রান্ত হলেও চলতি বছরের ২০ নভেম্বর পর্যন্ত তা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। অর্থাৎ চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ৫২ হাজার ৮০৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে।

 

২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন আক্রান্ত হয়েছিল। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

 

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চলতি বছর অক্টোবর মাসে ভারি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে গরমের প্রকোপ ছিল অনেক বেশি, যা ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বংশবিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। ফলে মশা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে।

 

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাসার বলেন, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুর যে ধরন, তা এবারের অক্টোবর-নভেম্বর মাসের ধরনের সঙ্গে মিলছে না। সাধারণত অক্টোবর মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে যায়, নভেম্বরে যা আরও কমে আসে। কিন্তু এবার আমরা নভেম্বরেও প্রচুর রোগী পাচ্ছি।

 

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এবার অক্টোবরে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হলো, তাতে অনেক বেশি এডিস মশার প্রজননস্থল তৈরি হয়েছে। এ কারণে এডিস মশার ঘনত্ব বাড়ার পাশাপাশি রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে।

 

ডেঙ্গুকে শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, ডেঙ্গু মশাবাহিত একটি রোগ। ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে হলে এডিস মশা নিধন করতে হবে। মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করতে হবে। এক্ষেত্রে অবহেলা করা হলে সামনে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের আরো খবর