সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বাঁশের তৈরি দাঁত মাজার ব্রাশ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন তরুণ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ১৪ মার্চ, ২০২৩

কলকাতার ছেলেটা কিছু একটা করতে চান। একটার পর একটা কিছু করে চলেছেন জীবনে দাঁড়াবেন বলে। সেই সঙ্গে অন্যকেও দাঁড় করানোর ব্রতও নিয়েছেন। সেই লড়াইয়ের কাহিনিও গল্পের মতো।

 

এটাই যে প্রথম তা নয়। তবে কলকাতার যুবক যা বানিয়েছেন, তাকে অনন্য বলতেই হবে। কারণ, অতীতে অনেক জায়গায় বাঁশের তৈরি পরিবেশবান্ধব দাঁত মাজার ব্রাশ তৈরি হলেও তাতে যে অংশ দাঁতে লাগে, মানে ব্রাশের দাঁড়া, সেগুলি বাঁশের ছিল না। কলকাতার শুভজিৎ সাহা যে ব্রাশ তৈরি করেছেন তাতে নাইলনের সামান্য ব্যবহার থাকলেও দাঁড়াগুলিও মূলত বাঁশের চোঁচ দিয়েই তৈরি।

 

এর আগে কাগজের কলম তৈরি করে তাক লাগিয়েছিলেন শুভজিৎ। তবে এখানেই থামতে চান না তিনি। বললেন, ‘‘আরও অনেক কিছু করার ইচ্ছা রয়েছে। করেও ফেলব। নিজের সঙ্গে আরও অনেককে নিয়ে চলতে চাই আমি। আসলে আমি চাই, যা যা বানাব সেগুলি তৈরি করবেন প্রতিবন্ধীরা, বিক্রিও করবেন মূলত তাঁরাই।’’

 

এই আবিষ্কারের পিছনে পরিবেশ ভাবনা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লড়াই। সেই সঙ্গে আরও একটা উদ্দেশ্য রয়েছে শুভজিতের। নোয়াপাড়ার যুবক নিজের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেকের ‘অচ্ছে দিন’ দেখতে চান। তাই ব্রাশের গল্প জানার আগে শুভজিতের সঙ্গে পরিচয় হওয়া দরকার।

 

বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তু পরিবারের শরিকি বাড়ি নোয়াপাড়ার বঙ্গলক্ষ্মী বাজার এলাকায়। বেসরকারি চাকরি করে বাবা ব্রজবল্লভ সাহা সংসার চালিয়ে নিচ্ছিলেন। তবে স্কুল জীবন থেকেই নিজের কিছু একটা করার ইচ্ছা ছিল শুভজিতের। ওঁকে আবার বেশি টানে ইলেকট্রনিক্সের জগৎ। মাঝে সেই ব্যবসাও করতে গিয়েছিলেন। আসলে তখন প্রয়োজনটা তৈরি করে দেয় করোনা। সেই সময়ে প্রথম তিন মাস বেতন পেলেও একটা সময় বাবার আয় বন্ধ হয়ে যায়। পরে চাকরি থাকলেও কমে যায় বেতন। কিছু একটা করার ইচ্ছাটা রাতারাতি শুভজিতের কাছে বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠে।

 

এই সময়েই স্যানিটাইজারের ব্যবসা করে সুরাহার চেষ্টা করেছেন শুভজিৎ। কিন্তু সবই তো সাময়িক। করোনা কমতে থাকায় স্যানিটাইজারের চাহিদা এবং বাজারও কমে যায়। কিন্তু স্থায়ী কিছু করার চিন্তাটা শুভজিতের মাথা থেকে যায় না। তখন প্রথম শুরু করেন কাগজের পেন তৈরি। এমন পেন বাজারে আগেই এসেছে। শুভজিত নতুন পরিকল্পনা করেন। কাগজের পেনের ভিতরে ঢুকিয়ে দেন ফুল, ফলের বীজ। ফোনের ইউএসপি তৈরি হয়ে যায়। শুভজিতের সংস্থা ‘রোহিত ইকো ফ্রেন্ডলি’-র কলমে প্রাণ রয়েছে বলে দাবি করা হয়। কালি শেষ হয়ে গেলে মাটিতে ফেললে সেখানে গাছ গজায়।

 

একুশে সংবাদ.কম/আ.ব.প্র/জাহাঙ্গীর

ওপার বাংলা বিভাগের আরো খবর