সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

যাদুরকলের পানিতে বিনা খরচে দেড় হাজার একর জমি চাষাবাদ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:১৮ পিএম, ২০ নভেম্বর, ২০২২

শেরপুরের সীমান্ত এলাকা জুড়ে উচুঁ উচুঁ পাহাড় হওয়ায় সুপেয় ও বিশুদ্ধ পানির সংকট লেগে থাকে প্রায় সারা বছর ধরে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারনে গভীর নলকুপ স্থাপন কিংবা কুয়া খনন করেও যেখানে পানি পাওয়া দূরহ ব্যাপার।

 

সেখানে শ্রীবরর্দী উপজেলার সীমান্তঘেষা কয়েকটি গ্রামের ভাগ্যবান কিছু মানুষ অল্প টাকা খরচ করে কোন প্রকার জ্বালানী ছাড়াই পাচ্ছেন সুপেয় পানি। নিত্যদিনের সাংসারিক কাজ এমনকি কৃষি কাজেও ব্যবহার করা হচ্ছে এই পানি। বিনা খরচে উত্তোলিত এই পানি সংরক্ষণ করে কৃষিকাজে ও ব্যবহার হচ্ছে।

 

প্রায় দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে দিনরাত অনবরত পড়ছে যাদুর কল বা অটোকলের পানি। শেরপুরের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী এই তিনটি উপজেলার প্রায় ২০ কি.মি সীমান্ত এলাকা জুড়ে সারা বছর পানি সংকট থাকলেও শ্রীবরদী উপজেলার রাঙ্গাজান, বালিঝুড়ি, খ্রিষ্টানপাড়া ও অফিসপাড়া এই চারটি গ্রামে পানির সংকট দূর করেছে এই অটোকল বা যাদুরকল। খাওয়ার পানি থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সকল কাজে এই পানি ব্যবহার করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুধু তাই নয়, অনবরত মাটির নিচ থেকে বের হওয়া এই পানি চাষাবাদের কাজেও লাগাচ্ছেন কৃষকরা।

 

কেবলমাত্র দুই ইঞ্চি পাইপ দিয়ে প্রায় পঞ্চাশ থেকে ষাট ফুট গর্ত করে ওই গর্তে পাঁচ থেকে ছয় ফুটের ছোট একটি পাইপ বসিয়ে দিলেই সেখান থেকে অনবরত বের হয় সুপেয় পানি। স্থানীয়রা এই প্রবাহমান স্রোতধারার নাম দিয়েছেন ‘অটোকল বা যাদুর কল’। তবে জায়গা ভেদে অটোকলগুলোর পানির চাপ কমবেশী হয়ে থাকে। এছাড়া অটোকলের পানি দিয়ে গৃহস্থালীর সব প্রয়োজন মিটিয়ে ওই পানি কৃষি কাজে ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা।

 

বিনা খরচায় অনবরত বের হওয়ার কারণে এই পানির ব্যাপক অপচয় হয়, তাই সরকারী ভাবে এই পানি বৃহৎ আকারে উত্তোলন এবং সংরক্ষণ করে সেই পানি সেচ বঞ্চিত জমিতে ব্যবহার করা হলে অনেক কৃষক লাভবান হবেন কৃষকরা এমন দাবী বিজ্ঞ মহলের।

 

রাণীশিমুল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সোহাগ জানান, এই সমস্ত পাহাড়ী এলাকায় দীর্ঘ দিন যাবৎ সুপেয় পানির সংকট লেগে আছে। তবে কয়েকটি গ্রামের প্রায় অর্ধশত বাড়ীতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা পানির স্রোতধারা থাকাতে এই গ্রামগুলোতে সুপেয় পানির অভাব কিছুটা লাঘব হয়েছে। তবে এই পানির আর্সেনিক পরীক্ষা এবং সরকারীভাবে বৃহৎ প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তোলন ও সংরক্ষণ করে কাজে লাগানো দাবী করেন এই চেয়ারম্যান।

 

এছাড়া সীমান্তের এই গ্রামগুলোতে প্রায় অর্ধশত অটোকল রয়েছে। যা দিয়ে কৃষকরা প্রায় দেড় হাজার একর জমিতে বিনা খরচে সেচ সুবিধা পাচ্ছেন। উল্লেখ্য সীমান্ত অঞ্চলে অনেক পরিবার আছে যাদের পক্ষে কূপ খনন ও আনুঙ্গিক খরচ করার মত অর্থনৈতিক সামর্থ নেই। তাদেরকে এই মহূর্তে আর্থিক সহায়তা দিলে তারাও এই নবকৌশলে পানি উত্তলন করে তাদের চাহিদা পূর্ণ করতে পাড়তো।

 

একুশে সংবাদ/রা.হা.প্রতি/পলাশ

ফিচার বিভাগের আরো খবর