সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

“বিশেষ শব্দের চয়ন ও নারী ধর্ষণ”- সামাজিক প্রভাব

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১২:৪০ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সাম্প্রতিক কালের দুটি ঘটনা বেশ আলোচিত। প্রথমটি বহুল আলোচিত-সমালোচিত নাটক  ব্যাচেলর পয়েন্ট এর একটি সংলাপে শব্দ চয়ন। অপরটি নোয়াখালীতে কিশোরী ধর্ষণ।

 

ব্যাচেলর পয়েন্ট বর্তমানে কিশোর-যুবক শ্রেনির মাঝে তুমিল জনপ্রিয় নাটক। এই নাটকের প্রতি পর্বের ভিউ লাখ লাখ। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা নাটকটির সংলাপ, অভিনয়, ক্যামেরার কারসাজি চোখ ধাঁধানো। নাটকের সংলাপ ভাইরাল হয়ে দর্শকের মুখে মুখে চলে আসে। একপক্ষ বরাবর দাবি করে এটি অপসংস্কৃতি। আবার আরেক পক্ষের দাবি এটি নিছক বিনোদন।

 

গত কিছুদিন আগে, ব্যাচেলর পয়েন্টের একটি পর্ব- এ সংলাপে একজন- অপরজনকে “বিশেষ শব্দে” সম্বোধন করে এবং বরাবরের মতই তা ট্রেন্ড এ চলে আসে এরপর শুরু হয় সমালোচনা-আলোচনা। বাংলা নাটকে অন-স্ক্রিন এরুপ শব্দের চয়ন কতটুকু প্রযোজ্য কিংবা ব্যবহারযোগ্য তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে আসে।

 

এবার দ্বিতীয় ঘটনায় আসি, নোয়াখালীতে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করে গৃহশিক্ষক আবদুর রহিম। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। ২০১২ সালে তার বাবা মারা গেছেন। দুই বোনের মধ্যে সে ছিল ছোট। বড় বোন শরীরিক প্রতিবন্ধী।

 

পুলিশ সুপার সুত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে  স্কুলছাত্রী রহিমের কাছে প্রাইভেট পড়া বন্ধ করে দিয়ে অন্য স্থানে প্রাইভেট পড়া শুরু করে। এতে রহিম ক্ষিপ্ত হয়। তবে স্কুলছাত্রীর বাসায় আসা-যাওয়া করতো। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে ওই ছাত্রীর বাসায় গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে গলা ও হাতের রগ কেটে ছাত্রীকে হত্যা করে।

 

বিশ্বায়নের ফলে ডিজিটাল যুগ হওয়ার কারণে আমাদের সংস্কৃতি, শিক্ষা-দীক্ষার স্রোত দ্রুত প্রবাহিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য কনটেন্ট প্রচারিত হচ্ছে। যার মান নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এসব কন্টেন নানাভাবে প্রবাহিত করছে সমাজের মানুষকে। যেসব কনটেন্ট প্রচারিত হচ্ছে তার দর্শক অধিকাংশ শিশু-কিশোর ও যুবক শ্রেণীর একাংশ। তারা যা দেখছে তাই বাস্তবে করার চেষ্টা করছে। যার ফলে সামাজিক নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে। ব্যাচেলর পয়েন্টের ক্ষেত্রে যে শব্দ চয়ন করা হয়েছে তা কিশোর-তরুন সমাজের মুখে চলে এসে এ শব্দ ব্যবহার শুরু হলে তা অবশ্যই সামাজিক অবক্ষয়ের দিকে নিয়ে যাবে।

 

এবার আসি নারী ধর্ষণ ও হত্যা ঘটনায়। এটি সামাজিক অবক্ষয় এর একটি জলন্ত উদাহরন। আমরা নানা উন্নয়নের কথা বললেও একটি জরুরি উন্নয়ন কথা ভুলে গিয়েছি কারন আমরা সেই উন্নয়ন নিয়ে কথা বলি নাহ। এটি হলো মনস্তাত্তিক উন্নয়ন। মনস্তাত্তিক উন্নয়ন ছাড়া এ ধরনের অপরাধ নির্মূল করা সম্ভব নাহ। একজন ব্যক্তি আবেগ, ঘৃণা, ক্রোধ, অহংকার, ভালোবাসা এসব বেড়ে উঠে।

 

এসব জৌবিক বস্তুর উন্নয়ন প্রয়োজন। প্রয়োজন নিয়ন্ত্রণ করা এবং সঠিক ব্যবহার। এসব উন্নয়ন করতে হবে পরিবার-সমাজ তথা রাষ্ট্র থেকে। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র এসব জৌবিক উন্নয়ন নিয়ে যতদিন পুরোপুরি কাজ করবে নাহ ততদিন এ সামাজিক অক্ষয় ও অপরাধ নির্মূল হবে নাহ।

 

একুশে সংবাদ/রে.হ.রি/এসএপি/

ফিচার বিভাগের আরো খবর