আহত যুবকের নাম হাবিব ফকির (৩২)। তিনি বর্তমানে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন।হাবিব ফকির সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামের গোলাপ ফকিরের ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যেমে এ তথ্য জানানো হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) শেখ মো. আব্দুল্লাহ বিন কালাম।
তিনি বলেন, গোপন খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দিনগত রাত ১২টার দিকে জেলার সালথা উপজেলার রসুলপুর এলাকার একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- জেলার সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরের মো: সোহেল ফকির (২৮), জেলা শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার শেখ খসরু (৩৬) ও মো. রিপন ওরফে লিমন (২৫) এবং জেলা শহরের গুহলক্ষীপুর এলাকার শাহিন মোল্লা (৩৭) ও মো. তুষার (৫৩)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে যে পিস্তল দিয়ে হাবিব ফকিরকে গুলি করা হয় সেই পিস্তল, একটি গুলি, তিনটি ধাঁরাল চাকু ও এক বোতল দেশীয় মদ জব্দ করা হয়।
হাবিব ফকিরকে গুলি করার ঘটনায় তার ভাই আক্কাস ফকির বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
অন্যদিকে, ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাববুবুর রহমান বাদী হয়ে সালথা থানায় ওই পাঁচ ব্যক্তিকে আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটিসহ আরও দুইটি মামলা দায়ের করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, সদরপুরের কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান ওরফে তিতাস ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন ফকিরের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জেরে দু’পক্ষের মধ্যে প্রতিনিয়ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত হাবিব ফকির কৃষ্ণপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল ফকিরের সমর্থক। একটি মামলায় হাজিরা দিতে তিনি মঙ্গলবার সকালে আদালতে এসেছিলেন। হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে একটি ইজিবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ইজিবাইকটি দুপুর ১টার দিকে ফরিদপুর সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সামনে পৌঁছালে কৃষ্ণপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান তিতাসের সমর্থক কয়েকজন অস্ত্রধারী ইজিবাইকের গতি রোধ করে হাবিবকে নামিয়ে সড়কের পাশের একটি মেহগনি বাগানে নিয়ে যায়। পরে সেখানে নিয়ে হাবিবের দুই পায়ে গুলি করে। এছাড়া ডান ও বাম পায়ে কুপিয়ে জখম করে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিটিয়ে আহত করে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল, ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুল গফফার, পরিদর্শক (অপরাধ) হাবিল হোসেন, পরিদর্শক (পুলিশ কন্ট্রোল) সেলিম রেজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
হাবিব ফকিরের ওপর হামলার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান বলেন, বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার হওয়া ওই পাঁচ ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেককে পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। আদালত রিমান্ডের শুনানির তারিখ পরে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
একুশে সংবাদ.কম/না.নি.প্র/জাহাঙ্গীর