সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কৃষক আব্দুল মতিনের ৩ জাতের তরমুজের বাম্পার ফলন

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:২১ পিএম, ৩১ জুলাই, ২০২১

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের পাত্রখোলায় কৃষক আব্দুল মতিন একই জমিতে ৩ জাতের তরমুজ চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছেন। তরমুজের জাত গুলো হলো ব্যাকবেরি, মুধমালা ও ল্যনফাই জাতের তরমুজ। এসব তরমুজ দেখতে প্রতিদিনই তার জমিতে দর্শনার্থীদের ভীড় লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া তরমুজের পাশাপাশি অন্য জমিতে শসা, টমেটো. বাঁধাকপি, ফুলকপি, মরিছ, করলা রোপন করেছেন। তার সাফল্যের সংবাদ এলাকার মৌসুমী ফসল চাষীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

জানাযায়, উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের নইনারপার গ্রামের মৃত মোজাহিদ মিয়ার ছেলে আব্দুল মতিন। কৃষি কাজই তার পেশা। বছরের প্রথম দিকে স্থাণীয় কয়েকজন ভূমি মালিকদের কাছ থেকে প্রায় ১লাখ ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে ৩০ কিয়ার জমি এক বছরের জন্য বন্ধক নেন। ৩০ কিয়ার জমির মধ্যে ২৮ কিয়ার জমিতে শসা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, মরিছ, করলা রোপন করেছেন গত মার্চ মাসে। 

আব্দুল মতিন আরো বলেন, তার স্মাট ফোনে ইউটিউবে নতুন জাতের তরমুজ চাষের প্রক্রিয়া দেখে তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। তখন তিনি মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করেন। মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যেগে ও লাল তীরের সার্বিক সহযোগিতায় বীজ সংগ্রহ করেন। বীজ পেয়ে তার ৩০ কিয়ার জমির মধ্যে ২ কিয়ার জমিতে গত জুন মাসে ব্ল্যাকবেরি, মুধমালা ও ল্যনফাই হলুদ জাতের তরমুজ রোপন করেন। 

প্রায় ২ মাস ৫ দিনে ফলন এসে বিক্রির উপযোগি হয়ে যায়। তার রোপিত জমিতে তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। আব্দুল মতিন বলেন, তার ৩০ কিয়ার জমিতে তরমুজ সহ অন্যান্য ফসল রোপন থেকে শুরু করে ফলন উৎপাদন উপযোগী করতে ইতিমধ্যে প্রায় ১১ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

কৃষক আব্দুল মতিনের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ২ কিয়ার জমিতে ব্যাকবেরি, মুধমালা ও হলুদ রংয়ের ল্যনফাই জাতের তরমুজ রোপন করেছেন। ৩ জাতের মধ্যে হলুদ রংয়ের ল্যনফাই জাতটির সর্বাধিক ফলন হয়েছে। ফলের ওজন ও আকার সবাইকে আকৃষ্ট করছে।

এক একটি তরমুজের ওজন ৩ থেকে ৪ কেজি হয়। শুধু আকার নয় এর অসাধারণ মিষ্টি সাধ ও রয়েছে। বাজারে এর দামও প্রথম দিকে কম হলেও বর্তমানে বেশ ভালো দাম পাচ্ছেন বলে জানান।

তিনি আরো বলেন , ২ কিয়ার জমিতে তরমুজ চাষে এখন পর্যন্ত তার ব্যয় হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। আর এখন পর্যন্ত উৎপাদিত তরমুজ বিক্রি করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার টাকার। ক্ষেতে যে পরিমাণ তরমুজ রয়েছে তাতে আরও দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।

এছাড়া শষা, টমেটো, করলা, মরিছ বিক্রি করেছেন প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। এখনও জমিতে ফসল রয়েছে। আগামীতে তিনি ব্যাপকহারে এই জাতের তরমুজ চাষ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তার ক্ষেতের তরমুজ ফল দেখতে প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন ও কৃষকরা আসেন।

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুর বারী বলেন, প্রদর্শনীতে ৩ জাতের বীজ লাগানো হয়েছে। এর মাঝে অধিক ফলন ও ফলের সাধের পরিমাণে সব দিক থেকে ল্যনফাই হলুদ জাতের তরমুজ সবার নজর কেড়েছে। তিনি আরও বলেন, জেলার অন্যান্য উপজেলাতেও কৃষকদের মাঝে এই জাত গুলোর চাষ ছড়িয়ে দিতে হবে।

 


একুশে সংবাদ/পারভেজ/

কৃষি বিভাগের আরো খবর