সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতা শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:৩৬ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

প্রথম হাঁটতে শিখেছেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আঙ্গুল ধরে। প্রথমে সেই বাড়িয়ে দেয়া হাত ধরে, পরে জাতির জনকের দেখিয়ে দেয়া পথ ধরে তিনি হাঁটছেন। আজও হাঁটছেন। হাঁটতে হাঁটতে পার করে দিয়েছেন ৭৬ বছর। ছিয়াত্তর বছরের সবটুকু ন্যস্ত করেছেন দেশ মাতৃকার জন্য।

 

তিনি আর কেউ নন, তিনি হচ্ছেন দেশের দূরদর্শী, বলিষ্ঠ নেতা, মানুষের আশা-আকাঙ্খার বাতিঘর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) উন্নয়নের কান্ডারি, দেশের দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন।

 

তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের মধুমতী নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি।

 

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত ২৪ সেপ্টেম্বর অন্যান্য বিশ্বনেতাদের অংশগ্রহনে ইউএনজিএ’র সাধারণ আলোচনায় অন্যান্য বছরের মতো বাংলায় ভাষণ দেন। তার অনুপস্থিতিতেই দিনটি উৎসবমুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপন করবে তার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগসহ নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন।

 

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ বুধবার বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

 

এছাড়াও আজ ২৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল।

 

একই সাথে সকাল ১০টায় ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে (বাসাবো, সবুজবাগ) বৌদ্ধ সম্প্রদায়, সকাল ৯টায় খ্রিস্টান এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে (৩/৭/এ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০) এবং সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করেছে। এসব কর্মসূচিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

 

একই দিনে ঢাকাসহ সারাদেশে সকল সহযোগী সংগঠন আলোচনা সভা, আনন্দ র‌্যালি, শোভাযাত্রা, দোয়া মাহফিল, বিশেষ প্রার্থনা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ দিবসটির তাৎপর্য অনুযায়ী যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি উদযাপন করবে।

 

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনেও তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে হয়েছেন প্রশংসিত। বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

 

রাজনৈতিক বিশ্লেকদের মতে, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণেই করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল থাকায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এশিয়ার প্রায় সব দেশের ওপরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব, সময়োচিত পদক্ষেপ, মানুষের জন্য আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা, অর্থনীতিকে বাঁচাতে প্রণোদনা ঘোষণা এবং বাস্তবায়নের কারণে দেশে অনাহারে একজন মানুষেরও মৃত্যু হয়নি, খাদ্যের জন্য কখনো কোথাও হাহাকার হয়নি।

 

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি, একাত্তরের ঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পন্ন করা, সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি এবং সমুদ্রে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ব্লু ইকোনমির নতুন দিগন্ত উন্মোচন, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন ও ছিটমহল বিনিময়, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে মহাকাশ জয়, সাবমেরিন যুগে বাংলাদেশের প্রবেশ, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, কর্ণফুলী টানেল।


এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন উড়াল সেতু, মহাসড়কগুলো ফোর লেনে উন্নীত করা, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, মানুষের গড় আয়ু প্রায় ৭৪ বছর ৪ মাসে উন্নীত,  যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন, সাক্ষরতার হার ৭৫.৬০ শতাংশে উন্নীত করা, বছরের প্রথম দিনে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই পৌঁছে দেওয়া, মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা ও স্বীকৃতি দান, মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন, প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে সরকারি/বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ, নারী নীতি প্রণয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, ফাইভ-জি মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার চালুসহ অসংখ্য ক্ষেত্রে কালোত্তীর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে বাংলাদেশ।

 

সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সামনে দুর্যোগের সঙ্কটপূর্ণ সময়ে সমাধানের সূত্র তুলে ধরেছেন। যুদ্ধ, অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, ক্ষমতার প্রভাব এবং স্বার্থগত সংঘাতকে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবমুক্তির প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি জবরদস্তিমূলক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরীপন্থা পরিহার করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সঙ্কট ও বিরোধ নিষ্পত্তির মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা, খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের আহ্বান জানিয়েছেন। শুধু বর্তমান সঙ্কট সমাধানের বার্তাই নয়  বরং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবী প্রতিষ্ঠার দিক-নির্দেশনা থাকায় বঙ্গবন্ধুকন্যার এই ভাষণে বিশ্বসভায় বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে বিশাল বিজয় অর্জন করে। এই বিজয়ের মধ্যদিয়ে শেখ হাসিনা দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

 

পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তৃতীয়বার এবং ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চতুর্থবারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। শিল্প সংস্কৃতি ও সাহিত্যঅন্তপ্রাণ শেখ হাসিনা লেখালেখিও করেন। তাঁর লেখা এবং সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩০টিরও বেশি।

 

প্রকাশিত অন্যতম বইগুলো হচ্ছে- শেখ মুজিব আমার পিতা, সাদা কালো, ওরা টোকাই কেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, দারিদ্র্য দূরীকরণ, আমাদের ছোট রাসেল সোনা, আমার স্বপ্ন আমার সংগ্রাম, সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, আর্ন্তজাতিক সর্ম্পক উন্নয়ন, বিপন্ন গণতন্ত্র, সহেনা মানবতার অবমাননা, আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি, সবুজ মাঠ পেরিয়ে ইত্যাদি।

 

একুশে সংবাদ/শফি.ই/এসএপি

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের আরো খবর