সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঈদে বাংলাবাজার ঘাটে শিশু কুলিদের জীবন-জীবিকা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১০:০১ এএম, ১৬ জুলাই, ২০২১

ঈদ মানেই বাড়ি ফেরার আনন্দ। আর তাই ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাজধানী থেকে বাড়ী ফিরছে দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রীদের চাপ ততই বাড়ছে। আর এ সুযোগেই মালামাল বহন করে বাড়তি আয় করছে বিভিন্ন বয়সের শিশুকুলিরা। ঘাটে লঞ্চ ভিড়তেই ৫-৭ জন ‍কুলি গিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে লাগেজ, মালামাল নেয়ার জন্য অনুরোধ করে। কখনো দরকষাকষি আবার কখনো যাত্রী খুশি হয়ে যা দিবে তা নেয়ার শর্তে মালামাল বহন করে এসব কুলিরা।

দারিদ্র্যের কষাঘাতে যখন দু’বেলা দু’মুঠো খাবার মেলে না, তখন শিশুকুলিদের শ্রম না দিয়ে উপায় কি । তাছাড়া ঈদে মা, বোন ও নিজের জন্য নতুন জামা-কাপড় কেনার আশায় সারাদিন শ্রম দিচ্ছে এসব শিশুরা। কখনো নিজের থেকে বড় সাইজের ব্যাগ, কখনো মাত্রাতিরিক্ত ওজনের যাত্রীদের মালামাল মাথায় বহন করে লঞ্চ থেকে বাসে তুলে দিচ্ছে। এর বিনিময়ে পাচ্ছে ২০-৫০ টাকা । কখনো অনুরোধ করে আর কয়েকটা টাকা বেশি নেয়ার চেষ্টা করে এসব শিশুকুলিরা। কিছু শিশু সারাবছর এখানে কুলির কাজ করে, আবার কিছু শিশু ঈদে নতুন জামা-কাপড় এবং খাবার কেনার জন্য ঈদ মৌসুমে এ ঘাটে কুলির কাজ করছে । একজন শিশুকুলি  দিনে  ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করে থাকে । তবে এখানে বিভিন্ন বয়সের কুলিরা সারাবছরই শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে, যাদের আয় মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা।
মারজান হোসেন নামে ১২ বছরের এক শিশুকুলি জানায়, বাবা অনেক আগে আমাকে আর মাকে রেখে চলে গেছে। নিজেদের মুখের খাবার জোগাতে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে কুলির কাজ করছি। ঈদে বাড়তি আয়ের জন্য আগের থেকে একটু বেশি পরিশ্রম করতে হচ্ছে ।
ইয়াসিন নামে আরেক শিশুকুলি জানায়, ঈদে ভাল জামা-কাপড় কিনতে পারিনা। তাই এখানে এসে কুলির কাজ করছি। এ আয় দিয়ে মা, বোন ও নিজের জন্য নতুন জামা-কাপড় কিনবো। ঈদের সময় একটু বেশি টাকা চাইতেই পারি। টাকা বেশি চাও্য়ায় অনেক সময় একশ্রেণির মানুষের হাতে  চর-থাপ্পরও খেতে হয়।
শাহিন মাতুব্বর নামে এক যাত্রী জানান, আমি মালামাল নিয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি যাচ্ছি। ঘাটে লঞ্চ ভিরতেই কুলিরা এসে হাজির, যাদের কয়েকজনই শিশু। তবে তাদের অনুরোধে মালামাল বহনের সুযোগ না দিয়েও পারছিনা। মাল বাসে পৌছে দিলে আমি খুশি হয়ে কুলিকে ৫০ টাকা দিয়েছি।
কুলিদের দলনেতা বাবুল শিকদার জানান, এখানে বিভিন্ন বয়সের কুলি শ্রম দিয়ে আয় করে থাকে। কিছু কুলি সারাবছর শ্রম দেয়, কিছু সপ্তাহে একবার আবার কিছু ঈদ মৌসুমে এসে সারাদিন শ্রম দিয়ে আয় করে থাকে। মাঝে মাঝে বাহির থেকে লোকজন এসে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে। তাই শ্রমিক কার্ড পেলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হত।


একুশে সংবাদ /এসএম

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের আরো খবর