সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

যাত্রী কল্যাণ সমিতির আশঙ্কা এবার সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি 

যাত্রী হয়রানি, ভাড়ানৈরাজ্য বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি 

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:৩৮ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০২২
ছবি: একুশে সংবাদ

ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়তি চাপের কারণে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি বলে আশঙ্কা করছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, যাত্রী হয়রানি, ভাড়ানৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন হর রুমে রোববার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টায়  বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের এসব কথা জানানো হয়।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, করোনামুক্তির কারণে এবারের ঈদে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ মনে করে, এবারের ঈদে ঢাকা থেকে এক কোটির বেশি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এছাড়াও এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আরও প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে। এতে আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ফ্লিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সকল পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা। কিন্তু যানজট ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে গণপরিবহনে সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি হতে পারে।

অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ ও পরিবহন সংকট, করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চালাতে কিছু পরিবহন মালিক-চালক মরিয়া হয়ে উঠেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভাড়ানৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কাগুজে বাঘের মতো হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেও দৃষ্টান্তমূলক কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার কারণে এবার সব পথে দ্বিগুণ-তিনগুণ অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হবে। তাই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

ড. হাদিউজ্জামান বলেন, বর্তমানে দেশে বাসে আট লাখ, ট্রেনে এক লাখ, লঞ্চে দেড় লাখ ও মোটরযানে চার লাখ মানুষের যাতায়াতের সুযোগ রয়েছে। বাকি মানুষ ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্রেন, লঞ্চের ছাদে করে যাবে। সক্ষমতার বাইরে যখন চাহিদা চলে যাবে সড়ক ব্যবস্থাপনা কোমায় চলে যাবে, ধ্বংস হয়ে যাবে।

লিখিত বক্তব্যে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এই মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সকল পথের ফুটপাত, রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিং মুক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানাই।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী কিছু অসাধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয় বলে দাবি করে ঈদযাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি ও যানজটমুক্ত করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী ও বেশি ভাড়া আদায়ের লোভে প্রতিবছর সড়ক ও নৌপথে ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রীবহন, নৌপথে পর্যাপ্ত বয়া-বাতি ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম না থাকা, একজন চালককে বিশ্রামহীনভাবে ১০ থেকে ১৫ ঘণ্টা যানবাহন চালাতে বাধ্য করা এবং অদক্ষচালক দিয়ে আনফিট যানবাহন চালানোর কারণে সড়ক ও নৌদুর্ঘটনায় প্রতিবছর ঈদে কয়েকশ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে ২০২১ সালে ঈদুল ফিতরে ৩১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত ৬২২ জন আহত হয়েছে। এবারও অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ দ্বিগুণ থাকায় সড়ক ও নৌদুর্ঘটনার সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


মহাসচিব  আরো বলেন, করোনা সংকটসহ নানা কারণে এবারের ঈদযাত্রায় যাত্রী সাধারণ ব্যাপকভাবে অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি, টানাপার্টিসহ টার্মিনালে নানা প্রতারকচক্রের খপ্পরে পরে সর্বস্ব খুয়ে ঈদ আনন্দ মাটি হতে পারে। তাই প্রতিটি বাস, লঞ্চ ও রেলস্টেশনে সিভিল পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়াও মহাসড়কে ডাকাতি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।

একুশে সংবাদ/জা/এইচ আই

জাতীয় বিভাগের আরো খবর