সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রাজধানীতে ঢিলেঢালা লকডাউন, বেড়েছে যান চলাচল

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০২:১৬ পিএম, ২৬ জুলাই, ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত কঠোর লকডাউনের আজ চতুর্থ দিন। এসময় সব  ধরনের  গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও অবাধে চলছে রিকশা ও প্রাইভেট কার। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে চেকপোস্টগুলোতে  আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল থাকলেও গত তিনদিনের তুলনায় যেমন বেড়েছে মানুষের চলাচল, তেমনই বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। এদিকে চেকপোস্টে যানবাহন থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করায় কোথাও কোথাও সৃষ্টি হচ্ছে হালকা যানজটও।

এদিকে, রাজধানীর অনেক বেসরকারি অফিস খোলা থাকায় বাধ্য হয়ে তারা বের হয়েছেন কর্মীরা। রিকশা, ভ্যান কিংবা ব্যক্তিগত প্রাইভেট গাড়িতে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন তারা। অনেকে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে ভোগান্তি নিয়ে যাচ্ছেন কর্মস্থলে।

সোমবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, শাহবাগ, বাংলামোটর, পান্থপথ, কাওরান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ, গুলশান, বাড্ডা, কুড়িল বিশ্বরোড, মতিঝিল, গুলিস্তান এলাকা ঘুরে দেখে গেছে, প্রায় সবগুলো সড়কেই আগের তিনদিনের তুলনায় ব্যক্তিগত যানবাহন, রিকশা ও মানুষের চলাচল বেড়েছে কয়েকগুণ। চেকপোস্টগুলোতে প্রথম তিনদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে তৎপরতা ছিল সেটা আজ তেমন দেখা যায়নি। বেশিরভাগ গাড়ি তল্লাশি না করে চেকপোস্ট থেকে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।

পুলিশের তল্লাশি চৌকির পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের সড়কে টহল দিতে দেখা যায়। কিছু কিছু চেকপোস্টে অপ্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বের হয়েছেন তাদের অনেককেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। গাড়ির নামে মামলা হয়েছে, গুনতে হয়েছে জরিমানা।

কারওয়ান বাজারে রিকশাচালক আক্তার হোসেন বলেন, ‘অন্যদিনের তুলনায় এখন লোকজন একটু বেশি বাইরে চলাচল করতে শুরু করেছেন। তবে এখনো অনেকেই জরুরি দরকার ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না।’

কারওয়ান বাজারের একাধিক দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতেই আসছেন ক্রেতারা। অন্যদিনের চেয়ে একটু একটু করে ক্রেতা সমাগম বাড়ছে।’

সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমণ্ডি, জিগাতলা, রাসেল স্কয়ার এলাকা ঘুরে তল্লাশি চৌকিগুলোতে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। গত তিনদিনের তুলনায় এসব তল্লাশি চৌকিতে গাড়ির জটলা বেশি ছিল। ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার পাশাপাশি মোটরসাইকেলের সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এসবের বেশিরভাগই ছিল বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কর্মীদের।

গত তিনদিনের তুলনায় রিকশাভাড়া কিছুটা কমলেও এখনো অন্তত দিগুণ ভাড়া হাঁকছেন চালকরা। 

এদিকে, বেশকিছু আবাসিক এলাকা ও অলিগলি ঘুরে দেখা যায়, মাস্ক ব্যবহার না করেই অপ্রয়োজনে অধিকাংশ মানুষ চলাফেরা করছেন। এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা চোখে পরেনি। এসব এলাকার অলিগলিতে প্রায় প্রতিটি চায়ের দোকানই খোলা রাখা হয়েছে।

রাজধানীর প্রায় সব এলাকাতেই বিধিনিষেধ মানতে এমন অনীহা দেখা যায়। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে জনসমাগম। আর সন্ধ্যা থেকে পাড়া মহল্লায় দূরত্ব না মেনে চলে অপ্রয়োজনে ঘোরাফেরা।

এদিকে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিতে তৃতীয়দিনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে বের হয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) হাতে গ্রেফতার হন ৫৮৭ জন। ২৩৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয় এক লাখ ৯৫০ টাকা। এ ছাড়া ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক ৫২১টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলায় জরিমানা করা হয় ১২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। তিনদিনে রাজধানীতে মোট গ্রেফতার হলেন ১ হাজার ৩৭৩ জন।

আর কঠোর বিধিনিষেধ নিশ্চিতে তৃতীয়দিনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় সারাদেশে ১৮৯ জনকে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করে র‌্যাব। সারাদেশে ২৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এই জরিমানা করেন।

উল্লেখ্য,  করোনা সংক্রমন নিয়নন্ত্রনে না আসায় ঈদের পর গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত পুনরায় ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।

একুশে সংবাদ/জা/তাশা

জাতীয় বিভাগের আরো খবর