সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

চ্যাটজিপিটি যেভাবে মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১০:২২ পিএম, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

পৃথিবী যত আধুনিক হচ্ছে, মানুষ তত প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়ত এই খাতের উন্নতি ঘটছে। ধারাবাহিকভাবে হচ্ছে বৈপ্লবিক সব আবিষ্কার। যার সম্ভবত সর্বশেষ সংযোজন চ্যাটজিপিটি। এখন যা ‘টক অব দ্য টেক’। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বিশ্লেষণধর্মী এক প্রতিবেদনে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

 

চ্যাটজিপিটি কী?

চ্যাটজিপিটি হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত কন্টেট ক্রিয়েটর। যার পুরো নাম- ‍‍`জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফরমার‍‍`। ২০২২ সালের নভেম্বরে বিশ্বের প্রথম সারির অন্যতম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা ল্যাবরেটরি ওপেন এআই এই চ্যাটবট বাজারে আনে।

 

চ্যাটবট কী?

চ্যাটবট হলো এক ধরনের সফটওয়্যার, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে গঠিত হয়। এটি একটি বড় ভাষা মডেল। নানা ধরনের তথ্য দিয়ে একে প্রশিক্ষিত করা হয়। একটি ডিভাইসের মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মানুষের মতো করে তা যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। মুহূর্তেই ম্যাসেজের রিপ্লাই দিতে পারে। অর্থাৎ কেউ কোনো প্রশ্ন করলেই তা নিয়ে আদ্যোপান্ত জবাব দিতে পারে সেটি।

 

সাড়া কেমন?

গত ৩০ নভেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে উন্মুক্ত হয় চ্যাটজিপিটির ব্যবহার। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই তা ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। এরই মধ্যে এই চ্যাটবুটে ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক মিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। ওপেন এআই ‘র সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিই্ও) স্যাম অল্টম্যান জানিয়েছেন, মাত্র ৫ দিনে এই চ্যাটবট প্লাটফর্মে নিবন্ধন করেছেন ১০ লাখ ব্যবহারকারী।

 

মালিকানা কার হাতে?

ওপেন এআই হলো সান ফ্রান্সিস্কোভিত্তিক একটি গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান। ২০১৫ সালে সিলিকন ভ্যালির বিনিয়োগকারী স্যাম অল্টম্যান এবং ধনকুবের ইলন মাস্ক এটি প্রতিষ্ঠা করেন। শুরুতে তা ছিল অলাভজনক সংস্থা।

 

প্রথম দিকে এই দুজনের ও অন্যদের বিনিয়োগে চলতো ওপেন এআই। ২০১৮ সালে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ থেকে বিদায় নেন ইলন মাস্ক। পরে বাইরের অর্থ নিতে ২০১৯ সালে মুনাফার দিকে ঝুঁকে সেটি। তবে শোনা যায়, এখনও এতে শেয়ার আছে টেসলার প্রতিষ্ঠাতার।

 

কীভাবে কাজ করে চ্যাটজিপিটি?

একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান থাকলে একজন মানুষ তা নিয়ে লিখতে পারেন। ওই সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং আলোচনা চালিয়ে নিতে পারেন তিনি। এই দুই কাজই করতে সক্ষম চ্যাটজিপিটি। অধিকন্তু মানুষের চেয়েও এগিয়ে এটি। কারণ, এই চ্যাটবট যেকোনো বিষয় নিয়ে লিখতে, প্রত্যুত্তর দিতে, কথোপকথন চালাতে, জটিল বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দিতে, বোধগম্য ভাষান্তর করতে পারে।  যেকোনো ভুল ধরিয়ে দিতে, এমনকি মনের মতো না হলে তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে এটি।

 

বর্তমানে গুগলে মোটামুটি যেকোনো বিষয়ে সমাধান পাওয়া যায়। বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত এই সার্চ ইঞ্জিনের চেয়েও এগিয়ে চ্যাটজিপিটি। এককথায়, জীবনধারণের সব বিষয়ে টেক্সট লিখতে পারবে এটি।

 

কোন কাজে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করা যাবে?

বিশ্বের বাস্তবভিত্তিক যেকোনো খাতে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করা যাবে। ডিজিটাল মার্কেটিং, অনলাইন কন্টেন্ট ক্রিয়েশন, গ্রাহক পরিষেবার প্রশ্নের উত্তর দেয়া, এমনকি কোড ডিবাগ করতে এটি সহায়তা করবে। হারিয়ে যাওয়া যেকোনো বিষয় খুঁজে নিতে তা সাহায্য করবে। এতে একটি কাজে মানুষের দরকার কম হবে।

 

এটি কী সমস্যাযুক্ত?

বিশ্বের অন্যান্য আবিষ্কারের মতো চ্যাটজিপিটিরও কিছু সমস্যা আছে। মূলত ভালো বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দেয় এটি। ভুল বা অযৌক্তিক ইস্যুতে সেভাবে উত্তর পাওয়া যায় না। এই সমস্যা সমাধান করা কঠিন বলে মনে করে ওপেনএআই। জাতি, লিঙ্গ ও সংস্কৃতির মতো সামাজিক বিষয়গুলো নিয়ে পক্ষপাতমূলক জবাব দিতে পারে এটি। অধিকন্তু এই প্রযুক্তির ব্যবহারে বেকারত্বের সংখ্যা বাড়তে পারে।

 

একুশে সংবাদ.কম/স.ব.প্র/জাহাঙ্গীর

তথ্য-প্রযুক্তি বিভাগের আরো খবর