সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

বন্যা ও পরবর্তী সতর্ক থাকবেন যেভাবে 

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:৫৬ পিএম, ১৯ জুন, ২০২২

 

ঘন বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আবারও বন্যার কবলে পড়েছেন সিলেটেরবাসি। বন্যার পানিতে নগরের প্রায় ৫০টি এলাকার বাসা-বাড়ি ও সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতেও এতো মানুষের ঠাঁই হচ্ছে না।

বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে রেললাইনও। এমনকি বেশ কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ আছে। অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন সিলেটবাসী। এদিকে সেনাবাহিনী বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে বন্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে। এছাড়া কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতিও অবনতি হতে পারে।

বন্যা পরিস্থিতি সবার জন্যই ভীতিকর হলেও এ সময় সবার শান্ত থেকে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বন্যা থেকে নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচাতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এ সময় বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। 

জেনে নিন করণীয়-
-বন্যার পানি বাড়তেই কোথায় আশ্রয় নেবেন সে বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন। পরিবারের সবার মতামত নিন। প্রয়োজনে বাড়ি ছেড়ে নিজ এলাকার বাইরে আত্মীয় বা বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিন। যেখানেই থাকুন না কেন নিশ্চিত করুন পরিবারের সবাই একসঙ্গে আছেন।

-স্থানীয় জরুরী ব্যবস্থাপনা অফিস, পরিকল্পনা ও জোনিং বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। এই সমন্বয়কদের মনোনীত আশ্রয়কেন্দ্র থাকবে, যেমন- স্কুল বা স্টেডিয়াম। সেসব স্থানে আশ্রয় নিতে পারেন।

-সময় থাকলে বাড়ির প্রধান পাওয়ার সুইচের ইউটিলিটিগুলো বন্ধ করে দিন। কারণ বৈদুতিক সংযোগ পানির সংস্পর্শে আসলেই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

-বন্যার পানি বাড়তে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব ঘরে থাকা মূল্যবান জিনিসগুলো নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিন। আপনার গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো প্লাস্টিকের ফোল্ডারে রাখার চেষ্টা করুন।

-আপনার কাছে সময় থাকলে, একটি সারভাইভাল কিট প্যাক করুন। সেখানে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য পর্যাপ্ত খাবার ও পানি নিন। প্রত্যেকের জন্য একটি করে পোশাক, প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন। পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্ম নিবন্ধন, ব্যাংকের কাগজপত্র, নগদ অর্থ জলরোধী পাত্রে সংরক্ষণ করুন।
-জরুরি তথ্যের জন্য রেডিও, স্থানীয় পরিবর্তনকারী সিস্টেম বা সরকারী নির্দেশাবলী শুনুন।

-বন্যার পানিতে হাঁটবেন না, সাঁতার কাটবেন না বা গাড়ি চালাবেন না। কারণ ৬ ইঞ্চি পানির স্তরেও আপনি নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারেন।
-আপনি যদি গাড়িতে থাকেন ও চারপাশে পানি উঠতে থাকে, তাহলে দ্রুত গাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় চলে যান।
-ভেজা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে দূরে থাকুন, এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে!

-কোনো ব্রিজে আশ্রয় নেওয়া উচিত নয়। কারণ দ্রুত প্রবাহিত পানি সেতুর উপর দিয়েও প্রবাহিত হতে পারে। তার চেয়ে উঁচু জমিতে আশ্রয় নিন।
-কোনো বিল্ডিংয়ে আটকা পড়লে ও পানি বাড়তে থাকলে ভুলেও লাফ দেবেন না। তার চেয়ে বরং বিল্ডিংয়ের ছাদে অবস্থান করুন।

-চলন্ত পানিতে নামার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আপনি ভেসে যেতে পারেন। আর যদি পানিতে পড়েও যান তাহলে স্রোতের উল্টোদিকে মাথা রেখে সাঁতার কাটুন।

বন্যার পরে করণীয়
-কর্তৃপক্ষের কথা শুনুন, তারা অনুমতি দিলেই বা নিরাপদ বলার পরেই বাড়ি ফিরতে হবে।
-বাড়িতে ঢোকার আগে দেখে নিন কোনো কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে কি না।
-বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র পরিদর্শন করার আগে পাওয়ার চালু করবেন না।
-সাপ ও বিভিন্ন প্রাণী আপনার বাড়িতে থাকতে পারে, তাই সতর্ক থাকুন। সম্ভব হলে গ্লাভস ও বুট পরুন।
-বন্যা-দূষিত প্রতিটি ঘর পরিষ্কার, জীবাণুমুক্ত ও শুকিয়ে নিন।
-আপনার যদি কোনো বীমা থাকে তাহলে নিশ্চিত করুন যে বীমা দাবির নথি হিসেবে ছবি বা ভিডিও আছে কি না।

একুশে সংবাদ/জ/রখ

পরিবেশ বিভাগের আরো খবর