সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

‘জ্বীনের বাদশা’ সেজে প্রতারণায় অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:২৪ পিএম, ৪ আগস্ট, ২০২১

জ্বীনের বাদশা পরিচয় দানকারী মোঃ আল আমিন বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মসহ কেবল নেটওয়ার্ক এর লোকাল চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা, দাম্পত্য কলহ দূর করা, বিবাহের বাধাঁ দূর করা, অবাধ্যকে বাধ্য করা, চাকুরিতে প্রমোশন, কম দামে স্বর্ণ ক্রয় সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞাপন প্রদান করতো। 

সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন মানুষ যোগাযোগ করলে মেয়ের কন্ঠ সেজে কথা বলে নিরীহ সরলমনা মানুষকে ফাঁদে ফেলে এবং পরবর্তীতে তাদের কথা অনুযায়ী কাজ না করলে প্রিয়জনের ক্ষতির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ করতো। জ্বীনের বাদশা সেজে এই প্রতারক চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন যাবৎ সক্রিয় ছিল।

বিষয়টি সিআইডির দৃষ্টিগোচর হলে, বিশেষ পুলিশ সুপার, জনাব মুক্তা ধর এর দিক নির্দেশনায় উক্ত প্রতারক চক্রের মূল উৎপাটনের লক্ষে সম্ভাব্য সকল তথ্য সংগ্রহ করে দেশব্যাপী অভিযান পরিচালনা করা হয়। সিআইডি একটি চৌকস দল ভোলা জেলায় অভিযান পরিচালনা করে চক্রের মূল হোতা মোঃ আল আমিনকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। 

আলামিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী এই কাজে লিপ্ত তার অপর দুই সহযোগী সম্পর্কে জানা যায়। এরই ধারাবাহিকতায় দ্রততম সময়ের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে সিআইডির এলআইসি’র একটি চৌকস দল আজ ভোর রাতে ডেমরা এলাকা হতে মোঃ রাসেল ও মোঃ সোহাগকে আটক করে। বিশ্লেষণ পূর্বক দেখা যায় যে, উক্ত আসামীদের বিরূদ্ধে একাধিক মামলা আছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতারণা করার বিষয়টি স্বীকার করে। তারা বিভিন্ন সময়ে একাধিক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে গত ৬ মাসে আনুমানিক ৬০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

আজ বেলা ১২ টায় সিআইডি সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্ত ধর জানান, এই চক্রটি প্রায় ২ বছর ধরে এমন প্রতারণামূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। গ্রেফতারকৃত রাসেল ও সোহাগের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে ২ টি প্রতারণার মামলা রয়েছে। এর আগে চট্টগ্রামে এক প্রবাসীর স্ত্রীর কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যে ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্রটি। 

বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্ত ধর জানায়, প্রবাসীর স্ত্রী জয়যাত্রা টেলিভিশনে এমন একটি বিজ্ঞাপন দেখে যে কোন সমস্যা সমাধানে জ্বীনের মাধ্যমে গ্যারান্টি সহকারে কাজ করে । স্কীনের দেয়া নাম্বারে ফোন দিয়ে তাদের ফাঁদে আটকে যায়। প্রতারকারা এই প্রবাসীর স্ত্রীকে বলে যে, আপনার বাড়ির নীচে আড়াই কেজি স্বর্ণ আছে। এই স্বর্ন একটি অর্জগ সাপ পাহারা দিচ্ছে।  

আপনাকে এই স্বর্ণ পেতে হলে ৬০ মন গরুর দুধ, বিদেশি আতর লাগবে। এমন লোভ দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ধাপে ধাপে ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে আরো টাকা দাবি করে, ইতিমধ্যে সে নিঃশ্ব হয়ে বুঝতে পারে যে প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। 

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানায়, মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে কন্ঠ পরিবর্তন করে কখনো নারীর কন্ঠে আবার কখনো বৃদ্ধ বা শিশুর কন্ঠে কথা বলে তাদের টার্গেট করা মানুষের সাথে প্রতারণা করতো।

তাদের গ্রেফতারের সময় পাসপোর্ট,  চেক বই, মোবাইল ফোন ও নগত ৩১ ০০০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 


একুশে সংবাদ/বেলাল/প

অপরাধ বিভাগের আরো খবর