সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কামারখন্দে দুই বিদ্যালয়ের মাঝখানে ব্যস্ত সড়ক, ঝুঁকিতে কোমলমতি শিশুরা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:১১ পিএম, ২৮ মার্চ, ২০২৩

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় খামার বড়ধুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ের দুটি ভবনের মাঝে দূরত্ব ১২ ফুটের মতো। তবে এই ১২ ফুটের মধ্যে ১০ ফুটই ব্যবহার হয় ব্যস্ত সড়ক হিসেবে। ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়ের দেড়শতাধিক কোমলমতি শিশুরা।

 

বিদ্যালয়ের এক ভবন থেকে আরেক ভবনে যেতে এই ব্যস্ত সড়ক পার হয়ে যেতে হয় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। এছাড়া এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই বাচ্চাদের জন্য খেলার মাঠ। তাই বিরতির সময় এই ব্যস্ত রাস্তাতেই খেলায় মেতে ওঠে শিশুরা।

 

এই সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত ছুটে চলছে ইঞ্জিনচালিত বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, অটোভ্যান, ইজিবাইক, ট্রাক, লেগুনা, মাইক্রোবাস ইত্যাদি।

 

সরেজমিনে ১৯৭৩ সালে নির্মিত ১৪নং খামার বরধূল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা যায়, দুই পাশে দুটি ভবনের মাঝখান দিয়ে সড়ক। বিদ্যালয়টির বাচ্চাদের জন্য নেই কোনো খেলার মাঠ । দুটি ভবনের মাঝে সড়ক থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রেণীতে যাচ্ছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষকগণ এবং পাঠদানরত দেড়শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

 

স্থানীয়রা জানান, কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ঝুঁকিতে স্কুলটির শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। স্থানীয় সড়কবিভাগ বিদ্যালয়ের পাশে সরকারি জায়গা থাকা সত্ত্বেও  স্কুলের মাঝ দিয়ে সড়কটি নির্মিত করেছেন। ফলে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে সারাক্ষণ দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। আবার গ্রামের পাশ দিয়ে ঢাকা-উত্তরবঙ্গের একমাত্র ব্যস্ততম মহাসড়ক রয়েছে । মহাসড়ক যদি কোনো কারণে বন্ধ থাকে তখন মহাসড়কের গতিময় ভারী যানবাহনগুলোর চালকগণ এই বিকল্প রাস্তাটি অনেক সময় ব্যবহার করে থাকেন। এলাকাবাসী দূতই এই সমস্যার সমাধান চান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন্নেসা জানান, বিদ্যালয়ের বাড়তি কোনো জায়গা না থাকায় শিশুদের নিয়ে এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের টিফিন ও ছুটির সময় তারা ছোটাছুটি করে। তাদের সহজে ধরে রাখা যায় না। মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা হাত থেকে শিশুরা বা আমরা বেঁচে যাই। তাই যতদ্রুত সম্ভব কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আকুল আবেদন বিদ্যালয়টি বাচ্চাদের নিরাপদ স্থান করার জন্য স্কুলের পাশ দিয়ে সরকারি যে জায়গা রয়েছে সেখান দিয়ে যদি সড়ক নেয় তাহলে বিদ্যালয়ের বাচ্চারা তাদের পড়াশোনা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারে।

 

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুস সবুর খান জানান, দুই পাশে বিদ্যালয়ের ভবন রেখে মাঝ দিয়ে পাকা সড়ক নির্মাণ করাটা মোটেও ঠিক হয়নি। শিশুরা সময় পেলেই রাস্তাটির উপর খেলায় মেতে উঠে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিশুদের নিরাপত্তায় বিদ্যালয় ভবনের পেছন দিয়ে যে সরকারি জায়গা রয়েছে সেখান দিয়ে সড়ক তৈরি ও বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন জানাই।

 

কামারখন্দ উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার এই বিদ্যালয়ের ভিতর দিয়ে জয়েন বরধূল থেকে চৌদুয়ার পাকা সড়ক রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে সড়ক থাকায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিতে রয়েছে।

 

উপজেলা প্রাথমিক অধিদপ্তরে কর্মকর্তা সন্ধ্যা রানী জানান, এখন আমি খুবই চিন্তিত। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আকুল আবেদন । বিদ্যালয়ের  জায়গাগুলো দখলকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হোক এবং সড়কটিকে বিদ্যালয়ের দুটি ভবনের মাঝ থেকে সরিয়ে নিয়ে বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেরিনা সুলতানা বলেন, এই কাজগুলি হলো ভায়া মিডিয়া কাজ। এই কাজগুলির সাথে সরাসরি আমার সম্পৃক্ততা নেই।

 

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শহিদুল্লাহ সবুজ বলেন, আমার আমলেই পাকা রাস্তা হয়েছে। বিদ্যালয়ের অংশটুকু আমরা পাকা করা বাদ রেখেছিলাম যে স্কুলের ভিতর দিয়ে রাস্তা নেওয়া ঠিক হবে না স্কুল পড়ুয়া বাচ্চারা গাড়ির তলে পড়তে পারে। দুই দিকে পাকা করে মাঝখানের সড়কে শুধু ইট বিছানো হয়েছে যেন সড়কটি কাঁদা না হয়। এরই মধ্যে আমি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম । স্কুলটির পুরাতন ভবনের স্থানে আগামী অর্থবছরের বাজেটে নতুন বিল্ডিং স্থাপন করে সড়কটিকে নতুন বিল্ডিং এর পিছন দিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছি এবং দুটি বিল্ডিং এর সংযোগ করে দেবো যাতে করে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী দুই ভবনেই যাতায়াত করতে পারে এবং মাঝখানে কিছু অংশ ফাঁকা থাকলে সেখানে ফুলের বাগান যেন করতে পারে।

 

একুশে সংবাদ/আ.ই.প্রতি/এসএপি

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর