সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

পীরগঞ্জে সীমান্তে পুকুর খনন করা নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে বিজিবি’র সংঘর্ষ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:৩০ পিএম, ২২ জুলাই, ২০২২

 

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে সীমান্তের জিরো লাইনে পুকুর খনন করা নিয়ে এলাকাবাসীর সাথে বিজিবি’র সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। এতে বিজিবি’র দানাজপুর ক্যাম্প কমান্ডার সহ বিজিবি ৪ জোয়ান এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য আহত হয়েছেন।

 

বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার দানাজপুর সীমান্তের চন্দ্র গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

 

বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানান যায়, বৃহস্পতিবার বিকালে পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট ইউনিয়নের দানাজপুর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হারুন, নায়ে়ব বুলবুল এবং আরো দুইজন বিজিবি সদস্য সীমান্তের চন্দ্রা এলাকায় টহলে যান।

 

এ সময় তারা দেখতে পান, সীমান্তের ৩৩৯ এর ৩ এস পিলারের কাছে জিরো লাইনে জনৈক ইসমাইল হোসেন ভ্যেকু যন্ত্র (এসকেভেটর) দিয়ে পুকুর খনন করছেন। জিরো লাইনে পুকুর খনন করা নিষিদ্ধ হওয়ায় বাধা দেন তারা। এতে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দিয়ে ইসমাইল হোসেনের ছেলে আশিক বিষয়টি মোবাইল ফোনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হারুনকে জানায়। খবর পেয়ে়

জনৈক মশিউর রহমান মিলন ও দবিরুলকে সাথে নিয়ে মোটর সাইকেল যোগে ঘটনাস্থলে যান ইউপি সদস্য হারুন। এ সময় মিলন বিজিবিকে নিয়ে ভিন্ন মন্তব্য করেন। বিষয়টি বিজিবি অন্য সদস্যরা শুনে ক্যাম্প কমান্ডারকে জানান। এরপর মিলন সহ ইউপি সদস্য হারুন মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যেতে চাইলে ক্যাম্প কমান্ডার তাদের থামতে বলেন এবং বিষয়টি জানতে চান।

 

এ নিয়ে মিলন এবং ইউপি সদস্য হারুনে সাথে ক্যাম্প কমান্ডারের তর্ক বিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে বিষয়টি হাতাহাতিতে রুপ নেয়। খবর পেরে গ্রামীবাসী এসে বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডা হারুনের উপর চড়াও হন। মারপিট করে রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে টেনে হিচড়ে কমান্ডার হারুনকে পাশ্বের একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রশি দিয়ে বাঁশের খুটিতে বেধে রাখেন বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে বিজিবি’র অন্য সদস্যরা বাধা দিলে তাদেরও মারপিট করে একই বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। খবর পেয়ে বিজিবি’র অন্য ক্যাম্পের সদস্যরা আসা শুরু করলে অবস্থা বেগতিক দেখে সন্ধায় রাইফেল ফেরত দিয়ে কমান্ডার হারুন সহ অন্য বিজিবি সদস্যদের ছেড়ে দেয়া হয়।

 

দানাজপুর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হারুন জানান, ইউপি সদস্য হারুন তাকে মারপি করে এবং অস্ত্র (রাইফেল)ও গুলি ছিনিয়ে নিয়ে টেনে হিচঁড়ে তাকে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রশি দিয়ে শক্ত করে বেধে রাখেন। তার পদবী ব্যাজ ছিড়ে ফেলা হয়। অন্য জোয়ানদেরও মারপিট করা হয়।

 

ইউপি সদস্য হারুন জানান, তাকে থামিয়ে তার মোটরসাইকেলে চাবি নিয়ে নেয়া হয় এবং পরিচয় দেওয়ার পরও ক্যাম্প কমান্ডার হারুন তাকে রাইফেলের ব্যাট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনিও কমান্ডরকে কিল ঘুষি মারেন। মুহুর্তে শত শত মানুষ এসে হাজির হয় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়।

 

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে দানাজপুর ক্যাম্পে শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে জনতার পক্ষে জাবরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান এবং বিজিবি’র পক্ষে সুবেদার তাহাজ্জেল নেতৃত্ব দেন। উভয় পক্ষের কথা শুনে বিষয়টি ভুল বুঝাবুঝি বলে অপোষে মিমাংসা করা হয়।

 

এ বিষয়ে জাবরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানান, প্রথমে বিজিবি ভুল করেছে। পরে জনতা। এটা একটা ভুল বুঝাবুঝি। এলাকার শান্তি শৃংখলার স্বার্থে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।

 

পীরগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গী আলম জানান, ঘটনার কথা শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ পাননি। পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

একুশে সংবাদ.কম/ল.র.জা.হা

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর