সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সাড়ে তিন বছরে ৩৭ মন, খাই আপেল-মাল্টা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:১৬ পিএম, ৪ জুলাই, ২০২২

 

ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রস্তুত করা হয়েছে সাড়ে তিন বছর বয়সী ‘সুলতান’কে। হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরু সুলতানের উচ্চতা সাড়ে পাঁচ ফুট। লম্বায় সাড়ে ৮ ফুট। বিশাল দেহের অধিকারী, চাল-চলনও বাদশাহর মতো। ওজনে প্রায় ৩৭ মণ। দাম হাঁকানো হচ্ছে ১২ লাখ টাকা।

 

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের হরিচরনলস্কর বালাপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক নুরুল আমিনের খামারে জন্ম সুলতানের।

 

নুরুল আমিন বলেন, প্রায় ৮ বছর আগে তার একটি গাভি ছিল। সেই গাভি থেকে সুলতানের জন্ম। সুলতানের বয়স এখন সাড়ে তিন বছর। তাকে বড় করতে গিয়ে তার মাকে বিক্রি করতে হয়েছে। এছাড়া ঋণ নিয়ে প্রয়োজন মতো খাবার খাইয়েছেন ও পরিচর্যা করছেন। দিনে দিনে ওজন বেড়ে ষাঁড়টি ৩৭ মণে এসে দাঁড়িয়েছে। কোরবানির ঈদে সুলতানকে বিক্রি করবেন নুরুল আমিন।

 

সুলতানকে দেখতে প্রায় প্রতিদিনই আশপাশের লোকজন নুরুল আমিনের বাড়িতে ভিড় করছেন। উপজেলার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় ষাঁড় বলে দাবি নুরুল আমিনের। তিনি সুলতানের দাম চাইছেন ১২ লাখ টাকা।

 

হরিচরনলস্কর বালাপাড়া গ্রামে তিস্তার মানস নদীর পাশে নুরুল আমিনের বাড়ি। সরেজমিন দেখা যায়, খামারে মোটা রশিতে বেঁধে রাখা হয়েছে সুলতানকে। ওপরে চলছে একটি ফ্যান। সুলতান ঘরে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে বলে জানান নুরুল আমিন।

 

কৃষক নুরুল আমিন বলেন, তার ২৬ শতাংশ বসতভিটা ছাড়া আর কোনো জমিজমা নেই। স্বাবলম্বী হওয়ার আশায় তিনিসহ দুই ছেলে অন্যের জমিতে কৃষিকাজ করে প্রায় ১০ বছর আগে খামারটি গড়ে তোলেন। সুলতান ছাড়াও এ খামারে সাতটি গাভি ও ষাঁড় ছিল। গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে খামারে গরু লালন-পালন করতে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ঋণ পরিশোধে তিনি এর আগে পাঁচটি গরু বিক্রি করে দিয়েছেন।

 

নুরুল আমিন জানান, প্রায় ১ হাজার ৪৮০ কেজি ওজনের সুলতান ফ্রিজিয়ান জাতের। এর খাদ্যতালিকায় রয়েছে আপেল, মাল্টা, কাঁচাঘাস, খড়, গম, ধানের গুঁড়া, ভুসি, ভুট্টা ও খুদের ভাত। সব মিলিয়ে সুলতান প্রতিদিন প্রায় ৮০০ টাকার খাবার খায়।

 

তিনি আরও বলেন, ‘অন্যের খেতে কাজ শেষ করেই সুলতানের কাছে চলে আসি। পরিবারের সদস্যের মতো করে গরুটি লালন-পালন করেছি। গরুটির পেছনে অনেক শ্রম ছাড়াও টাকা ব্যয় হয়েছে। স্থানীয়ভাবে অনেক পাইকার সুলতানের দাম ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বলেছেন।’

 

‘বেশি দাম চেয়ে লাভ কী? খরচ বাদে সামান্য কিছু লাভ হলেই বিক্রি করে দেবো। এজন্য এবার কোরবানির ঈদে ১২ লাখ টাকা দাম চাওয়া হচ্ছে’, যোগ করেন এ কৃষক।

 

একুশে সংবাদ.কম/জ.ন.জা.হা

 

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর