সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

প্রতিবন্ধী আসেদা কার্ড হওয়ার ৫ বছরেও ভাতা পাননি

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৮:০৬ পিএম, ২৫ জুলাই, ২০২১

মোছা. আসেদা বেগম (৩৬)। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তিনি পঙ্গুত্বের শিকার। অতিকষ্টে সংগ্রহ করেছেন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কার্ড, কিন্তু কার্ডধারী হয়েও তার ভাগ্যে জোটেনি ভাতা। পারিবারিক সূত্রে প্রাপ্ত কোন ভিটা না থাকায় জন্মের পর থেকেই অন্যের বাড়িতে আসেদার বসবাস। 

অন্যের বাড়িতে ভিক্ষা করে বেঁঁচে আছেন তিনি। আসেদা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার মেয়ে।

আসেদা বেগম জানান, জন্মের পর থেকে আমি এই ভিটিদাউদপুর গ্রামে থাকি। নিজের কোন বাড়ি নাই তাই অন্যের বাড়িতে থাকি। গ্রামের কয়েকজন মিলে মাথায় সমস্যা নূর মুহাম্মদ (৫২) নামে এক লোকের সাথে বিয়ে দেয়। বিয়ের পর থেকে পাগল জামাই নিয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ করি। খাবার নিয়ে এত চিন্তা নাই কারণ গ্রামে কোন অনুষ্ঠান হলে মানুষ বাড়িতে এসে বলে যায় যেন জামাই নিয়ে খেয়ে আসি। পুলা মাইয়া নাই তাই খাবার নিয়াও চিন্তা নাই। এক বেলা খাইলে আরেক বেলা না খাইলেও চিন্তা নাই।

অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে পঙ্গু আসেদা বেগম আক্ষেপ করে বলেন, এই কার্ড ঘরে রেখে কি লাভ? ৫বছর আগে এই কার্ড পাইছি (যার কার্ড নং ১২১১৩৬৬৫৭৫৪৪৩৫-০৬)। এই কার্ড তো আমারে খাওন দেয় না। গ্রামের মেম্বারের কাছে গত চার বছর ধরে গেলেও তিনি আমারে কোন সাহায্য করেনি। 

মেম্বার এই কার্ড দিয়ে টাকা পাইয়ে দিবে তারজন্য মেম্বারকে ৩ হাজার টাকা দিতে হবে নাহলে দিবেনা। মেম্বার আমারে না দিয়া মেম্বারের পরিচিতদের ভাতা দেয়। মৃদুস্বরে কথাগুলো বলার সময় অঝোর ধারায় পানি গড়িয়ে পড়ছিল প্রতিবন্ধী আসেদা বেগমের দুই চোখ থেকে।

অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) নাছির মিয়া বলেন, কার্ড থাকলেই হয় না, ভাতা পাবার জন্য কার্ডের বই বানাতে হবে। তবে, আসেদাকে কার্ডের বই বানিয়ে দিয়ে দ্রুত ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।

পাহাড়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খন্দকার বলেন, আমার কাছে আসলে আমি ব্যবস্তা করে দিব। সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্যই এই কার্ডের ব্যবস্খা করেছেন তাই ওনিও ভাতা পাবেন। এখন যেহেতু অবগত হয়েছি আমার কাছে আসলে আমি ব্যবস্থা করে দিব।

উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক আফরুজা আফরীন বলেন, ৫ বছর কার্ড থেকেও ভাতা পাচ্ছেনা এটা দুঃখজনক। আসেদা বেগম কার্ডটি নিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করলে ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করে দিব। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করছি কেন এমনটি হলো। চার বছর ভাতা পাওয়ার জন্য মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করেও কেন ভাতা পাবেনা প্রশ্ন করা হলে এই কর্মকর্তা বলেন, কার্ডটি নিয়ে আসলেই আমি চেক করতে পারবো কি সমস্যা।

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে. এম. ইয়াসির আরাফাত জানান, ‘৫ বছর কার্ড পেয়েও ভাতা পাবেনা এটা দুঃখজনক। আমি সমাজসেবা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেব।’

 

 


একুশে সংবাদ/এনায়েত/প

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর