সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

নরসিংদীর পাঁচদোনায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়ে ৫ জন

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১২:৩৬ পিএম, ২০ জুন, ২০২১

নরসিংদীর পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী আঞ্চলিক সড়কে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাড়িঁয়েছে পাঁচজন। গুরুতর আহত অবস্থায় রোকেয়া বেগম (৬০) কে ঢাকায় নেয়ার পথে তিনি মারা যায়। শনিবার (১৯ জুন) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নরসিংদী সাকুরার মোড়ে দ্রুতগামী ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এ দুঘর্টনা ঘটে। 

এ দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ ৫ জন নিহত  হয়েছে। এসময় গুরুতর আহত হয়েছে আরো ৭ জন। গুরুত্বর আহতদের ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতরা হলেন, সাভার উপজেলার আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার মুক্তি আক্তার (৩০) ও তাঁর ছেলে সাদেকুল (৮), রুবি আক্তার (৩৩) ও তাঁর মেয়ে রাহিমা (৫) এবং রোকেয়া বেগম (৫২)। 

এ ঘটনায় রাহিমার বাবা রশিদও আহত হয়েছেন। পুলিশ ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনাস্থলে নিহত হন মুক্তি ও রাহিমা। আর নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সাদেকুল এবং ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান রুবি ও রোকেয়া। 

আহতরা হলেন, রাজিয়া (৪০), ইউসুফ মিয়ার ছেলে রশিদ (৪০), জাহের আলীর ছেলে কাজিম উদ্দিন (৪২), সাইফুল ইসলামের মেয়ে সাইফা (১২), হারুন মিয়ার স্ত্রী শারমীন (৪০) ও মেয়ে ইসরাত জাহান (৮) ও কাদির মিয়ার স্ত্রী সামসুন্নাহার (৬০)।

পুলিশ ও আহতরা জানায়, শনিবার সকালে ১৪ জন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে  একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস যোগে আব্দুর রশিদ ও তার পরিবাসের সদস্যরা সভারের আশুলিয়ার জিরাবো এলাকা থেকে সিলেট মাজার জিয়ারত করতে গিয়েছিলো। তারা শাহজালাল ও শাহপরান মাজার জিয়ারত করে জাফলং বেড়াতে যায়। সেখান থেকে আশুলিয়ায় বাড়ি ফিরছিল। 

শনিবার রাতে মাইক্রোবাসটি পাঁচদোনা-ঘোড়াশাল-টঙ্গী সড়কের নরসিংদী সাকুরা মোড়ে পৌছলে দ্রুতগামী একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংর্ঘষ হয়। এসময় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের যাত্রী মুক্তি আক্তার ও রাইমা মারা যায়। 

পরে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে প্রেরন করে। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে সাদেক মারা যায়। এদের মধ্যে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুরুতর আহতবস্থায় ৪ মহিলাকে ঢাকায় প্রেরন করে। পরে ঢাকায় নেয়ার পথে রুবি ও রোকেয়া মারা যায়। 
 
দুর্ঘটনাকবলিত মাইক্রোবাসের আহত যাত্রী আব্দুর রশিদ বলেন, সিলেট মাজার জিয়ারত শেষে জাফলং বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আশুলিয়ায় বাড়ি ফেরার পথে একটি ট্রাক আমাদের মাইক্রোবাসের উপর উঠিয়ে দেয়। এর পর দেখি আমার স্ত্রী ও মেয়ে সহ পরিবারের সদস্যরা রাস্তার উপর পড়ে আছে।

দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদশী নান্নু মিয়া বলেন, সড়কে হঠাৎ  বিকট শব্দ শুনতে পাই। এসে দেখি মাইক্রোবাসটি ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। রাস্তার উপর মহিলা ও শিশুরা পড়ে আছে। দৌড়ে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। পরে একটা পিকাপ থামিয়ে তাদের হাসপাতালে পাঠাই।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. আসাদ বলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় আহতদের আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এদের মধ্যে গুরতর ৪ জন মহিলাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনের হাত থেতলিয়ে গেছে। আর ৪ জনেরই মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছে। আর মৃত অবস্থায় একটি শিশুর মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে।

মাধবদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, দূর্ঘটনার ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যায়। আর আহত দুই মহিলাকে ঢাকায় নেয়ার পথে মৃত্যু হয়। এনিয়ে পাঁচজন মারা গেছে।


একুমে নিউজ/সাব্বির হোসেন 
 

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর