সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঘুরে আসুন পুঠিয়া রাজবাড়ি

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৯:২২ পিএম, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩

সবুজ দূর্বাদলের ওপারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহ্যের সাক্ষী প্রাচীন রাজপ্রাসাদ। বিশালাকৃতির পরিখা চারপাশ থেকে আগলে রেখেছে ইতিহাসের এই অমর কীর্তিকে। যেখানে আজও আজানের ধ্বনি আর শঙ্খের জয়ধ্বনি বেজে ওঠে পাশাপাশি। জটিল জীবনের কঠিন সমীকরণকে দুমড়েমুচড়ে ফেলে সহজ-সরল মানুষগুলো এখনো নিজেদের সংস্কৃতি, সভ্যতা ও ঐতিহ্যকে লালন করে চলেছেন আপন সত্তায়। ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সভ্যতা সম্পর্কে যাঁদের জানার আগ্রহ, তাঁরা অবশ্য ঘুরে আসতে পারেন রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার চারআনি বাজারে অবস্থিত পুঠিয়া রাজবাড়ি থেকে।

 

কালের সাক্ষী
১৮৯৫ সালে মহারানি হেমন্তকুমারী দেবী ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতিতে তৈরি করেছিলেন পুঠিয়ার এই নান্দনিক রাজবাড়িটি। অপরূপ এ প্রাসাদটি মহারানি হেমন্তকুমারী দেবী নির্মাণ করেছিলেন তাঁর শাশুড়ি মহারানি শরৎসুন্দরী দেবীর সম্মানে।

 

নজর কাড়বে স্থাপনা
পুঠিয়া রাজবাড়িতে আছে এ দেশের সবচেয়ে বেশি টেরাকোটা শোভিত মন্দির। রাজবাড়িকে ঘিরে রয়েছে ছয়টি মন্দির। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম শিবমন্দির, রাধাগোবিন্দ মন্দির,  গোপাল মন্দির,  গোবিন্দ মন্দির,  দোল মঞ্চ ইত্যাদি। শিবমন্দির বাদে প্রতিটি মন্দিরের দেয়ালে আছে অপূর্ব সব পোড়ামাটির ফলক বা টেরাকোটা। যেখানে ফুটে উঠেছে তৎকালীন সংস্কৃতি ও জীবনধারা। প্রত্নতাত্ত্বিক দৃষ্টিতে এই মন্দিরগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

এই রাজবাড়িতে অবস্থিত শিবমন্দিরটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম বড় শিবমন্দির হিসেবে পরিচিত। এর অন্য নাম ভুবনেশ্বর মন্দির। এর গম্বুজ এবং গঠনশৈলী যে কারও নজর কাড়বে। শিবমন্দিরের দুই দিকে আছে সিঁড়ি। একদিক দিয়ে উঠে যেমন মন্দিরে যাওয়া যাবে, অন্যদিক দিয়ে নেমে যাওয়া যাবে দিঘিতে। সুউচ্চ এই মন্দিরের প্রতিচ্ছবি যখন দিঘির পানিতে ঠিকরে পড়ে, তখন মনে হয় এ যেন আরেক তাজমহল।

 

সম্প্রীতির বন্ধন
কালের পরিক্রমায় হারিয়ে গেছে জমিদারি। তবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই রাজবাড়িটি মিশে আছে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির সঙ্গে। এখনো এখানে প্রতিবছর আষাঢ় মাসে বসে রথের মেলা। মাসব্যাপী চলা এই মেলা এ অঞ্চলের মানুষের বড় মিলনকেন্দ্র। ঈদ-পার্বণেও এখানে জমে ওঠে উৎসবের আমেজ। বসে মেলা, নাগরদোলার ঝলকও চোখে পড়ে। ঐতিহ্যবাহী এই রাজবাড়ির মাঠেই হয় বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাওয়ার পথে নাটোর অতিক্রম করে কিছু দূর এগোলেই পুঠিয়া উপজেলা। এই উপজেলা শহরের বাসস্ট্যান্ডে নেমে যেকোনো ভ্যান বা অটোরিকশায় চেপে পাঁচ টাকা ভাড়া দিলেই যাওয়া যাবে চারআনি বাজার তথা রাজবাড়িতে।

 

আবাসিক ব্যবস্থা
পুঠিয়ায় থাকার হোটেল আছে। তবে ভালো হোটেলে থাকতে চাইলে যেতে হবে রাজশাহী বা নাটোর। যেখানেই থাকুন না কেন, দুই দিনে ঘুরে ফেলা যাবে নাটোরের উত্তরা গণভবন, বঙ্গজল, চলনবিল, বাঘা মসজিদ ও রাজশাহী শহরের বিভিন্ন জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য।

 

একুশে সংবাদ.কম/আ.প/সা’দ

পর্যটন বিভাগের আরো খবর