সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রাঙ্গামাটির অন্যতম সেরা পলওয়েল পার্ক

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১১:৫৩ এএম, ১ মার্চ, ২০২১

পলওয়েল পার্ক এন্ড কটেজটি রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত।পলওয়েল পার্ক পুলিশের তত্ত্বাবধানে ডিসি বাংলো রোডের পাশে কাপ্তাই লেকের ঠিক কোল ঘেঁষে তৈরি করা হযেছে। যা সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় হয়ে উঠেছে রাঙ্গামাটির অন্যতম সেরা বিনোদন কেন্দ্র। 

বৈচিত্রময় ল্যান্ডস্কেপ, অভিনব নির্মাণশৈলী ও নান্দ্যনিক বসার স্থান পলওয়েল পার্কটিকে দিয়েছে ভিন্ন ধরনের এক মাত্রা।

নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে এবং বিনোদনের জন্য প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে পলওয়েল পার্ক।

মুখোশের আদলে তৈরী করা হয়েছে পার্কটির প্রবেশপথ। প্রবেশপথের পাশেই ভিন্ন আরেকটি মুখোশ আকৃতির টিকেট কাউন্টার। প্রবেশমূল্য, জনপ্রতি ৩০ টাকা। পাঁচ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য টিকেট লাগবেনা। পার্কটি রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। 

এখানে শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে কিডস জোন। শিশুদের আনন্দ দিতে এই পার্কে বিভিন্ন রকম রাইডের ব্যবস্থা রয়েছে। টিকেটের মূল্য রাইড ভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। টিকেটের দামের তুলনায়, অনেক বেশি সময় ধরে বাচ্চারা এখানে রাইডগুলো উপভোগ করতে পারে।

বাঙালির জীবনের সাথে মিশে থাকা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরতে কিডস জোনের অপর প্রান্তে তৈরী করা হয়েছে ঢেঁকিঘর আদলের একটি স্থাপনা। গ্রামের নারীদের ঢেঁকিতে ধান ভানার এই ভাস্কর্য গ্রামীণ জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়। এই ভাস্কর্যের স্থাপত্য শৈলী এতটাই সুনিপুন, প্রথম দেখায় আপনার মনে হতে পারে বাস্তব কোনো দৃশ্য দেখছেন।

কিডস জোন থেকে সামনে এগিয়ে গেলে রাস্তার পাশে বসার জন্য কিছু বেঞ্চ তৈরী করা আছে। এখানে বসলে কাপ্তাই লেকের মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে। সামনে যতদূর দৃষ্টি যায়, লেকের অথৈ জলের সীমানা দূরের আকাশে গিয়ে মিশেছে। আকাশ আর লেকের নীলের মাঝে পাহাড়গুলো যেন সীমারেখা হয়ে আছে। এর ঠিক পেছনেই তৈরী করা আছে কলসি কাঁখে নারী ভাস্কর্য। তাদের কলসের প্রবাহমান পানিতে তৈরী হয়েছে ঝর্ণা। দিনের আলো নিভে গেলে কৃত্তিম আলোয় এই ঝর্ণা আরও মোহময় হয়ে ওঠে। 

পলওয়েল পার্ক এর একেবারে শেষপ্রান্তে তৈরী করা হয়েছে লাভ পয়েন্ট। এছাড়াও পার্কটিতে রয়েছে পলওয়েল পার্ক কটেজ এবং সুইমিং পুল। লেকে ঘোরার জন্য বোটের ব্যবস্থা আছে, আছে জেট স্কিইং এর ব্যবস্থা, আছে কায়াকিং এর ব্যবস্থা। লেকের পার ঘেঁষে রাখা আছে বিচ চেয়ার। লেক আর পাহাড়ে সন্ধ্যা নামার দৃশ্য উপভোগ করতে শেষ বিকেলে এখানে বসতে পারেন আয়েশ করে।

কি আছে পলওয়েল পার্কে 

প্যাডেল বোট, পার্কটির প্রবেশে ভুতুড়ে পাহাড়ের গুহা, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি শিল্প, বিভিন্ন প্রকারের রাইড,কলসি ঝর্ণা,পাহাড়ী কৃত্রিম ঝর্ণা,ক্রোকোডাইল ব্রিজ, হিলভিউ পয়েন্ট, লেকভিউ পয়েন্ট, লাভ লক পয়েন্ট, ফিশিং পিয়ার,মজাদার ও মুখরোচক খাবারের সমারোহ সমৃদ্ধ পলওয়েল ক্যাফেটেরিয়া।

ঠিকানা এবং যোগাযোগ 

ডিসি বাংলো রোড, রাঙ্গামাটি সদর 
ফোন নাম্বার : ০১৮৩৭৩৩৫৫৯৫
ওয়েবসাইট :https://www.polwelpark.com/
ফেসবুক:https://www.facebook.com/PolwelParkRmtOfficialPage/
 
পলওয়েল পার্ক যাওয়ার উপায়

ঢাকার ফকিরাপুল মোড় অথবা সায়দাবাদ থেকে রাঙ্গামাটিগামী অসংখ্য বাস পাওয়া যায়। সকল বাসই সকাল ৮.০০ হতে ৯.০০ টা এবং রাত ৮.৩০ হতে ১১.০০ এর মধ্যে ঢাকা ছাড়ে। 


ভাড়া

ঢাকা-রাঙ্গামাটিঃ এসি ৯০০ টাকা (শ্যামলী), বিআরটিসি এসি ৭০০ টাকা, নন এসি সকল বাস- ৬২০ টাকা।

চট্টগ্রাম শহরের অক্সিজেন মোড় থেকে রাঙামাটি গামী বিভিন্ন পরিবহনের বাস পাওয়া যায়। ১৫০ টাকার মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটি বাস পেয়ে যাবেন। এরপর রাঙামাটির রিজার্ভ বাজার থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে এই পার্কে যেতে ৫০ টাকা সিএনজি ভাড়া পড়বে।


খাবার ও থাকার ব্যবস্থা

রাতের কৃত্রিম আলোয় এই ঝর্ণার সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পায়। এখান থেকে কিছুটা এগুলেই পাবেন চটপটি আর ফুসকার দোকান। আরও একটু সামনে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামলেই পাবেন পলওয়েল ক্যাফেটেরিয়া। মুখরোচক সব খাবার এখানে পেয়ে যাবেন।

ক্যাফেটেরিয়ার সামনে এগুলেই ফিশিং পিয়ার। এটি হচ্ছে একটি প্ল্যাটফর্ম। এটি দেয়া হয় যাতে জাহাজ, নৌকাগুলো সহজেই সেখানে ভিড়তে এবং নোঙ্গর ফেলে অবস্থান করতে পারে। এখানে দাঁড়িয়ে কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্য খুব ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন।

এছাড়াও এই পার্কে পিকনিকসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে অত্যাধুনিক কটেজ রয়েছে থাকার জন্য। কটেজটির নাম পলওয়েল পার্ক কটেজ। অপরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশে আধুনিক বিনোদনের জন্য চলে যেতে পারেন পলওয়েল পার্কে।


একুশে সংবাদ/ এ /এস


 

পর্যটন বিভাগের আরো খবর