সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

প্রতিবন্ধী হয়েও এগিয়ে চলছে আরাফাত

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:২৮ পিএম, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩

হাতের আঙ্গুল না থাকায় দুই হাত দিয়েই লিখতে হয় আরাফাত মল্লিক(১১)কে। এরপরও ক্লাসে সব সময় প্রথম হয়েছে সে। লেখা-পড়া করে জীবনে সরকারি বড় কর্মকর্তা হবার ইচ্ছে তাঁর। আরাফাত ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর নন্দী পাড়ার আলামিন মল্লিকের ছেলে।

 

আরাফাত মল্লিকের পিতা আলামিন মল্লিক বলেন,জন্মের দিনই বুঝতে পেরে ছিলাম আরাফাত শারিরীক প্রতিবন্ধী। ওই অবস্থায় দেখার পর প্রথমে কিছুটা মন খারাপ হয়েছিল। তবে ভেঙ্গে পড়িনি। বিশেষ করে তাঁর মা ছিলেন আরো শক্ত অবস্থায়।আর সব সবার সন্তানের তুলনায় আরাফাতকে একটু আলাদা ভাবেই বড় করতে হয়েছে আমাদের।

 

তিনি বলেন, আরাফাত একটু বড় হয়ে স্কুল যাওয়ার মত হলে,তাকে বলুহর দক্ষিণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। ওই সময় শুধু আরাফাতের রোল হয় একটু বেশি।

 

এরপর থেকে সে কোন দিন ২ নাম্বার হন ক্লাসে। এরজন্য অকান্ত পরিশ্রম করেছেন তাঁর মা সেলিনা খাতুন। আজ তাঁর বয়স ১১ বছর। বর্তমানে সে কোটচাঁদপুর সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্র। সে ৫ম শ্রেনীতে বৃত্তি পরিক্ষাও অংশগ্রহণ করেছেন। আরাফাত বৃত্তি পাবেন বলে জানিয়েছেন আমাকে।

 

তিনি আরো বলেন,কাজের ফাঁকে একদিন আরাফাত আমাকে জিজ্ঞাসা করেন,বাবা সরকারি বড় পদ কি।আমি ওই সময় তাকে বলেছিলাম,জেলা প্রশাসক,এসপি,ইউএনও। ওই সময় সে আশা প্রকাশ করে ছিল সরকারি বড় কর্মকর্তা হওয়ার। আলামিন মল্লিকের দুইটি সন্তান। এরমধ্যে আরাফাত মল্লিক বড় আর ছোট মেয়ের বয়স ৯ মাস।

 

জানা যায়,আলামিন মল্লিক বিএ পাস আর তার মা সেলিনা খাতুন এসএসসি পাস। তারা শিক্ষিত হয়ে ও কোন চাকুরী না করে,পিতা আলামিন মাঠে কৃষি কাজ বেচে নিয়েছেন। আর মা সেলিনা খাতুন গহিনী। তারা ছেলে মেয়েদের মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলে নিজেদের ইচ্ছে পূরন করতে চান।

 

আরাফাত মল্লিক বলেন,ছোট বেলা থেকে দুই হাতে লিখে অভ্যাস হয়ে গেছে। তেমন কোন সমস্যা হয় না।সবার মত লিখতেও পারি। বড় হয়ে কি হতে চাও এমন প্রশ্নে,সে বলেন,লেখা পড়া শিখে সরকারি দপ্তরের বড় কর্মকর্তা হতে চাই।

 

একুশে সংবাদ/সু.কু.প্রতি/এসএপি

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের আরো খবর