সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

জেনে নিন জুমাতুল বিদার গুরুত্ব ও ফজিলত 

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:৫৯ পিএম, ২৯ এপ্রিল, ২০২২
ছবি: সংগৃহীত

জুমাতুল বিদা মূূূলত রমজান মাসের শেষ জুমাকে জুমাতুল বিদা বলা হয়।দিনটি মুসলিম উম্মাহর কিছু মানুষের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। বছরের শ্রেষ্ঠ মাস রমজানের শেষ জুমা হওয়ার কারণে এটি তাদের মতো অনেকের কাছে মর্যাদাশীল।

কোরআন ও হাদিস এবং সালফে সালেহিন, মুসলিম মনীষী ও ইসলামিক জ্ঞানবেত্তাদের প্রকৃষ্ট মতামত হলো- আল্লাহ তাআলা বান্দার ওপর নামাজ-রোজা ও অন্যান্য যেসব ইবাদত ফরজ করেছেন,সেগুলোর ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া জরুরি।রাসুল (সা.) যেসব সুন্নত ও নফলে অভ্যস্ত ছিলেন, সেগুলোর প্রতি আন্তরিক হওয়া ও নিজের জীবনে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা কর্তব্য।আর এর বাইরে যা কিছু মানুষ দ্বীনের নামে আবিষ্কার করেছে,তা বিদআত ও পরিত্যাজ্য।

এছাড়াও ‘জুমাতুল বিদা’কে কেন্দ্র করে অনেক ধরনের নব আবিষ্কার ও বিদআত ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন জায়গায়।তন্মধ্যে কিছু বিদআতের কথা উল্লেখ করা হলো- যাতে সচেতন মুমিন এসব থেকে বেঁচে থাকতে পারেন।

এক.
রমজানের শেষ জুমায় বিভিন্ন মতাদর্শী, সাধারণ মানুষ ও বিদআতপন্থী লোকজন কিছু নামাজ পড়ে থাকেন; আর তারা মনে করেন, এভাবে নামাজ পড়লে ফরজ নামাজ ছুটে যাওয়ার গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। অথচ শরিয়তে এমন নামাজের কোনো ভিত্তিই নেই। নিরেট বানানো বিদআতই কেবল এটা।

দুই.
উপমহাদেশের অনেক মুসলিম মনে করেন,পারস্পরিক দেখা-সাক্ষাৎ ও আলাপ-আলোচনার জন্য জুমাতুল বিদা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ফলে এই উপলক্ষে তারা বড় বড় ও বিখ্যাত মসজিদগুলোতে সফর করেন। বিপুল সংখ্যক লোক বিভিন্ন দিকে গমন করেন।বলাবাহুল্য যে, এই ধরনের জুমার কোনো বিশেষ ফজিলত নেই।তবে কেউ যদি এমনটা মনে করে থাকেন এবং বিশ্বাস করেন, তাহলে তিনি ভুলের ভেতরে রয়েছেন।অথচ ওয়াজিব ও কর্তব্য হলো- যখন জুমার ও ফরজ নামাজের আজান হবে, মসজিদে উপস্থিত হয়ে জামাতে শরিক হওয়া।আর অপারগ ব্যক্তি ছাড়া এক্ষেত্রে অবহেলা না করা।

তিন.
আবার কেউ কেউ এই দিন ‘সালাতুল ফায়েদা’ নামে নামাজের একটি পরিভাষা তৈরি করেছেন।অথচ এটা কোনোভাবেই শরিয়ত সিদ্ধ নয়। বরং মানুষের সৃষ্ট একটি বিদআত।শায়খ ইবনুল উসাইমিনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, সালাতুল ফায়েদা নামে একশ রাকাত ও রমজানের শেষ জুমায় চার রাকাত বিশেষ নামাজ রয়েছে।এ ব্যাপারে তিনি উত্তরে বলেন, এই বক্তব্যটি সঠিক নয়। আর সালাতুল ফায়েদা নামে কোনো নামাজের ভিত্তিও নেই।কারণ,সব নামাজই তো ফায়েদার।আর ফরজ নামাজ হলো- সবচেয়ে ফায়দার; কেননা, কোনো ইবাদত যদি ফরজ হয়, সেটা নিশ্চয় নফল থেকে উত্তম।অতএব, সালাতুল ফায়েদা নামে যে নামাজের কথা বলা হচ্ছে, এটা একটা বিদআত; শরিয়তে এর কোনো ভিত্তি নেই।

চার.
জুমায়ে ইয়াতিম নামে কেউ কেউ অনুষ্ঠান করে থাকেন। অথচ উপরোক্তগুলোর মতো এটারও শরিয়তে কোনো ভিত্তি নেই। রমজানের অন্য কোনো দিনগুলোর তুলনায় শেষ রমজানের বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য নেই। এটার সঙ্গে মানুষ সুস্থ হওয়ার কোনো বিষয়ও সম্পৃক্ত নয়, যেমনটা কিছু লোক মনে করে থাকে। অনুরূপভাবে ইবাদতের ক্ষেত্রেও বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য ও বিশেষতা নেই। (আল-বিদাউল হাওলিয়্যাহ, পৃষ্ঠা : ৩৩৬)

 

একুশে সংবাদ/ঢা.পো/এস.আই


 

ধর্মচিন্তা বিভাগের আরো খবর