সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ছুটিতে ঘুরে আসুন কক্সবাজারের সেরা ৫টি দর্শনীয় স্থান

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০২:৩০ পিএম, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার। রয়েছে স্বচ্ছ নীল জলরাশির বিশাল সাগর, তার সামনে বিশাল বালিয়াড়ি। যার সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সবাইকে। এছাড়া প্রবাল দ্বীপ, পাহাড়ি দ্বীপ এবং পাহাড়-সমুদ্রের মিশেলের দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক। তাই একটু ফুরসত পেলেই দূর-দূরান্ত থেকে এই কক্সবাজারে ছুটে আসে হাজারো পর্যটক। তবে এবার ঈদুল ফিতরের টানা ছুটির সঙ্গে পহেলা বৈশাখ যোগ হওয়াতে সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে কয়েক লাখে।

 

কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে শুয়ে-বসে কাটিয়ে দিয়ে চলুন জেনে নেয়া যাক কক্সবাজারের আকর্ষণীয় পর্যটন স্পষ্ট সম্পর্কে।


১. কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী ছাড়াও নজর কাড়বে নাজিরারটেক সমুদ্র সৈকত
কক্সবাজার শহরের কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী সমুদ্র সৈকতের সাথে কমবেশি সব পর্যটকরাই পরিচিত। শহর লাগোয়া হওয়ার এই সমুদ্র সৈকতগুলোতে হাজারো পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু ভিড় এড়িয়ে ভিন্নরকম সমুদ্র দর্শনের জন্য যেতে হবে শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে নাজিরারটেক সমুদ্র সৈকতে। সেখানে যেতে পাড়ি দিতে হবে নাজিরারটেক শুটকি মহাল। শুটকির গন্ধ নিতে নিতে টমটম (অটো) বা সিএনজিতে করে চলে যেতে পারেন কোলাহলমুক্ত নাজিরারটেক সমুদ্র সৈকতে। কলাতলী ডলফিন মোড় থেকে টমটম বা সিএনজির রিজার্ভ ভাড়া পড়বে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

২. দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী
কক্সবাজারের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান মেরিন ড্রাইভ সড়কেই দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানীর অবস্থান। কক্সবাজার শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে দরিয়ানগর পার্ক। সেখানে ৩০ টাকা টিকিটে প্রবেশ করে দেখার সুযোগ পাবেন সুউচ্চ পাহাড়ের মাঝখানে গোহা। আর পাহাড়চূড়া থেকে দেখা যাবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এবং মেরিন ড্রাইভের অপার সৌন্দর্য। দরিয়ানগর পার্ক দেখা শেষে মেরিন ড্রাইভ হয়ে আরেকটু দূরে গেলেই হিমছড়ি। সেখানে ৩০ টাকা প্রবেশমূল্যে গিয়ে দেখা যাবে ঝর্ণা। এছাড়া পাহাড় থেকে দেখা যাবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে কিছুদূরেই ইনানী সমুদ্র সৈকতের অবস্থান। সারাদিনের জন্য অটো বা সিএনজি ভাড়া নিতে পারে ১৫০০ টাকা।

৩. দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী
কক্সবাজারে এসে দেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী ভ্রমণে না গেলে কক্সবাজার ভ্রমণ একেবারেই যেন পূর্ণতা পাবে না। তাই কম খরচে চলে যেতে পারেন মহেশখালীতে। কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএর ৬ নং ঘাট থেকে নদীপথে যেতে হবে দ্বীপটিতে। জনপ্রতি ১১০ টাকা ভাড়ায় পার হওয়া যাবে নদী। স্পিডবোটে নদী পারাপারই সবচেয়ে মুগ্ধ করবে আপনাকে। এছাড়া সেখানে গেলে মহেশখালী আদিনাথ মন্দির, শ্যুটিং ব্রিজ, বৌদ্ধ মন্দির দেখার সুযোগ পাবেন। এছাড়া লবণের মাঠও দেখা যায় সেখানে। কিছুটা সুন্দরবনের ফিলও নেওয়া যাবে মহেশখালী থেকে।

৪. মেরিন ড্রাইভ রোড
বর্তমানে কক্সবাজার ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হলো পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ রোড। ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রোড কক্সবাজারের কলাতলী থেকে শুরু হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। মেরিন ড্রাইভ রোডের এক দিকে রয়েছে উত্তাল সমুদ্র সৈকত আর অন্য দিকে রয়েছে সবুজের ঢাকা ছোট-বড় পাহাড়। আবার কোথাও কোথাও পাহাড়ের গা বেয়ে ঝর্ণা ধারার দেখা মিলে। মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে যেতে যেতে বিস্তৃত সাগরের সমস্ত সৌন্দর্য্য আহরণ ও জেলেদের সাগরে মাছ ধরার দৃশ্য উপভোগ করা যায়। সেই সাথে সমুদ্র সৈকতে দেখা মিলবে টেকনাফ গর্জন ফরেস্ট খ্যাত চিরহরিৎ বন। কক্সবাজারের কলাতলী বা সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে খোলা জিপ, মাইক্রোবাস, সিএনজি কিংবা অটোরিকশায় মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে হিমছড়ি ও ইনানী সমুদ্র সৈকত যাওয়া যায়।

৫. রামুর ঐতিহাসিক বৌদ্ধ বিহার এবং কক্স সাহেবের বাংলো
কক্সবাজার জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী উপজেলা হচ্ছে রামু। পুরাকীর্তিসমৃদ্ধ রামুতে রয়েছে অনেক প্রাচীন বৌদ্ধ নিদর্শন। রামুতে সর্বমোট ৩৫টি বৌদ্ধ মন্দির ও জাদি রয়েছে। রামুর উত্তর মিঠাছড়ির পাহাড়চূড়ায় রয়েছে গৌতম বুদ্ধের ১০০ ফুট লম্বা সিংহশয্যা মূর্তি। আর মাত্র দুই কিলোমিটার অদূরেই কেন্দ্রীয় সীমাবিহার নতুন করে নির্মিত হয়েছে। কিছুটা দক্ষিণে এগিয়ে গেলেই রয়েছে নজরকাড়া লালচিং ও সাদাচিং বৌদ্ধ বিহার। এছাড়াও আশপাশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে অসংখ্য ছোট-বড় আরো অনেক বৌদ্ধ বিহার। এছাড়া রয়েছে রাংকোট বৌদ্ধ বিহার। রাংকোটে যেতেই দেখা মিলবে কক্সবাজার যার নামে নামকরণ সেই ব্রিটিশ কূটনীতিক ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের বাংলো। ইতিহাসের অংশ হতে চাইলে ডু মেরে ঘুরে আসতে পারেন সেখানে।

একুশে সংবাদ/এনএস

লাইফস্টাইল বিভাগের আরো খবর