সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মমেকে এক সপ্তাহে ৯৬ শিশুর মৃত্যু

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১০:১৫ পিএম, ৪ ডিসেম্বর, ২০২২

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মমেক) এ গত এক সপ্তাহে ৭৪ নবজাতক ও  ২২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের বেড ও বারান্দায় মাত্রাতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

 

রোববার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে নবজাতক ওয়ার্ডে (এসআইসিইউ) ১ হাজার ৩৫৩ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৪ নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে হাসপাতালের ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছে মোট ২ হাজার ৮৭৭ শিশু। এর মধ্যে মারা গেছে ২২ শিশু।

 

রোববার দুপুরে হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, নবজাতক (এনআইসিইউ) ওয়ার্ডে ৫০ বেডের বিপরীতে ২০৪ নবজাতক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের বাইরে বারান্দায় অভিভাবকরা অপেক্ষা করছেন।

 

এদিকে, হাসপাতালের নতুন ভবনের ৬ তলার ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, দুই ওয়ার্ডে বেড সংখ্যা ৬০টি। ওই ৬০ বেডের বিপরীত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে ৪৪১ জন শিশুকে। ওই ওয়ার্ডের বারান্দা ও চলা ফেরা করার রাস্তায় অনেক শিশু রোগী নিয়ো বসে আছে অভিভাবকরা। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সরা।

 

নতুন ভবনের ৬ তলার ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের গিয়ে কথা হয়, গাজীপুরের মাওনা থেকে ১০ মাস বয়সী শিশু আনাসকে নিয়ে এসেছেন ইউসুফ আহমেদ। তিনি বলেন, সম্প্রতি বাচ্চার পাতলা পায়খানা ও সর্দি জ্বর হয়। পরে গত তিন দিন আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হই। এখানে চিকিৎসকরা শিশুদের যত্ন সহকারে চিকিৎসা করেন। আমার বাচ্চা আগের চাইতে অনেকটাই ভালো আছে।

 

ময়মনসিংহের গৌরিপুর থেকে শিশু বাচ্চা নিয়ে এসেছেন জমেলা খাতুন। তিনি বলেন, বাচ্চার বয়স ১১ মাস। বেশ কয়েকদিন ধরে বমি ও পাতলা পায়খানায় ভোগছে। বাচ্চা আগের চাইতে কিছুটা ভালো আছেন বলেও জানান তিনি।

 

ময়মনসিংহ সদরের অস্টধর ইউনিয়ন থেকে ৬ মাস বয়সী শিশু মাহদীকে নিয়ে এসেছেন মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, গত তিন দিন আগে সর্দি কাশি ও পাতলা পায়খানায় আক্রান্ত হয় মাহদী। পরে ওই দিনই শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হই। এখন মোটামোটি সুস্থ। আজই আমার বাচ্চার ছুটি দিয়ে দিবে।

 

এ বিষয়ে নবজাতক (এনআইসিইউ) ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, গড় হিসাবে ঢাকা সিলেটের তুলনায় ময়মনসিংহে নবজাতক মৃত্যুর হার অনেক কম। যে নবজাতকগুলো মারা গেছে তাদের বেশির ভাগ জন্মগত সমস্যার কারণে। যারা বাড়িতে এবং বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিকে ডেলিভারি করান তাদের নবজাতকের এই সমস্যাটা বেশি। হাসপাতালে মৃত্যুর শতকরা ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ বাইরে থেকে আসা।

 

তিনি আরও বলেন, ৫০ শয্যার বেডে ২০০ থেকে ২৩০ নবজাতক প্রতিদিন ভর্তি থাকায় চিকিৎসা দিতেও আমাদের হিমশিম খেতে হয়। তাছাড়া, প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের জনবল কম।

 

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, শয্যার তুলনায় নবজাতক এবং শিশু ওয়ার্ডে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকায় প্রতিনিয়ত সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরেও আমরা কোনো রোগীকে তাড়িয়ে না দিয়ে ভর্তি করে সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।

 

একুশে সংবাদ/হু.ক.প্রতি/পলাশ

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর