সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনিয়মে অভিযোগ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:০১ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেল্থ সার্ভিস জোরদারকরণ প্রকল্পের অধীনে শার্শা উপজেলায় প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদানের জন্য একজন ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগে অনিয়ম, উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন হাঁস-মুরগীর খামারিদের প্রশিক্ষণের জন্য আর্থিক বরাদ্দের দুর্নীতি, মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পরিস্থিতিতে গরু খামারিদের জন্য আর্থিক প্রণোদনায় অনিয়ম ও স্থানীয় জনপ্রতিধির সাথে অসৌজন্য আচরণ, প্রাণিসম্পদ অফিসে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ জমা রেখে স্থানীয় গরু-ছাগল, হাস-মুরগীর চিকিৎসা দেয়া ইত্যাদি অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাসুমা আখতারের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা যায়, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেটেরিনারি পাবলিক হেল্থ সার্ভিস জোরদারকরণ প্রকল্পের অধীনে শার্শা উপজেলায় প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদানের জন্য একজন ফিল্ড ফ্যাসিলিটেটর নিয়োগে গেল বছর উপজেলার লাউতাড়া গ্রামের জোহর আলীর ছেলে হেলাল উদ্দিন আবেদনের অযোগ্য হওয়া সত্বেও ঐ পদে তাকে নিয়োগ দেয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাসুমা আখতার এবং এক মাসের বেতন উত্তোলন করে সে। নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি সাবেক উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল জানতে পারায় নিয়োগটি বাতিল করা হয়।

উপজেলা পরিচালন ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন হাঁস-মুরগীর খামারিদের প্রশিক্ষণের জন্য আর্থিক বরাদ্দের অনিয়ম ও  দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে। উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা  মীর আলিফ রেজা স্বাক্ষরিত এমন একটি প্রশিক্ষণের চুড়ান্ত তালিকায় ৭৫ জন খামারির নাম উল্লেখ আছে যাদের মধ্যে অনেকেই প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন না। উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে ইমানুর রহমান কাজী ও কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের নুরুল আলমের ছেলে শফিউল আলম সিদ্দিক জানান, হাঁস-মুরগীর খামারিদের প্রশিক্ষনে তারা  উপস্থিত ছিলেন না এবং প্রশিক্ষণের কোন ভাতার টাকা পাননি।

কিন্তু তাদের নামে প্রশিক্ষণ ও আনুসঙ্গিক ভাতার টাকা আত্মসাৎ করেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পরিস্থিতিতে গরু খামারিদের জন্য আর্থিক প্রণোদনায় অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। উপজেলার গোড়পাড়া গ্রামের কাশেম আলী বিশ্বাসের ছেলে ফয়সালের গোয়ালে কোন গরু না থাকা সত্বেও তিনি প্রনোদনার ১৫ হাজার টাকা পেয়েছেন। অথচ একই এলাকার গরু খামারি মুনছুর কবিরাজের গোয়ালে সর্বদাই ১১/১২ টা গরু থাকে। কিন্তু প্রণোদনার টাকা তার ভাগ্যে জোটেনি বলে তিনি অভিযোগ করেন। মুনছুর কবিরাজ আরও বলেন, তার গোয়ালে সর্বদাই ১১/১২ টি দুধের গাভী ও বাচ্চা গরু থাকা সত্বেও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে ওষুধের প্রয়োজনে গেলে শুধুমাত্র কৃমির ওষুধ ছাড়া আর কোন ওষুধ এপর্যন্ত পায়নি। 

মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত পরিস্থিতিতে উপজেলার কায়বা ইউনিয়নে গরু খামারিদের জন্য আর্থিক প্রনোদনার তালিকা তৈরীর সময় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ টিংকুর সাথে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা অসৌজন্য আচরন করেন বলে ইউপি চেয়ারম্যান জানান। প্রাণিসম্পদ অফিসে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ জমা রেখে স্থানীয় গরু-ছাগল, হাস-মুরগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল এমন অভিযোগ পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা সচিত্র প্রতিবেদন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করায় স্থানীয় এক সাংবাদিককে তার অফিসে একা পেয়ে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা মানসিকভাবে নাজেহাল করেন বলে অভিযোগ করেন ঐ সাংবাদিক।

এসব বিষয় নিয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাসুমা আখতারের কাছে জানতে চাইলে তিনি সন্তোষজনক কোন উত্তর দিতে পারেননি। উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজার কাছে জানতে চাইলে তিনি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে বলেন। তবে তিনি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাসুমা আখতারের কাছে জানতে চাইবেন বলে জানান। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদুল হক বলেন, আমি কয়েকদিন আগে জেলা অফিসে যোগদান করেছি। আমার কাছে অভিযোগ আসলেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আসবো। #


একুশে সংবাদ/ইয়ানূর/আর

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর