সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

শ্রীমঙ্গলে বাণিজ্যিকভাবে নাগা মরিচ চাষ হচ্ছে, রপ্তানি হচ্ছে বহির্বিশ্বে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১১:১৮ এএম, ৩ জুন, ২০২৩

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে লেবু এবং আনারসের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে এখন নাগা মরিচ ব্যাপকভাবে চাষ করা হয়।  চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলের চাষিরা লেবু, আনারস, কাকরুলসহ অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি ব্যস্ত রয়েছেন নাগামরিচ চাষে। 

 

ফসলটি লাভজনক হওয়ায় ছোট-বড় অনেক চাষি এখন নাগামরিচের চাষ করছেন বাণিজ্যিকভাবে। উপজেলার দিলবরনগর, মোহাজেরাবাদ, বিষামনি, রাধানগর এবং ডলুছড়া এলাকায় ঘুরে দেখা যায় কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন নাগা মরিচ চাষে। চাষিরা জানান, অল্প খরচে এটি একটি লাভজনক ফসল। বিশেষ করে লেবু গাছের নীিচে ও পতিত জায়গায় এ ফসলের চাষ বেশি করা হয়।  শুক্রবার (২ জুন) প্রখর রোদের মধ্যেও দেখা যায় শ্রীমঙ্গল উপজেলার দিলবরনগর এলাকায় বাজারে বিক্রি করার জন্য নাগা মরিচের ছোট বড় করে আলাদা করছেন বাগান মালিক মোঃ সামসুল হক। 

 

চাষীরা জানান, শ্রীমঙ্গলে ব্যাপকভাবে চাষকৃত নাগামরিচের ঝাঁঝ এখন শ্রীঙ্গলের গণ্ডি পেরিয়ে স্থান করে নিয়েছে বহির্বিশ্বে। সুগন্ধি আর ঝাঁঝে ভরপুর নাগামরিচ ঝাল প্রিয় মানুষের প্রিয় খাদ্য ছাড়াও নাগা মরিচের তৈরি আচারের চাহিদা রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ইউরোপে বসবাসকারী বাঙালি ও বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে সাতকরা ও নাগা মরিচের আচার সর্বজনপ্রিয়। প্রতি বছরই শ্রীমঙ্গলের নাগামরিচ রপ্তানি হচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। ফলে শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন অঞ্চলের চাষিরা নাগামরিচ চাষে হয়ে উঠেছেন আগ্রহী।  এটি এমন এক ফসল যার মাঝে রয়েছে প্রচুর ঝাল, স্বাদ ও ঘ্রাণের সমন্বয়। শ্রীমঙ্গল তথা সিলেটে এর আঞ্চলিক নাম নাগামরিচ। ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য স্থানে এটি ‘বোম্বাই মরিচ’ বা ‘ফোটকা মরিচ’ নামে পরিচিত। সাধারণ মরিচ থেকে বহুগুণ বেশি ঝালের কারণে ২০০৭ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস করে এবং নাগামরিচকে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল মরিচ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছিল।

 

 

মোহাজেরাবাদ এলাকার কৃষক আলমগির মিয়া বলেন, নাগা মরিচ সঠিকভাবে চাষ করতে পারলে এর থেকে অনেক লাভ করা যায়। গতবছর এক হাজার নাগা মরিচের চারা চাষ করে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছি। যেখানে খরচ হয়েছিল ৭২ হাজার টাকার মতো। 

 

রাধানগর এলাকার কৃষক শামিম মিয়া বলেন, গতবছর ১৫শ‍‍` নাগা মরিচের চারা লাগিয়ে ছিলাম। যা থেকে ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার মতো মরিচ বিক্রি করেছি। লাভজনক হওয়ায় এবারও ৩ হাজার গাছের চারা লাগিয়েছি। 

 

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলায় আরও অধিক পরিমাণে ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নাগা মরিচ বা বোম্বাই মরিচ চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড়ি টিলাবেষ্টিত এ জেলা নাগা মরিচ চাষের সম্পূর্ণ উপযোগী। বর্তমানে জেলায় যে পরিমাণ নাগা মরিচ চাষ হচ্ছে তাতে পাওয়া যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।

 

একুশে সংবাদ.কম/সম  

কৃষি বিভাগের আরো খবর