সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কালাইয়ে গম চাষে লাভবান কৃষকরা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:৪২ পিএম, ৩০ মার্চ, ২০২৩

জয়পুরহাটের কালাইয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আলুর পাশাপাশি গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধু তাই নয় দামেও খুশি এ উপজেলার কৃষকরা। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১২০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর বেশি। ধানের পরই গম আমাদের দেশে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দানাজাতীয় ফসল। গম আবাদে পানির প্রয়োজন কম। হেক্টর প্রতি বোরো ধানে পানি লাগে ৫৫ থেকে ৬০ একর ইঞ্চি, গম আবাদে লাগে ১৫ একর ইঞ্চি। গমে রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ খুবই কম। ফলে বালাইনাশকের ব্যবহার প্রয়োজন নেই বললেই চলে।

 

জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলায় গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,  চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে গম চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলা গম আবাদ হয়েছে ১২০ হেক্টর জমিতে। বারি ৩০, ৩১, ৩৩, ২৫ ও ২৬ জাতের গম চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া আর সঠিক যত্নে এবার গমের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার গ্রামীণ মাঠগুলোতে আলু রোপণের পাশাপাশি গত বছরের চাইতে এবার অনেক বেশি গম চাষ হয়েছে।গম চাষে আগ্রহ বাড়াতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের প্রণোদনা ও প্রকল্প প্রদর্শনীর আয়োজনও করা হয়েছিল।

 

চাষিরা বলছেন, অন্য ফসল আবাদের চেয়ে তুলনামূলক গম আবাদে খরচ অনেক কম। বীজ, সার, সেচ, কীটনাশক ইত্যাদি থেকে শুরু করে কাটা-মাড়াইয়ে খরচ কম হওয়ায় এ সফল আবাদে অনেক লাভজনক।

 

উদয়পুর ইউনিয়নের পুর গ্রামের ফজলু বলেন, গমের ফলন ও দাম ভাল পাই বলেই আমি আলুর পরিবর্তে গত কয়েক বছর ধরে প্রাই ৩ একর জমিতে গম চাষ করি। গম চাষে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৬ হাজার টাকা। এবার আমার ২ একর ৮০ শতক জমিতে ফলন হয়েছে ১৬০ মন। ইতিমধ্যে মণ প্রতি দুই হাজার টাকা দরে বিক্রি করি। এতে আমি মোটামুটি লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছি।

 

বহুতি গ্রামের কৃষক হাফিজার রহমান বলেন, এ বছর ১ বিঘা জ‌মিতে গমের চাষ করে‌ছি, ফলনও ভালো হয়েছে। বর্তমানে বাজার দরও ভালো।  অন্য ফসলের তুলনায় গম চাষ করে লাভবান হয়েছি।

 

পুনট ইউ‌নিয়নের জালাইগাড়ী গ্রামের আরেক কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, এবার গমের ফলন ও দামে আমরা অনেক খুশি। অন্যান্য ফসল আবাদ করতে শ্রমিক, কীটনাশক, সার ও বীজে যে পরিমাণ খরচ ও ঝামেলা হয় সে তুলনায় গম চাষে খরচ ও ঝামেলা নেই বললেই চলে।

 

আহম্মেদাবাদ ইউ‌নিয়নের হাতিয়র গ্রামের চাষী শাহীন বলেন, খরচ অনেক কম হয় বলে প্রতিবছরের মত এবারও ২০ শতক জ‌মিতে গমের চাষ করে‌ছি, ফলন খুব ভালো হয়েছে। নিজে পরিবার নিয়ে খাওয়ার পাশাপাশি বাজারেও বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায়।

 

কালাই  উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় জানান, এ বছরে ৭৫০ জন কৃষককে গম চাষের জন‌্য প্রণোদনা দেওয়া হয়। এতে ঐ কৃষকদের ২০ কেজি করে গমের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে । গম আবাদে আলু চাষের তুলনায় খরচ অনেক কম হওয়ায় চাষীরা গম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আগামীতে গম চাষ বৃ‌দ্ধির লক্ষে প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

 

একুশে সংবাদ.কম/এ.এ.আ.স/বি.এস

কৃষি বিভাগের আরো খবর