সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

ঈদে কদর বাড়ছে খাগড়াছড়ির হলুদের

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:৪০ পিএম, ১১ মে, ২০২১

আসছে ঈদ। বাড়িতে আয়োজন হবে অনেক খানাপিনার। রান্নায় লাগবে হলুদ। কিন্তু যেনতেন হলুদ দিয়ে তো আর মাংস রান্না করা যায় না! শহরের অভিজাত কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো তাই হলুদ নিতে এখন মুখিয়ে আছেন খাগড়াছড়ির দিকে। 
স্থানীয়রা জানান, খাগড়াছড়িতে উৎপাদিত হচ্ছে উন্নতমানের হলুদ। হলুদের গুণগত মান ভালোর হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে পাহাড়ের হলুদ। তবে উৎপাদিত হলুদের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় লোকসান গুনছেন হলুদ চাষীসহ এ খাতের সংশ্লিষ্টরা। 
খাগড়াছড়িতে উৎপাদিত হলুদের দেশব্যাপী খ্যাতি রয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া ও পাহাড়ি মাটি হলুদ চাষের উপযোগী হওয়ায় খাগড়াছড়িতে প্রতি বছর ব্যাপক পরিমাণ হলুদ উৎপাদিত হয়। 
পাহাড়ি টিলা ভূমি ছাড়াও পাহাড়ের সমতল অংশে প্রতি বছর হলুদ চাষ করেন চাষীরা। ফলন ও জাত ভালো হওয়ায় কমলা সুন্দরী ও বিভিন্ন জাতের হলুদ উৎপাদন করছেন কৃষকরা। হলুদ চাষ লাভজনক। এ কারণেই পাহাড়ের চাষিরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হলুদ চাষে ঝুঁকছেন। সারাদেশে পাহাড়ের হলুদের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিগত বছরগুলোয় পাহাড়ের পতিত জমিতে হলুদ চাষ করে ভাগ্য ফিরিয়েছেন অনেকে।
হলুদ চাষে পাহাড়ের জুড়ি নেই। পাহাড়ের পতিত টিলাভূমিতে উৎপাদিত হলুদের খ্যাতি দেশজুড়ে। পাহাড়ে কৃষিপণ্যের তালিকায় সবার শীর্ষে ‘হলুদ’। এসব কারণেই হলুদ সংগ্রহে ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে পাইকাররা ভিড় করেন খাগড়াছড়ির বিভিন্ন হাট-বাজারে।
অনুকূল আবহাওয়ায় চলতি বছরেও পাহাড়ে হলুদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। হলুদ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলেও ন্যায্য মূল্য নেই। বিগত বছরগুলোয় প্রতিমণ হলুদ ৮-৯ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও চলতি মৌসুমে দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৪-সাড়ে ৪ হাজারে। ফলে দাম না পেয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা।
সম্প্রতি খাগড়াছড়ির গুইমারার বড়পিলাক, সিন্ধুকছড়ি ও হাফছড়ি ঘুরে প্রান্তিক চাষি এবং খাগড়াছড়ির সবচেয়ে বড় হলুদের বাজার গুইমারায় আসা খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
বড়পিলাকের হলুদ চাষি মো. শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘হলুদ চাষে আগের মতো লাভ নেই। চলতি বছর হলুদের ভালো ফলন হলেও উৎপাদন খরচের সাথে বাজার দরের বিস্তর ফারাক। পাহাড়ের হলুদের চাহিদা থাকলেও বিশেষ সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত চাষিরা।’
গুইমারা বাজারে হলুদ বিক্রি করতে আসা আব্দুল হক বলেন, ‘প্রতিমণ হলুদ সর্বোচ্চ ৫শ টাকা দরে বিক্রি করেছি। দাম কম পাওয়ায় লোকসান গুনতে হয়েছে। এ বছর হলুদ বিক্রি করে শ্রমিকের মজুরিও পাওয়া যাবে না।’
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মর্তুজা আলী বলেন, ‘পাহাড়ি টিলাগুলো হলুদ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। দেশের বাজারে স্থানীয় হলুদকে গুরুত্ব দিয়ে হলুদের আমদানি কমানো হলে স্থানীয় কৃষকরা হলুদের ন্যায্য দাম পাবে। পাশাপাশি হলুদ চাষে আগ্রহী হবে।’

মাসুদ রানা জয়

কৃষি বিভাগের আরো খবর