সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

রাঙ্গামাটিতে ‘হানিকুইন, জাত আনারসের বাম্পার ফলন

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:২৯ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

‘হানিকুইন’ জাতের আগাম আনারসে ভরপুর হয়ে উঠেছে রাঙ্গামাটির বাজারগুলো। চারিদিকে রসালো আনারসের গন্ধে মৌ মৌ করছে বাজার এলাকা। তবে আনারসের আগাম ফলন ভালো হওয়ায় এবং ভালো দামে বিক্রি করতে পারায় খুশিতে আত্মহারা চাষীরা। 

বর্তমানে রাঙ্গামাটি শহরের বাজার গুলোতে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে এ ‘হানিকুইন’ জাতের আনারস। এছাড়াও শহরের বাইরে ঢাকা-চট্টগ্রামেও সরবরাহ হচ্ছে।

এদিকে স্থানীয় মানুষ আগাম আনারস খেতে পেয়ে খুবই খুশি। স্থানীয় হাট বাজার থেকে এনে অনেকে ফেরী করে এনে শহরের বিভিন্ন আনাচে কানাচে আনারস বিক্রি করছে।

চাষী ও সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন স্থানে আনারসের প্রচুর উৎপাদন হচ্ছে। সবচেয়ে অধিক উৎপাদন হচ্ছে নানিয়ারচর উপজেলায়। মৌসুমের আগেই হাটবাজারে এসেছে প্রচুর আনারস। বাজারে বড় সাইজের প্রতি জোড়া আনারস বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। তবে কৃষকদের কাছে পাইকাররা কিনছেন মাত্র ৩০-৪০ টাকায়। 

নানিয়ারচরসহ জেলার বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ আনারস জেলা সদরসহ বিভিন্ন বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে রাঙ্গামাটির আনারস যাচ্ছে ঢাকা,শরীতপুর ও চট্টগ্রামসহ বাইরের জেলাতেও। চাষিরা মনে করছেন, করোনার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গতবারের আগাম আনারস চাষিরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে এবার ভালো ফলন হওয়ায় তা পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে তারা আশা করেন।

নানিয়ারচর উপজেলার হাজাছড়া এলাকার বাসিন্দা বাগান চাষি শান্তি বিকাশ চাকমা জানান, এবার তিনি ৩০ হাজার ‘হানিকুইন’ জাতের আনারসের চারা রোপন করেছেন। গতবারের তুলনায় এবার ভালো ফলন হয়েছে এবং ভালো দামে বিক্রিও হচ্ছে। আনারস চাষ করতে যা খরচ হয়েছে তার দ্বিগুণ লাভ করতে পারবেন। বড় সাইজের আনারস বিক্রি করছেন জোড়া ৬০-৭০ টাকা এবং ছোট সাইজের আনারস বিক্রি করছেন ৮-১০ টাকা ধরে।

একই উপজেলার দ্যজ্জাছড়ি এলাকার আরেক চাষি মিলন চাকমা জানান, গতবারের তুলনায় এবার ‘হানিকুইন’ জাতের আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে। করোনায় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় যা ক্ষতি হয়েছে তা এবার পুষিয়ে নিতে পারবেন বলে আশা করেন। তিনি আরো বলেন, এবার তিনি ৫০ হাজার আনারসের চারা রোপন করেছেন।

রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক বলেন, জেলায় বেশিভাগই আনারসের চাষ হয় নানিয়ারচর উজেলায়। তাছাড়া রাঙ্গামাটি সদর ও লংগদু উপজেলায় ও প্রচুর আনারসের চাষাবাদ হচ্ছে। সাধারণত আনারসের উৎপাদন হয় বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ্যে। কিন্তু বর্তমানে যে আগাম আনারসের উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তিতে ‘উদ্ভিদজ্জ গোরর্থ’ নামের হরমোন জাতীয় রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে চাষাবাদ করা হচ্ছে। এই আনারসের জাতের নাম হচ্ছে ‘হানিকুইন’। হানি কুইন পাকানোর জন্য ব্যবহার করা হয় ‘ রাইফেন’ নামের আরেকটি হরমোন। এসব হরমোন দিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে যেসব আনারসের উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো মানুষের দেহে কোন ক্ষতি হবে না।

তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে আনারসের চাষ হয়েছিল ২ হাজার ১শত ৩০ হেক্টর জমিতে। এখনো আনারসের মৌসুম না আসায় আগাম আনারসের চাষ হয়েছে প্রায় ১১ শত হেক্টর জমিতে। তবে মার্চ- এপ্রিল মাসের মধ্যে পুরোদমে আনারস চাষ হবে। এবার আগাম আনারসের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকেরা ভালো লাভবান হচ্ছে। ফলন প্রচুর হওয়ায় আনারস বাজারজাত হয়ে যাচ্ছে জেলার বাইরেও। 

একুশে সংবাদ / প.চ /এস

কৃষি বিভাগের আরো খবর