সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

টিটা ভাসমান সেতুটি এখন পর্যটন কেন্দ্র

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৭:২৫ পিএম, ১০ জানুয়ারি, ২০২১

বাংলাদেশে তৃতীয় ভাসমান সেতু টিটা ভাসমান সেতু ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দসহ ছয়টি ইউনিয়নের ১২ হাজার মানুষের স্বপ্ন পূরনের নাম। মধুমতী নদীর বাওরের উপর নির্মিত সাড়ে ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থ্য ভাসমান সেতুটি গ্রামের মানুষ নিজ উদ্যোগে ও অর্থায়নে তৈরি করেছেন।

৮৫২ টি পাষ্টিকের ড্রামের ওপর ৬০ টন লোহার ফ্রেম দিয়ে তৈরি ভাসমান সেতুটি ২০২০ সালের ২৮ মার্চ উদ্বোধন করা হয়। দুই পারে কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে দুপারে সংযোগ স্থানে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। করোনা মহামারির লকডাইনে কোন আনুষ্ঠানিতা ছাড়াই সকলের জন্য উন্মুক্ত হলেও বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে এই সেতুটি প্রকৃতি প্রেমিদের কাছে এক অন্যতম বিনোদনের জায়গায় পরিনত হয়েছে।

প্রতিদিনই সকাল সন্ধ্যায় পানির স্রোতের সাথে জনস্রোত থাকে সেতুর উপর।এ জেলাসহ আশেপাশের কয়েকটি জেলা থেকে দর্শনার্থীরা দেখতে ভীর করেন সেতুটির ওপর। এটি এখন সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। দর্শনার্থীদের অভিমত বাওরের ধারে বা সেতুর আশেপাশে সরকারি উদ্যোগে যদি বসার স্থান বা ব্যাক্তি উদ্যোগে পিকনিক স্পট বা খাবার হোটেল হলে দর্শনার্থীদের জন্য ভাল হত।


ফরিদপুর শহর থেকে বেড়াতে যাওয়া নতুন দম্পত্তি রাজিব-শিউলি জানান, বাড়ীর সন্নিকটে এতো সুন্দর দৃশ্য যা খুবই মনোমুগ্ধকর। মানুষের মেধা-বুদ্ধির অন্যতম উদাহরন এটি।

বোয়ালমারী উপজেলা থেকে বেড়াতে যাওয়া রাজেন্দ্র কলেজের সম্মান বিভাগের ছাত্র মোঃ পারভেজ ইসলাম চঞ্চল বলেন, আমার কয়েকজন বন্ধুর বাড়ী আলফাডাঙ্গায়। তাদের অনুরোধেই দেখতে আসা ভাসমান সেতু। এখানে এসে দেখি শথাধিক মানুষ এ সেতুর কারুকার্য় উপভোগ করছেন। তিনি বলেন, সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে পানি কম বা বাড়ার সাথে এ ভাসমান সেতুটিু উঠা-নামা করে।

টগরবন্দ ইউনিয়নের টিটা, টিটা-পানাইল, রায়ের পানাইল, শিকড়পুর, ইকরাইল, কুমুরতিয়া এ ছয়টি ইউনিয়নের সেতুর অভাবে মূল ভূখন্ডের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম ঠিল খেয়া পারাপাড়। এই ভাসমান সেতুটি গ্রামের মানুষগুলোর মুখের হাসির নাম। 

টগরবন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইমাম হাসান শিপনের উদ্যোগে ও অসংখ্য মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় ভাসমান সেতু নির্মাণ করা হয়। টগরবন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানান, এ অঞ্চলে একটি কলেজ, দুটি উচ্চবিদ্যালয়, চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ও পোস্ট অফিস রয়েছে। নানা প্রয়োজনে মানুষকে এখানে আসতে হয়। বহু আবেদন-নিবেদন করার পরও ওই স্থানে কোনো সেতু নির্মাণ না হওয়ায় আমরা টিটা খেয়াঘাট এলাকায় চার টন এ ভাসমান সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেই। আজ তাদের স্বপ্নের সেতু দিয়ে তারা পারাপাড় করে খুবই আনন্দিত।

ফরিদপুর ১ (মধুখালী-বোয়ালমারি-আলফাডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য মনজুর হোসেন বুলবুল জানান, টগরবন্ধ ইউনিয়নে কয়েকটি গ্রামের মানুষের আজন্ম দুর্ভোগ থেকে রেহায় পেতে ওই এলাকার ৭০ জন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ৭০ লাখ টাকা দিয়ে তহবিল গঠন করে নির্মাণ করেন এই সেতু।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, মানুষের মনোবল আর ইচ্ছাশক্তি থাকলে অনেক অসম্ভবকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে। তার প্রমাণ দিয়েছেন টগরবন্ধের মানুষ। মধুমতী নদীর ওপর গ্রামবাসীর উদ্যোগে যে ভাসমান সেতু তৈরি হয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে।

একুশে সংবাদ/ কা.দি/এস
 

পর্যটন বিভাগের আরো খবর