সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কালাইয়ে জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১০:৫৮ পিএম, ১৯ এপ্রিল, ২০২২

ঈদ’কে সামনে রেখে জয়পুরহাটের কালাইয়ে বিভিন্ন বিপণি-বিতানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদবাজার। ফুটপাত থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিপণি-বিতানগুলোতে ক্রেতারা কিনছেন তাদের পছন্দের পোশক। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বিপণি-বিতানগুলোতে চলছে উৎসব মুখর পরিবেশ। দীর্ঘ দুই বছর পরে ঈদবাজারে ক্রেতারা পছন্দমতো ও স্বাচ্ছন্দ্যভাবে কেনাকাটা করতে পেরে খুশি, আর বিক্রেতারাও এভাবে বিক্রি করতে পেরে অনেক খুশি। বিক্রেতারা রকমারি ডিজাইন ও বাহারী রঙ্গের দেশী-বিদেশী কাপড়ের পণ্যের পরসা সাজিয়ে বসিয়ে আছেন। বিভিন্ন বয়সীর পণ্যে ঢেলে সাজানো মার্কেটগুলোতে বেড়েছে নানা বয়সীর ক্রেতাদের সমাগম। বিপণী বিতানগুলোতে এখন দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। চলছে বিক্রেতাদের নানা হাকডাক। তবে, ক্রেতাদের অভিযোগ আগের চেয়ে বেড়েছে সকল কাপড়ের মূল্য। এদিকে ঈদের কেনাকাটা নির্বিঘ্নকরতে এবং ক্রেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দিতে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে কালাই থানার পুলিশ। 

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ যতই ঘুনিয়ে আসছে উপজেলার বিভিন্ন ফুটপাত ও বিপণি-বিতানগুলোতে ততই ভিড় বাড়ছে। ক্রেতারা নিজেদের পছন্দনীয় নিত্য-নতুন ডিজাইনের পোশাক কিনতে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ছুটছেন। তীব্র গরম ও দাবদাহ উপেক্ষা করে ক্রেতাদেরকে সকালে ও বিকালে ঈদের কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। অনেকে তীব্র গরমের কারণে সন্ধ্যার পর দোকানে এসে গভীর রাত পর্যন্ত কেনাকাটা করছেন। উপজেলার বিভিন্ন মার্কেটের দোকানীরা পাল্লা দিয়ে ক্রেতাদের কাছে পোশাক বিক্রি করছেন। উপজেলার বিপনিবীতান দোকানগুলোতে মেয়েদের সিল্ক, বেনারসি, টাঙ্গাইল প্রিট, জামদানি ও কাতান শাড়িসহ থ্রি-পিস, লং-থ্রিপিস, সালোয়ার কামিজ, লেহেঙ্গা, ছিট-কাপড় এবং ছেলেদের পাঞ্জাবী, পাজামা, ফতুয়াসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টি-শার্ট, জিন্স-প্যান্ট, গ্যাবাডিং-প্যান্ট, হাফ শাট ও গ্যাঞ্জি বিক্রি করছেন। ডিজাইন ও রকম ভেদে কাপড়গুলোর বিক্রি হচ্ছে  ১হাজার  থেকে ১১হাজার টাকা পর্যন্ত। এবারই এই ঈদে দোকানীরা নতুন সব ডিজাইন বাজারে এনেছেন ইন্ডিয়ান সাহারা জর্জেট, ডাইমন্ড, বিনয়, কাঁচাবাদাম, লাচ্ছা, বিবেগ, লংস্কার্ট, পাখি-লেহেঙ্গা, ঐশ্বরিয়ার ময়ূরী-ড্রেস আর পাকিস্তানি বাড়িস, খুবসুরত, পাকিস্তানি-কটি, শাহাজাদী, অলগাঞ্জা ইত্যাদি। ঐসব ডিজাইন ও রকম ভেদে কাপড়গুলোর বিক্রি হচ্ছে ২হাজার থেকে সাড়ে ৭হাজার টাকা পর্যন্ত। এই ঈদে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের আকর্ষণীয় জিনিসপত্র দোকানের সামনে সাজিয়ে রেখেছেন। আবার টেইলার্সের দোকানেও প্রচুর ভিড় লক্ষ করা গেছে। এক সপ্তাহ আগেই থেকে কাপড় বানানোর অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন টেইলার্স মালিকরা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিকেল ও সুন্ধা বেলায় দোকানগুলোতে পছন্দের প্যান্ট, শার্ট, থ্রি-পিস, জুতা-স্যান্ডেলের ও কসমেটিক্স কেনার জন্য ভিড় জমাচ্ছে। অনেক ক্রেতারা ঈদের জন্য মাতার টুপি এবং আতর কিনছেন। এ ঈদবাজারে কেনাকাটা শহরের তুলোনায় গ্রামের মানুষ দু-সপ্তাহ আগে থেকে কেনা-কাটা শুরু করেছেন।

উপজেলার আহলে হাদীস মসজিদ মার্কেটে ঈদবাজার করতে আসা নাছরিন সুলতানা নিলা বলেন, গত দুই বছর পুর্বে ঈদ উদযাপন করতে পারিনি। এবারের ঈদকে আর মিস করতে চাই না। সেই জন্য রোজার মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ শপিং করতে এসেছি। চলতি সপ্তাহে নিজের ও আত্মীয়স্বজনের জন্য শপিং শেষ করতে চাই। কারণ শেষদিকে গিয়ে অনেক ভিড় হয়।
সেখানে আরেক ক্রেতা হামিদুল ইসলাম বলেন, অন্যবছরের তুলনায় এ বছর ঈদেও সকল জিনিসপত্রের দাম বেশি। কিন্তু কি আর করার আছে..,ঈদে কিছু কেনাকাটা করা দরকার ছিল, তাই মার্কেটে এসেছি। এখন কিছু কাপড় কিনব আর ঈদের শেষমুহুর্তে আরও কিছু কাপড় কিনব।

কালাই সদরের রুহুল বস্ত্র বিপনীর বিক্রয়কর্মী রবিউল ও রাজু জানান, ক্রেতারা নিত্য-নতুন ডিজাইনের পোশাক কিনছেন। এ দোকানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নিত্য-নতুন ডিজাইনের মেয়েদের সিল্ক, বেনারসি, টাঙ্গাইল প্রিট, জামদানি ও কাতান শাড়িসহ থ্রি-পিস, লং-থ্রিপিস, সালোয়ার কামিজ, লেহেঙ্গা, ছিট-কাপড় গ্যাবাডিং-প্যান্ট, হাফ শাট, ফতুয়া ও পাঞ্জাবী  বিক্রি হচ্ছে। ডিজাইন ও রকম ভেদে কাপড়গুলোর ৬শ  থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে ঈদের শেষ মুহুর্তে বেচাকিনা অনেক ভালো হয়।

উপজেলার তালুকদার ম্যানশনের ঢাকা ফ্যশনের স্বত্বাধীকারী আব্দুল রউফ বলেন, করোনার কারণে দুই বছর ঈদে কেনাবেচা তেমন হয়নি। কিন্তু এবার রমজানের মাস শুরু থেকেই বিক্রি অনেক বেড়েছে। দেশীয় চেয়ে বেশির ভাগ ইন্ডিয়ান ব্রাউন ও পাকিস্তানি থ্রি-পিচ এর চাহিদা অনেক বেশি। আশা করছি, এই ঈদে বেচাবিক্রি অনেক ভালো হবে।

এদিকে উপজেলার তালুকদার শপিং মার্কেটের সুমন কসমেটিক্স স্বত্বাধীকারী আতিকুর রহমান সুমন বলেন, সারাবছর কম-বেশি কসমেটিক্স বিক্রি হয়, তবে এই ঈদকে কেন্দ্র করে বেশির ভাগ তরুণ-তরুণী ও মধ্যম বয়সী মহিলা ক্রেতারা আসছেন কসমেটিক্স কিনতে। সব মিলিয়ে বেচাকেনা দিন দিন বাড়ছে। ক্রেতারা সাধ্য অনুযায়ী যেযার মত কসমেটিক্স কেনাকাটা করছেন ।

আইনশ্ঙ্খৃলা বিষয়ে কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, আমরা জনগনের জান-মাল রক্ষার জন্য সব সময়  সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার বিভিন্ন বিপনিবীতান দোকানগুলোতে এবং গুরুত্বপুর্ন স্থানসহ বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটে কালাই থানা পুলিশ সব সময় টহল দিচ্ছে। 
 

 

একুশে সংবাদ/এসএম

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের আরো খবর