সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

দেশে নির্মাণ হচ্ছে আরেকটি গভীর সমুদ্রবন্দর

প্রকাশিত: ১০:৫১ এএম, ১৭ নভেম্বর, ২০২০

দেশে আরেকটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে এই বন্দর নির্মাণের চলছে। মোট ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হওয়া সরকারে এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থের জোগান দেবে জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা, নিজস্ব তহবিল থেকে চার হাজার কোটি টাকা জোগান দেবে সরকার এবং তিন হাজার কোটি টাকা দেবে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত কয়েক বছর ধরে সরকার গভীর সমুদ্রে একটি বন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা করে আসছিল। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মহেশখালীর সোনাদিয়ায় একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের লক্ষ্যে প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়। সেসময় ২৫ বছরে ৫৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দরের পর্যায়ক্রমিক উন্নয়নের পরিকল্পনায় বলা হয়েছিল- সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর হলে ২০২০ সাল নাগাদ সেখানে চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় ৭৪ গুণ বেশি কনটেইনার ওঠানামা করতে পারবে। এলক্ষ্যে ২০১২ সালের ২ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ আইন’ এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু ২০১৪ সলের অগাস্টে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রস্তাবিত এলাকার মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি এলাকায় ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য একটি জেটি নির্মাণ করতে গিয়েই সমীক্ষায় ধরা পড়ে যে, এখানেই গভীর সমুদ্র বন্দর করার উপেযোগী। এ থেকেই মাথায় আসে গ্রহণ করা হয় প্রকল্প পরিকল্পনা। চলতি বছরের ১০ মার্চ মাতারবাড়িতে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প একনেকের অনুমোদন পায়।

জানা গেছে, মাতারবাড়ি বন্দর নির্মাণ কাজ শতভাগ শেষ হলে চীন থেকে সরাসরি বড় কনটেইনার জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা একটি জাহাজে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮৭৮টি কনটেইনার বহন করতে সক্ষম হলেও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রে ভিড়তে পারবে এর চার গুণ কন্টেইনারবাহী বিশাল জাহাজ। বন্দর সুবিধা অনুযায়ী ১৪ থেকে ১৫ হাজার একক কনটেইনারবাহী জাহাজ ভেড়ানো যাবে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ বাস্তবায়ন করছে। এর ডিজাইন ও লে-আউটসহ সব নকশা জাপানি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অধীনে সংযোগ সড়কসহ গভীর সমুদ্র বন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।

উল্লেখ্য, সীমিত জনবল এবং যন্ত্রপাতি দিয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে বছরে ৩০ লাখের বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করতে হচ্ছে। এসময়ে দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড প্রসারিত হয়েছে। এ অবস্থায় ভবিষ্যতে জাহাজ ও কন্টেইনারের সংখ্যাও বাড়লে চট্টগ্রাম বন্দরের পক্ষে সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে। বিধায় একটি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়ে। আর গভীর সমুদ্র বন্দরের জন্য প্রথম পছন্দের তালিকায় ছিলো মাতারবাড়ির নাম।

একুশে সংবাদ/রা/এআরএম

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের আরো খবর