সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সম্মেলন এখন সময়ের দাবি

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৯:১৩ পিএম, ১৬ মে, ২০২৩

বাংলাদেশের  ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের  নাম হলো আওয়ামী লীগ আর যার হাত ধরে এই সংগঠনটির এতটুকু খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই এই সংগঠনটি বিভিন্ন কারণে বাঙালি জাতির কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু ও নিজে এই দেশে এসে দেখে গেছেন তার সংগঠন এবং নেতা ও কর্মীদের। বঙ্গবন্ধুর  কন্যা ও তার থেকে ব্যতিক্রম নন।

 

যদিও তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও নিজ দল আওয়ামী লীগ এর সভানেত্রী তবুও তিনি প্রায় নিয়মিত এই দেশে রাস্ট্রীয় এবং ব্যক্তিগত সফরে আসেন। এই দেশ হলো বঙ্গবন্ধু কন্যাদের দ্বিতীয় আবাসভুমি (সেকেন্ড হোম)। দেশ স্বাধীনের পর পাকিস্তান থেকে প্রথমে লন্ডন হয়ে বঙ্গবন্ধুকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। এতে বৃটিশ বাঙ্গালীদের বিশেষ অবদান ছিল। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের প্রথম বাজেটে ও এদেশের মানুষ এখান থেকে টাকা পয়সা দেশে প্রেরণ করে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।

 

ওয়ান ইলেভেন ও যখন শেখ হাসিনার দেশে প্রবেশ করার ব্যাপারে একটা নষ্ট পরকল্পনা করেছিল তৎকালীন সরকার তখন ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের শক্ত ভূমিকার কারণে কিছুই করতে পারেনি সেই সরকার। এছাড়া বিএনপির কর্ণধর তারেক জিয়ার বসবাস এই দেশে তাই বিভিন্ন কারণে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ এর গুরুত্ব অনেক বেশি।

 

কিন্তু ২০১১ সালের ২৯ জানুয়ারি লন্ডনের একটি হোটেলে এই সংগঠনটির সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই সম্মেলনে বর্ষীয়ান নেতা সুলতান শরীফ সভাপতি ও সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুককে সাধারণ সম্পাদক করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট একটি  কমিটি ঘোষণা করা হয়। এদিকে করোনা মহামারীতে উক্ত কমিটির ৫ জন সহ-সভাপতি সহ বেশ কয়েকজন নেতা না ফেরার দেশে চলে যান। তাদের সেই শূন্য পদগুলি নিয়ে চলছে বর্তমান আওয়ামী লীগ। কমিটির সভাপতির বৃদ্ধ বয়সের অসুস্হতার কারণে প্রায়ই দলীয় কার্যক্রমে বর্তমানে অংশ নিতে পারেন না।

 

জানা যায়, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের অধীনে প্রায় ৬২ টি শাখা কমিটি রয়েছে। কিন্তু দলের পক্ষে কাজের কাজ তেমন চোখে পড়ার মত নয় কিছু দিবস পালন ব্যতীত। বর্তমানে সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে সরকারকে ঘায়েল করার জন্য যুদ্ধাপরাধী স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি অপকৌশল হিসেবে সাইবারযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে মূলত এই কমিটিগুলির প্রাই বাহিরে থেকেই যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে লেখক সুজাত মনসুর, তৌহিদ ফিতরাত হোসেন, মকিস মনসুর এবং জুয়েল রাজ, দলের পক্ষে সামাজিক এবং প্রিন্ট মাধ্যম সরগরম করে রাখছেন।

 

বাংলাদেশকে নিয়ে আল জাজিরার করা একটি ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট প্রকাশের ষড়যন্ত্রে যুক্তরাজ্য থেকে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের মুখোশ উম্মেচন করেন তওহীদ ফিতরাত হোসেন যিনি ছিলেন সাবেক জিএস সিলেট এমসি কলেজ ছাত্র সংসদের। এবং সবাই জানে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এই রিপোর্টকে প্রত্যাখ্যান করা হয় মিথ্যা ও বানোয়াট বলে।

 

এদিকে লেখক ড.আজিজুল আম্বিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এসব বিষয় নিয়ে নিয়মিত কলাম লিখছেন বাংলাদেশ ও বৃটেনের স্বনামধন্য পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন, যায়যায়দিন, মানবকন্ঠ, জনমত সহ প্রথম সারির অনেক পত্রিকাগুলিতে। কিন্তু দল তাদের মূল্যায়ন করার কথা থাকলেও উনারা এর বাহিরেই আছেন। নতুন কমিটি গঠনে যদি স্বচ্ছতা না থাকে তবে হয়তো উনারা ও বাদ পড়ার আশংকা আছে।

 

যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী যিনি কাজ করেন দলের জন্য দিনরাত। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে দলীয় নমিনেশন পাওয়ায় তিনি ও বর্তমানে দেশে রয়েছেন। সিলেট-৩ সংসদীয় আসনের এমপি মাহমুদুস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যর পর উপনির্বাচনে মনোনয়ন পান আরেক যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব এবং তিনি নৌকা মার্কায় বিজয় লাভ করে বর্তমানে বাংলাদেশে কাজ করছেন তার নির্বাচনী এলাকাতে। এই কমিটির কেউ কেউ আবার বাংলাদেশের স্হানীয় সরকার ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার লক্ষ্য নিয়ে ঘন ঘন বাংলাদেশে যাওয়া আসার মধ্যে রয়েছেন।

 

বিভিন্ন সময়ে গুঞ্জন শুনা যায় বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী যখন এদেশে আসেন তখন নতুন কমিটি দেয়ার জন্য তার আসা কিংবা এবার নতুন কমিটি করে দিয়ে যাবেন। কিন্তু কেবল শুনাই যায় কমিটি আর হয়না। এ নিয়ে অনেক হতাশায় রয়েছেন কিছু ইয়াং নেতারা, যারা যুক্তারাজ্য আওয়ামী লীগ এর ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি হতে চান। তাদের স্বপ্ন যেন শেষ হচ্চেনা বা কখন শেষ হবে তারা নিজেরাই জানেন না। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়াতে যারা দলের দুঃসময়ে বিরোধী দলে থেকে কাজ করেছিলেন তাদের অনেকে দলে ঠাঁই না পেয়ে ছিটকে পড়ছেন এ রকম অবস্তা বিরাজ করছে। অনেক নেতাকর্মীর অভিযোগ আছে উনারা দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করেন নিয়মিত। কিন্তু নেত্রী যখন এদেশে আসেন তখন কিন্তু তারা নেত্রীর সাথে সাক্ষাতের ও সুযোগ পান না । সুযোগ লাভ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের চামচারা এবং তাদের গ্রুপের কিছু লোক। আর নিজেদের ক্ষমতার বাহাদুরি দেখানোর জন্য নেত্রীর কাছে থেকে কিছু বলার মত লোকদেরকে ও উনারা সেখানে যেতে দিতে চান না।

 

এ ছাড়া নেত্রীর সাথে যে একদল অফিসার আসেন দেশ থেকে তাদের সাথে কথা বলে গেলেও অনেক সময় উনারা হোটেলের গ্যালারিতে বসিয়ে রাখেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কাজের কাজ কিছু হয়না। এতে নেত্রীর সাথে দেখা না হওয়াতে নেতা কর্মীদের মনে হতাশার সৃস্টি হচ্ছে। নেত্রী জানতে পারছেন না এখানকার সঠিক অবস্হা।

 

সম্মেলন হলে নতুন সভাপতি হিসেবে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে কর্মীদের কাছ থেকে তারা হলেন, বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন, তিনি অনেক সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং দলের প্রতি তার দান কোন অংশে কম নয়। এছাড়া অধ্যাপক আবুল হাশেম, সৈয়দ মজম্মিল আলী, সুবক্তা হরমুজ আলী, এরা সবাই বর্তমান সহসভাপতি। এছাড়া বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক ও আছেন এই পদের প্রার্থী এবং কাজ করে যাচ্ছেন দলের জন্য। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে এতদিন ছিলেন বর্তমান কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি একজন প্রভাবশালী ও কর্মীবান্ধব নেতা। তাই তিনি অনেক শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন কিন্তু তিনি বর্তমানে সিসিক মেয়র পার্থী তাই এই পদে থাকার সম্ভাবনা নেই । তাই তার বিকল্প নেতৃত্ব তৈরি করতে  কি চিন্তা করছেন সভানেত্রী সেদিকে সবাই চেয়ে আছে।

 

এছাড়া যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, মারুফ আহমেদ চৌধুরী, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং যিনি সংগঠনের জন্য খুব বেশি সময় দেন বলে দলের নেতা কর্মীরা আহাদ ভাই বলে একনামেই চিনে তিনি হলেন আবদুল আহাদ চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা শাহ্‌ শামীম আহমেদ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আ স ম মিসবাহ তিনি ও একজন শক্তিশালী প্রার্থী।

 

পরিশেষে বলতে চাই, শেখ হাসিনা নিজেই যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কমিটি উপহার দেন এবং শেখ রেহানা আপা ও এদেশে থাকেন তাই আগামী কমিটি তাদের তত্ত্বাবধানে অনেক সুন্দর হবে সবার প্রত্যাশা। তবুও বলব অনেক সময় উনাদের কাছে সবার খবর পৌঁছে না। তাই যদি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কমিটির জন্য প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্তের আহবান করেন তবে হয়তো বেরিয়ে আসবে অনেক নতুন মুখ ও নীরবে কাজ করা মানুষগুলির নাম। আর যথার্থ ভাবে গঠন হবে সবার প্রত্যাশিত নতুন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের কমিটি।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

মতামত বিভাগের আরো খবর