সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

তেল নিয়ে সোজাসাপ্টা তেলকথা !

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:২৬ পিএম, ৭ আগস্ট, ২০২২
ছবি: সংগৃহীত

নজরুল ইসলাম- জ্বালানি তেলের দাম কম রাখা এই জন্য দরকার যে, ইহার দাম বাড়িলে বাঁশ বা ছন দিয়া তৈরি ঝাড়ুর দামও বাড়িয়া যায়। 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) জ্বালানি তেলের দাম নতুনভাবে বৃদ্ধি করিয়া যে সংকটময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করিয়াছে এবং মূল্য বৃদ্ধির যে যুক্তিগুলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হইয়াছে তাহা পুরো মাত্রায় সঠিক মানিয়া-ই বলছি।

তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসাবে যাহা উল্লেখ করা হইয়াছে তাহার মূল কথা হইলোঃ-
১.আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি।
২. রাশিয়া -ইউক্রেন যুদ্ধ।
৩.পাচার রোধ।
৪.ভর্তুকি বা লোকসানসহ ইত্যাদি।

এতোগুলো যুক্তি উপস্থাপন করিবার পরিকল্পনা করিতে যাইয়া যে সময়টুকু ব্যয় হইয়াছে তাহার চাইতে এ সংকট সমাধানের জন্য কাজ করিলে সম্ভব ছিলো উত্তরণ করিবার। জ্বালানির  যাবতীয় পরিসংখ্যান (উৎপাদনকারী দেশ, উৎপাদন,শোধনাগার, আমদানি-রপ্তানি, পরিমাণ,পাইপলাইন, নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি) টানিয়া পাঠকদের বোধহীন করা সমীচীন হইবেনা বলিয়াই সোজাসাপ্টা বিবরণ। 

১.আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধিঃ- বাড়তেই পারে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম। তাই বলে এই সুর দিয়েই তো, অন্তঃত বাংলাদেশে আমরা বাড়াতে পারিনা। চীন,ভারত ও মালয়েশিয়ানদের মাথাপিছু আয় আর বাংলাদেশীদের মাথাপিছু আয় সমান নয়।আমরা মলা-ঢেলা মাছ ও ভাতে আকৃষ্ট প্রচণ্ড রোদ-বৃষ্টিতে বাঙ্গালী ও বাংলাদেশী। আয় বা ক্রয়ক্ষমতা খুব বেশী সীমিত বলেই এতো আর্তচিৎকার। এ খাতে  সংশ্লিষ্টদের আগে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে, আর যাই হোক তেলের দাম বৃদ্ধি করা যাবে না।

২.রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধঃ যুদ্ধ হলো অপ্রত্যাশিত ঘটন। যেহেতু শরু হয়েই গেছে এবং পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বা সীমিতকরণ করেছে এ সুযোগটাও কাজে লাগানো যেতো বা যায়। যেমনটি ভারত ও চীন করেছে, অন্য যে কোনো বছরের তুলনায় দেশ দুটি রাশিয়া থেকে বেশী তেল আমদানি করেছে এবং তা কম দামে। শোধন ও অশোধনের ব্যাপারটাও সামান্য।

৩.পাচার রোধঃ বলা হচ্ছে প্বার্শবর্তী দেশ ভারতে জ্বালানি তেলের দাম বাংলাদেশের তুলনায় বেশী থাকায় তেল পাচার করছে পাচারচক্ররা। যদি এমনটি হয়ে-ই থাকে তবে এ দায় বা বোজা সাধারণ জনগণের উপর কেনো? বর্ডার গার্ডদের শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব এবং কঠিন নির্দেশনা প্রদান করুন। সীমান্তে বসবাসকারীদের নিয়ে মাঝে মাঝে আলোচনায় বসুন। পাচারকারীদের ধরতে না পারলেও আলোচনার মাধ্যমে তাদের নিরুৎসাহিত করুন। 

৪.ভর্তুকি বা লোকসানঃ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই এই ছয় মাসে জ্বালানিখাতে লোকসান হয়েছে ৮হাজার ১৪কোটি টাকা। যদি এমনটি হয়েই থাকে তবে তা দেশের জন্যই হয়েছে এবং সরকারকে সাধুবাদ জানাই। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের ক্ষেত্রে সরকারের লোকসান যদি হয়েই যায় বা দিতেই হয় তবে প্রয়োজনে আরও দিতে হবে। কারণ, আগেই বলেছি এটার দাম বাড়লে বাঁশের বা ছনের তৈরি ঝাড়ুরও দাম বেড়ে যায়। রিজার্ভ কম থাকলে লোকসানের টাকা দেশে সকল সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছ থেকে কোন কোন প্রক্রিয়ার আদায় করা যায় সেদিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার। দেশ ডিজিটাল করে সরকার যে সুবিধা দিয়েছেন সে ডিজিটাল বা অনলাইন ব্যবস্থাতেই অনেক উপায়ে তা সম্ভব। সারকথা, জ্বালানি তেলের দাম যাতে না বাড়ে সে লক্ষ্যে সরকারকে যেকোন পথ অবলম্বন করা উচিৎ।  
 

 

 

একুশে সংবাদ/এস.আই

মতামত বিভাগের আরো খবর