সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

"বাংলাদেশে সাংবাদিকতার পরিবেশ নেই"

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:২৪ এএম, ৩ মে, ২০২১


স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বাংলাদেশে কোন সংবাদ মাধ্যম নেই। সাংবাদিকতা করার কোন পরিবেশ নেই। তাই আমি লজ্জিত।

মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে বাংলাদেশে সংবাদ মাধ্যম তৈরিতে, সাংবাদিকতার পরিবেশ তৈরীতে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানোর অঙ্গিকার করছি।

চটি গল্প লিখব না, গুজব ছড়াব না। ভাইরালিজম নয়, জার্নালিজমই হোক সংবাদ কর্মীদের কাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। যখন এই পেশায় পা বাড়িয়েছি তখন থেকেই এই শপথ পালন করে এসেছি।

চাকরি ছাড়তেও বাধ্য হয়েছি বহুবার। শুধু খবরের পাতায় অশ্লীল গল্প আর গুজব না লেখার কারণে। ৭ বছরে সয়ে গেছে এসব। তাই আর ভয় পাই না। তথ্য সন্ত্রাসীদের হাতে গণমাধ্যম নামক তরীর বৈঠা ছেড়ে দেব না। তথ্য সন্ত্রাসীদের সহযোগী বা সহকর্মী হব না।

যারা তথ্য সন্ত্রাসীদের অংশ হয়েও গর্ব করছেন তাদের জন্য ঘৃণা। মানুষ অপরাধের জন্য অনুতপ্ত হয়, আপনারা হচ্ছেন গর্বিত।

রক্তাক্ত প্রান্তর নাটকের ইব্রাহিম কার্দির কথা বেশ মনে পড়ছে। গণমাধ্যমের কিছু কর্মী আছেন যারা চান সত্য মিথ্যার লড়াইয়ে সাংবাদিকদের বিজয় হোক। সত্যের জয় হোক।

কিন্তু নিজে দৈনিক মারাসারা, আমাদের গুজব, চটি টিভির প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা সরূপ তাদের এজেন্ডা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন করবেন। কারণ কার্দির মত দুর্দিনে পাশে পেয়েছেন বলেই।

মুনির চৌধুরীর লেখা এই নাটকে মুসলিম শিবিরের যোদ্ধা জোহরা বেগম। তার স্বামী মারাঠা শিবিরের সেনাপতি ইব্রাহিম কার্দি। ইব্রাহিম কার্দি দক্ষ যোদ্ধা হয়েও যখন স্বজাতীয় শিবিরে চাকরি পাচ্ছিলেন না, তখন প্রতিপক্ষ থেকেই তাকে চাকরিতে নেয়া হয়।

যখন কার্দিকে নিজ শিবিরে ফিরে যেতে বলা হয় তখন তিনিতা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, 'আমি চাই মুসলিমদের জয় হোক, কিন্তু লড়াইয়ের মাঠে আমি এক বিন্দু ছাড় দেব না।'

জোহরা বেগমকে গভীরভাবে ভালোবাসলেও আদর্শগত কারণেই ফিরে আসতে নারাজ তিনি। মারাঠাদের বিপদের দিনে তাঁদের ফেলে আসতে চাননি কার্দি। কিন্তু সাংবাদিকতায় ইব্রাহিম কার্দির সংখ্যা বেড়ে যাওয়াটা গণতন্ত্রের জন্য অনেক বড় বিপদ।

আপনি হয়তো নিজেকে ইব্রাহিম কার্দি মনে করেন। তাহলে জেনে রাখুন, তথ্য যুদ্ধের এই মাঠে আপনাকে সৎ নিষ্ঠাবান জনগণ ঘায়েল করবেই। ভাই-বন্ধু হিসেবে আপনাদের জন্য করুণা থাকবে। তবে, মন্নু বেগরা কোনভাবেই ছাড় দেবেন না।

আমি আশাবাদি মানুষ। তাই জোহরা বেগম বা মন্নু বেগদের সত্য আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে পাশে পাব। তবে এটা মনে রাখা জরুরি, এই লড়াইয়ে কেউ কারো প্রতিপক্ষ নই। সবাই কলম সৈনিক, সত্যের জয় গান গাই আমরা সকলে।

তবে গুটি কয়েক তথ্য সন্ত্রাসীও যে আছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এই সন্ত্রাসীরাই বিষ ফোঁড়ের মতো। আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণ রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। দুর্বল গণতন্ত্র আর দুর্নীতি গ্রস্থ রাষ্ট্রই কিছু সংবাদ কর্মীকে ইব্রাহিম কার্দি বানিয়েছে৷

লেখক: তোফাজ্জল হোসেন, গণমাধ্যমকর্মী। 

একুশে সংবাদ/টি/আই

মতামত বিভাগের আরো খবর