সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

অর্জিত স্বাধীনতা সুরক্ষাই বিজয়ের প্রাণ

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৮:৪৬ এএম, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০

 

আমরা জানি স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা করা সবচেয়ে কঠিন। যে কোনো বড় বিষয় অর্জন করা কঠিন কাজ। কিন্তু অর্জিত বিষয়টিকে রক্ষা করা তার চেয়েও কঠিন, গুরুত্বপূর্ণ ও দরকারি কাজ। এই নীতিটি যদি আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গে, রাষ্ট্রের অর্জিত স্বাধীনতা ও স্বাধীন অস্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় তাহলে সেটি আরও জোরালোভাবে ধরা পড়ে। অর্জিত স্বাধীনতা ও বিজয়ের পঞ্চাশ বছর পূর্তিকালে অর্জনকে রক্ষা করার বিষয়টি মিলিয়ে দেখা এবং এর প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি ১৯৭১ সালে নয় মাসের একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন অস্তিত্ব লাভ করেছে। এর আগে এ অঞ্চলটি ছিল পাকিস্তানের অংশ-পূর্ব পাকিস্তান। তারও আগে (১৯৪৭ সনের আগে) এ অঞ্চলটি পূর্ববঙ্গ হিসেবে খ্যাত ছিল এবং বৃহত্তর বৃটিশ উপনিবেশ-পাক-ভারত উপমহাদেশের অংশ ছিল। এজন্যই বলা হয়, এ অঞ্চলটি দু’ দুবার স্বাধীন হয়েছে। একবার বৃটিশ উপনিবেশ থেকে, আরেকবার যুক্ত পাকিস্তানের কাঠামো থেকে। শেষোক্ত অর্জনকেই এখন সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে বলা হয় স্বাধীনতা অর্জন। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় হিসেবেও এ পর্বটিকেই বিবেচনা করা হয়।

সে বিজয় বা অর্জনের পর এরই মধ্যে প্রায় অর্ধশত বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু এই অর্ধশত বছরে আমাদের স্বাধীনতার স্বরূপ ও মূল অবয়ব কতোট অক্ষুণ্ণ আছে কিংবা স্বাধীনতার সাফল্য কতটুকু বজায় রয়েছে-তার একটি পরিমাপ করা এবং রাষ্ট্রের স্বাধীন অস্তিত্বকে শংকামুক্ত করতে আরও সতর্ক হওয়ার বিষয়টি নানা কারণে এখন বেশি গুরুত্ববহ হয়ে উঠেছে। কারণ, অর্জিত বিষয় রক্ষা করতে না পারলে অর্জনের কোনো মূল্য থাকে না।

বাংলাদেশ ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর অভ্যুদয় ঘটা একটি রাষ্ট্রের নাম। এ রাষ্ট্রটি সেদিন থেকেই স্বাধীন। সংবিধান, নীতি-ধারা ও চর্চায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অটুটই আছে। কিন্তু স্বাধীন রাষ্ট্র-সত্ত্বার স্বকীয়তা ও সার্বভৌমত্বের যেসব সূচক ও উপাদান থাকে তার সবকটিই এখনও অক্ষুণ্ণ আছে কি না-এ প্রশ্নটি আজ বেশির ভাগ নাগরিকের মনে উঁকি দিচ্ছে।

কষ্টার্জিত  স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিকালে দেশপ্রেমে অনড় থেকে আমাদেরকে এই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। স্বাধীনতার এত বছর পরও বিদ্যমান অনেক প্রতিবন্ধকতা মনে বিষন্নতার জন্ম দেয়। স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও আমরা অনেক সময় সত্য প্রকাশ করতে অনীহাবোধ করি। আমরা আমাদের দেশ থেকে দুর্নীতিকে আজও বিদায় দিতে পারছি না। এর জন্য সব অশান্তি সৃষ্টিকারী মহলকে আইনের মুখোমুখি করতে হবে। দেশ ও রাষ্ট্রের স্বার্থ লঙ্ঘনকারীদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়েও আমরা স্বাধীনতাকে সঠিকরূপে মূল্যায়ন করতে পারছি না। এর থেকে বড় লজ্জার আর কি আছে।

শুধুমাত্র নিজের নয়, দেশের কল্যাণে ব্রত হয়ে আমাদের সত্যের পথে লড়তে হবে আজীবন এবং সমুন্নত রাখতে হবে লাখো শহিদের প্রাণের বিনিময়ে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা।

মোহাম্মদ ইয়াছিন ইসলাম
শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় 

একুশে সংবাদ /টি/আই

 

মতামত বিভাগের আরো খবর