সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

আজকের তরুণরাই উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে নেতৃত্ব দেবে: জয়

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৫:২৫ পিএম, ১২ নভেম্বর, ২০২২

ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ পে‌য়ে‌ছেন দেশের ১০ ব্যক্তি ও সংগঠন।

 

শনিবার (১২ নভেম্বর) বি‌কে‌লে সাভারের শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে ‘তোমার জয়ে বাংলার জয়’ স্লোগানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুল দেন সিআরআই এর চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রীর আই‌সি‌টি উপ‌দেষ্টা সজীব ওয়াজেদ।

 

সজীব ওয়া‌জেদ ব‌লেন, মেধা ও পরিশ্রমের সমন্বয়ে আজকের তরুণরাই ভবিষ‌্যতের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে নেতৃত্ব দেবেন, ‌দেশ‌কে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আত্মবিশ্বাস, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনা থাকলে নিজের দেশের জন্য সবকিছু করা সম্ভব।এবছর দশটি সংগঠনকে জয় বাংলা ইউথ অ্যাওয়ার্ড ও দুজনকে আজীবন সম্মাননা জানিয়েছে ইয়াং বাংলা।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব‌্য রা‌খেন সিআরআই এর ট্রা‌স্টি এবং বিদ‌্যুৎ, জ্বালা‌নি ও খ‌নিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হা‌মিদ।

 

এই অ্যাওয়ার্ড অর্জনকে স্বপ্ন যাত্রার শুরু হিসেবেই দেখছে বিজয়ীরা। আন্তর্জাতিক পুরষ্কার লাভ করা বেশ কিছু সংগঠক জানিয়েছে, ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অর্জন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি অর্জনে রেখেছে বড় ভূমিকা।’

 

২০২০ সালে ‍‍`শিশুদের নোবেল‍‍` খ্যাত আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার লাভ করেছেন সাদাত রহমান। এই পুরস্কার জয়ের পেছনে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অর্জনকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘মফস্বল এলাকায় থেকে জেলা উপজেলা পর্যায়ে সামাজিক সংগঠন করলে খুব কম মানুষই সেটাকে উৎসাহিত করে। অনেকে পাগলামি বলেও অভিহিত করে। যখন নড়াইলে কাজ করি একই অবস্থা হয়েছিল আমার ক্ষেত্রে।

 

 কিন্তু ২০১৮ সালে যখন আমি জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পেলাম, এরপর থেকে জেলা প্রশাসক, এসপি সবাই একটা মূল্যায়ন করতে শুরু করে। তারাও আমাদের কথা শুনতে চায়। আমরা যারা কাজ করি। আমরা তো আসলে অ্যাওয়ার্ডের জন্য কাজ করি না। আমাদের নিজেদের ভালো লাগা থেকে। অ্যাওয়ার্ড পেলে আমরা বুঝতে পারি যে আমাদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। 

 

যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন, পলিসি মেকিং করছেন তারা মূল্যায়ন করছেন। আমাদের সহকর্মীরা শুধু এলাকা নয় সারা দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখছে। যেনো সবখানে কাজ করা যায়। স্বীকৃতি পেলে সেটা জেলা, বিভাগ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে সহায়তা করে।’

 

২০১৭ সালে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড জয় করা বরিশাল ইয়ুথ সোসাইটির (বিওয়াইএস) প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক ফায়েজুদ্দিন বেলাল (ফায়েজ বেলাল) ব্রিটিশ রাজপরিবার থেকে সম্মানজনক ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অর্জন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বলবো, এটা দেশের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরষ্কার। যেখান থেকে আমাকে তুলে ধরতে পেরেছি।

 

 অন্যদের কাছেও আমার পরিচয় তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে এই অ্যাওয়ার্ড লাভের মাধ্যমে। আমাদের সমাজে যেসব তরুণরা কাজ করছেন, জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড তাদেরকে তুলে ধরছে, পরিচিত করাচ্ছে। সাধারণত আমরা যেসব পুরষ্কার দেখি, তাতে শহরের লোকজনকে তুলে ধরা হয়। কিন্তু জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড একেবারেই আলাদা। সেখানে বরিশাল, রংপুরের মত প্রান্তিক অঞ্চলের তরুণদেরও তুলে ধরা হয়েছে। এই অ্যাওয়ার্ড একটা অনুপ্রেরণা।

 

 এই অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমেই আমি বিশ্ব জুড়ে পরিচিতি পেয়েছি। বিবিসিতেও আজকে ইন্টারভিউ দিলাম। সেখানে বলেছি জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড না হলে হয়তো আমরা এমন বিস্তৃতভাবে কাজ করতে পারতাম না। তারা অনেকের সঙ্গে যুক্ত করে দিচ্ছে। এটা সম্ভব হচ্ছে ইয়াং বাংলার জন্য। এ জন্য ছোট বা বড় যে কাজ হোক। এখানে আবেদন করা উচিত। কারণ এখানে পুরস্কার পেলে সেটা আরও বড় ভাবে কাজ করতে সহায়তা করবে।’


তিনি আরও বলেন, ‘ইয়াং বাংলার মত একটি প্লাটফর্মকে আমি পেয়েছি জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অর্জনের মাধ্যমে। বাংলাদেশে তরুণদের সবচাইতে বড় এই প্লাটফর্মের কারণেই দেশজুড়ে আমি কাজ করতে পেরেছি। যে কোন সংগঠনের জন্য এটি অনেক বড় একটি সুযোগ।’

 

সমাজ সংস্কার ও নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের ৩০ বছর বা তার কম বয়সী সামাজিক উদ্যোক্তাদের এশিয়ার সেরা ৩০ জনের তালিকায় স্থান পান আমাল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ইসরাত করিম ইভা। ২০২১ সালে তিনি অর্জন করেন জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। এটি তার ক্যারিয়ারের সবচাইতে বড় অর্জন বলে মনে করেন ইসরাত ইভা। তিনি বলেন, ‘বিদেশে অনেক অর্জন রয়েছে। কিন্তু এটি নিজ দেশের স্বীকৃতি অর্জন। 

 

নিশ্চিতভাবেই এটি বড় বিষয়। জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এটি কোন ব্যক্তিকে প্রদান করা হয় না। একটি সংগঠনকে দেয়া হয়। অর্থাৎ ব্যক্তি কেন্দ্রিক নয়, প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হচ্ছে। আমি হয়ত আমার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকবো না, অন্য কেউ দায়িত্ব নেবে। কিন্তু এটি প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি প্রদান করছে। একা কিছু করার সম্ভব নয়। এই পুরষ্কার সংগঠনের সবাইকে দেয়া হচ্ছে।’


তিনি আরও বলেন, ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের সবচেয়ে বড় দিক হলো, আপনি যেখানকারই হোন না কেনো। আপনার কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে। আমাদের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। আমরা এখন চেষ্টা করছি আরও কাজ করার, মানুষের পাশে থাকার। এটি একটি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।’

 

একুশে সংবাদ/প্রে.রি/পলাশ

জাতীয় বিভাগের আরো খবর