সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

নারী পাচার করে মুদি দোকানি থেকে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক!

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:৫৯ পিএম, ১৩ অক্টোবর, ২০২১

র‌্যাব মধ্যপ্রাচ্যে মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা মুদি দোকানদার থেকে তিনটি ওভারসিজ এজেন্সির মালিক বনে যাওয়া টুটুল ও সহযোগী তৈয়বসহ ৮ জনকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। বৈধ কিছু এজেন্সিও এ মানবপাচারকারী চক্রের অপকর্মে সঙ্গ দিয়েছে। রাজধানীর কারওয়ানবাজারে সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব বলছে,  নেপথ্যের হোতারাও শিগগিরই ধরা পড়বে।

কে না চায় একটু ভালোভাবে বাচতে? রংপুরের আসমাও ভেবেছিল দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিলেই বদলে যাবে জীবন। আর তাই তো দালালরূপী তৈয়বের ফাঁদে পা দিয়ে চলে যায় জর্ডান। সেখানে পৌঁছে একবার মাত্র যোগাযোগ হয় পরিবারের সঙ্গে। তারপর থেকেই নিখোঁজ হয় তিনি।
 
আসমার চাচা বলেন, তৈয়বকে বার বার বলা হয়েছে ভাই আসমার সঙ্গে আমাদের একটু কথা বলিয়ে দেন, যোগাযোগ করিয়ে দেন। কিন্তু তৈয়ব কোনো কর্ণপাত করেননি।
 
শুধু এই একটি মানবপাচারকারী চক্রের হাতে প্রতারিত ভুক্তভোগীর সংখ্যা প্রায় শতাধিক। কেউ আবার সর্বস্ব বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা দিয়ে চার বছর ধরে অপেক্ষা করছেন দেশ ছাড়তে।
 
এক ভুক্তভোগী নারী বলেন, তৈয়বের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আজ চার বছর চলে আমি তাকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছি।
 
অথচ এ চক্রের মূল হোতা টুটুল মুদি দোকানদার, আর তার সঙ্গী তৈয়ব চা দোকানি। গত ৫ বছরে বিদেশে পাঠানোর নামে প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা।

র‍্যাব-৪ এর সিও মোজাম্মেল হক বলেন, বিদেশে যারা নারী পাচার করে বা মানবপাচার করে তাদের সঙ্গে সক্ষতা গড়ে উঠে। অন্য আরেক সহকারী তৈয়ব আলী চা দোকানদার ছিল। এই প্রতারকদের প্রতারণ ছিল অভিনব।
 
সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব বলছে, মূলত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে পাঠাতে নারীদেরকেই টার্গেট করতো চক্রটি। গন্তব্যে পৌঁছানোর পরই কেড়ে নেওয়া হতো পাসপোর্ট, মুঠোফোন। এরপর করা হতো জিম্মি, পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হতো আরও অর্থ। আর এই অপকর্মে তাদের সহযোগিতা করত অনুমোদিত কিছু রিক্রুটিং এজেন্সিও।
 
মোজাম্মেল হক বলেন, অনুমোদিত যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি আছে তাদের মাধ্যমেই তারা এ নারীদের পাঠিয়ে থাকে। বিদেশে যাওয়ার পর পরই বিমানবন্দর থেকেই তাদের পাসপোর্ট নিয়ে নেওয়া হয়। ফলে তারা খুব অসহায়ত্ব বোধ করত এবং তাদের বিক্রি করে দেওয়ার পরে তারা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারত না। তখন টুটুল উল্টো তাদের অভিভাবকদের চাপ প্রয়োগ করত। বলত, আরও দুইলাখ টাকা না দিলে সে বাংলাদেশে আসতে পারবে না, পাসপোর্ট পাবে না আবার বেতন ও পাবে না।
 
প্রভাবশালী কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।
 
এর আগে সকালে রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা টুটুল ও তার সহযোগীসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক এএসপি আ ন ম ইমরান খান।


একুশে সংবাদ/জা/তাশা

জাতীয় বিভাগের আরো খবর