উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলের রেকর্ড অনুযায়ী ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৮।শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ১১টার দিকে এ কম্পন অনুভূত হয়। এর ফলে রাবাত ও মারাকাশসহ গোটা এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় নেমে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৫০০ বছরের মধ্যে ওই এলাকায় এত বড় ভূমিকম্প হয়নি। ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও সরকারিভাবে কোনো প্রাণহানির খবর জানানো হয়নি। খবর আর আল জাজিরার।
মার্কিন এ সংস্থাটি জানিয়েছে, আটলাস পর্বতমালার ওকাইমেদেনের স্কাই রিসোর্টের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়েছিল। যেখানে ভূমিকম্পটি সংঘটিত হয়েছে সেখানে সাধারণত ভূমিকম্প হতে দেখা যায় না। কিন্তু শুক্রবার যে ভূমিকম্পটি হয়েছে— এটি ওই অঞ্চলে গত ১২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল।
ইউএসজিএস বলেছে, ১৯০০ সাল থেকে এই ভূমিকম্পের ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৭ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প দেখা যায়নি। তবে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। ভূমিকম্পের পর মারাকাশ পুরাতন শহর থেকে ক্ষয়ক্ষতির খবর আসে। পুরোনো ইতিহাস সমৃদ্ধ এই শহরটি ভূমিকম্পে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটি তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও এবং ছবিতে দেখা গেছে, ধুলোয় ছেয়ে গেছে রাস্তাঘাট। কোথাও কোথাও ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে। এছাড়া ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সাধারণ মানুষ কীভাবে ছুটোছুটি করছেন সেগুলোও অনেক ভিডিওতে উঠে এসেছে।
মারাকাশের এক বাসিন্দা জানায়, তিনি শহর থেকে অ্যাম্বুলেন্স বের হতে দেখেছেন। এছাড়া ভূমিকম্পে কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের ফলে অনেক ভবনের দেয়াল ফেটে গেছে। এই কারণে ধুলোর মেঘ তৈরি হয়েছে। হতবাক বাসিন্দারা নিরাপত্তার জন্য, স্থানীয় ভবনের বাইরে এবং রাস্তায় দৌড়াচ্ছে।
ইসাওরিয়ার এক বাসিন্দা বলেন, যদিও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খুবই কম, কিন্তু আতঙ্ক বেশি। ভূমিকম্পের সময় আমরা চিৎকারের শব্দ শুনতে পেয়েছি। মানুষ এখন বিভিন্ন চত্বর ও ক্যাফেতে অবস্থান করছে। বেশিরভাগ মানুষ রাতে বাইরেই থাকার পরিকল্পনা করছেন।
শুক্রবারের ভূমিকম্পটি তুলনামূলকভাবে অগভীর ছিল। এটি মাটির মাত্র ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে সংঘটিত হয়েছিল। ইউএসজিএস জানিয়েছে, আটলাস পর্বতমালার ‘অসমান্তরাল-বিপরীত ফল্টিংয়ের’ কারণে ভূমিকম্পটি হয়েছে।
মরক্কোতে এর আগে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল ২০০৪ সালে। ৬ দশমিক ৩ মাত্রার সেই ভূমিকম্পে দেশটিতে প্রায় ৬০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
একুশে সংবাদ/স ক