সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

শাবি পরিস্থিতি সমাধানে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল ঢাকায়

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১০:৫৩ এএম, ২২ জানুয়ারি, ২০২২
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান পরিস্থিতি সমাধানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে ঢাকায় পৌঁছেছেন। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট ১৩ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

 শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকালে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তাদের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। এর আগে শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে তারা বিমানযোগে ঢাকায় পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।

পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আছেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুলসি কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক মহিবুল আলম, ভৌত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদ তালুকদার, ফলিত বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন. খায়রুল ইসলাম রুবেল।

এই বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুলসি কুমার দাস বলেন, আমরা এখন ঢাকায় আছি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি। আলোচনা কখন হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কখন হবে তা এখনো সঠিক বলতে পারছি না।

এর আগে, বিকেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকায় আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের আলোচনা করার জন্য ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তাব দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকায় গিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হলেও পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অনলাইনে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে আমরণ অনশনে বসেছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন করছেন।

গত রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

এ ঘটনায় অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে- আন্দোলনরত দুইশ-তিনশ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটাানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চারদিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ে। এছাড়া পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয় বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে। তখন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, হলে নানা সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান চেয়ে তারা বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদকে কল করেন। প্রভোস্টকে ফোন দিলে তিনি বলেন, বের হয়ে গেলে যাও, কোথায় যাবে? আমার ঠেকা পড়েনি। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জরুরি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, কীসের জরুরি? কেউ তো আর মারা যায়নি। পরে প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্রীরা। 

রোববার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। তার আগে বিকেলে তিন দফা দাবি মেনে না নেওয়ায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যকে পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে নির্দেশনা অমান্য করেই আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হতে দেখা গেছে।

একুশে সংবাদ/রাফি

শিক্ষা বিভাগের আরো খবর