সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

জিডিপি প্রবৃদ্ধি: দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:০৮ পিএম, ১৫ অক্টোবর, ২০২০

করোনা সংকটে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের অর্থনীতি মন্দায়। এর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জানান দিচ্ছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সর্বশেষ অর্থনৈতিক পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২০ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি আসবে ৩.৮ শতাংশ, যা বিশ্বের তৃতীয় এবং এশিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে শুধু গায়ানা ও দক্ষিণ সুদান।

আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়, ২০২০ সালে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে মাইনাস ১০.৩ শতাংশ, পাকিস্তানের মাইনাস ০.৪ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার মাইনাস ৪.৬ শতাংশ, ভুটানের ০.৬ শতাংশ, মালদ্বীপের মাইনাস ৮.৬ শতাংশ, আফগানিস্তানের মাইনাস ৫ শতাংশ এবং নেপালের প্রবৃদ্ধির হার অপরিবর্তিত বা শূন্য (০) শতাংশ থাকবে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপাল ছাড়া সব দেশের অর্থনীতি সংকোচনে। এর মধ্যে ৩.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় দেশ ভারতের অর্থনীতি নিয়ে বলা হয়, করোনা মহামারির কারণে এ বছর ভারতের অর্থনীতি ১০.৩ শতাংশ সংকোচিত হবে, যা ১৯৪৭ সালে দেশটির স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে বড় সংকোচন। করোনায় দীর্ঘ শাটডাউনের কারণে দেশটির ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ চাকরি হারিয়েছে। অর্থনীতি চাঙ্গা করতে সরকার প্রণোদনা দিলেও তা এখনো খুব একটা কাজে লাগেনি। এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে দেশটির অর্থনীতি ২৩.৯ শতাংশ সংকোচিত হয়।

গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের যৌথ বার্ষিক সভা শুরু হয়েছে। এবার সভাটি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভার অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার আইএমএফ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক প্রকাশ করে। আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ বছর বিশ্ব জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৪ শতাংশ সংকুচিত হবে। ২২টি দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হবে। বাকি সব দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সংকুচিত বা নেতিবাচক হবে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, জাপানের মতো বড় অর্থনীতির দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হবে বলে মনে করছে আইএমএফ। গীতা গোপীনাথ বলেন, বিশ্বে মন্দার প্রভাব খুব বেশি মারাত্মক না হলেও যথেষ্ট গভীর। এ মহামারি দীর্ঘ মেয়াদে ও অসম হবে, যা অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

এর আগে গত এপ্রিল মাসে প্রকাশিত আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, ২০২০ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ২ শতাংশ। ছয় মাস পরে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়ে দিল সংস্থাটি। অবশ্য গত জুন মাস থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য খুলতে শুরু করেছে। আইএমএফ বলছে, আগামী বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৪.৪ শতাংশ হবে এবং ২০২৫ সালে হবে ৭.৩ শতাংশ। এর আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি রগনার গুডমান্ডসন আইএমএফ কান্ট্রি ফোকাসে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা আশাবাদী ২০২০ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকবে, ২০২১ সালে পূর্ণমাত্রায় ঘুরে দাঁড়াবে।’

একুশে সংবাদ/কা/এআরএম

অর্থ-বাণিজ্য বিভাগের আরো খবর