সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

প্রেমের মূল্য ৮০ লাখ টাকা, তাও নারী ভেবে মিললো পুরুষ!

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ১২:০০ পিএম, ২৮ অক্টোবর, ২০২২

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

 

গত বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর ও সদর থানায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ওয়েব বেইসড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

 

অভিযুক্তরা হলেন,সুজন তালুকদার ওরফে শা ওন ওরফে তানভীর হাসান ওরফে জাহিদ হাসান ওরফে লুৎফর রহমান এবং তাঁর সহযোগী পুষ্পা আক্তার ওরফে আবিরা জাহান কলি।

 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় এক যুবকের। সম্পর্ক প্রেমে রূপ নেয় কিছুদিনের মধ্যে। একপর্যায়ে বিয়ের সিদ্ধান্তও নেন তারা। হবু বধূর আবদার মেটাতে ওই যুবক প্রায় ৮০ লাখ টাকা দেন তাকে। তারপর হঠাৎ একদিন যোগাযোগ বন্ধ করে দেন ওই তরুণী। প্রতারণার শিকার যুবক মামলা করলে বেরিয়ে আসে যার পেছনে এত টাকা খরচ করলেন সে আসলে মেয়ে নয়, তার মতই তাগড়া যুবক। পরবর্তীতে প্রতারণার ঘটনায় গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী যুবক।

 

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের উত্তর বিভাগ। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা প্রতারণায় অভিযুক্ত মূল হোতা সুজন তালুকদার ওরফে শাওন ওরফে তানভীর হাসান ওরফে জাহিদ হাসান ওরফে লুৎফর রহমান এবং তার অপকর্মের সহযোগী পুষ্পা আক্তার ওরফে আবিরা জাহান কলিকে গ্রেফতার করে।

 

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার তারিক বিন রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় ২০ অক্টোবর টাঙ্গাইল সদর থেকে প্রথমে আবিরা জাহানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরে অভিযান চালিয়ে চক্রের হোতা সুজন তালুকদারকে গ্রেফতার করা হয়।

 

তিনি বলেন, সুজন তালুকদার নারীদের নামে একাধিক ভুয়া ফেসবুক আইডি খোলেন। এরপর তাঁর পরামর্শ অনুযায়ী পুষ্পা বিভিন্নজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। গ্রেফতারকৃতদের মোবাইল থেকে অসংখ্য অশ্লীল ভিডিও উদ্ধার করেছে ডিবির কর্মকর্তারা।

 

এছাড়া তারা দীর্ঘদিন থেকেই এভাবে অসংখ্য ব্যাক্তির থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানায় পুলিশ। এছাড়া মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, মামলার বাদী ফেসবুকে এক তরুণীর সঙ্গে পরিচিত হন। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্ক হয় তাদের মধ্যে। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা। ২০১৯ সালের ৭ জুলাই বিবাদী বাদীর নিকট তার মৃত মায়ের মিলাদের জন্য ১ লাখ টাকা ধার হিসেবে চান যা এক মাসের মধ্যে ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর থেকে বিভিন্ন অজুহাতে গেল তিন বছরে বাদীর কাছ থেকে তার কথিত প্রেমিকা বিভিন্ন সময় মোবাইল ব্যাংকিং, কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

 

আসামি সুজন তালুকদার ওরফে শাওন ওরফে তানভীর ওরফে জাহিদ ওরফে লুৎফর নারী এবং পুরুষের একাধিক ছদ্মনামে ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে অপরিচিত বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পুরুষদের আকৃষ্ট করতে সে অপর আসামি পুষ্পা আক্তার ওরফে আরিফা জাহানকে ব্যবহার করে। বিশ্বাস অর্জনের জন্য পাঠানো হয় অশ্লীল ভিডিও।

 

উক্ত আসামিরা যোগসাজশে গেল ৪/৫ বছর ধরে একই কায়দায় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে দুই তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

 

একুশে সংবাদ/স/এসএপি

অপরাধ বিভাগের আরো খবর