সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

অর্ধগলিত লাশের রহস্য উদঘাটন করলো সিআইডি। 

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০১:১৪ পিএম, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাতকে নিখোঁজের ৩ দিন পর ধান ক্ষেতে কিশোরীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ। পরবর্তীতে এই ক্লুলেস হত্যাকান্ডের রহস্য উম্মোচনসহ মূল আসামীকে গ্রেফতার করলো সিআইডি পুলিশ। এ সংক্রান্ত আজ বেলা ১২ টায় সিআইডি সদরদপ্তর মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রিফিং করেন, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্ত ধর। তিনি বলেন

গত ইং ১৭/১১/২০২১ তারিখ নিখোঁজ হয় খুশি বেগম (১৫) পিতা- কবির মিয়া, সাং- গৌরীপুর, থানা- ছাতক, জেলা- সুনামগঞ্জ। সে মুক্তিরগাঁও হাফিজিয়া মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। নিখোঁজের বিষয়ে তার পিতা ইং ১৯/১১/২০২১ তারিখ ছাতক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। স্থানীয় লোকজন ইং ২১/১১/২০২১ তারিখ রবিবার সকালে গ্রামের একটি ধান ক্ষেতে গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় নিখোঁজ খুশি বেগম (১৫) এর লাশ দেখতে পেয়ে তার বাড়ীতে খবর দেয়। তাৎক্ষনিকভাবে বাড়ীর লোকজন ঘটনাস্থলে যেয়ে লাশটি নিখোঁজ খুশি বেগম মর্মে সনাক্ত করে। স্থানীয় থানা পুলিশ লাশটির সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে। উক্ত ঘটনায় মৃতের বাবা কবির মিয়া (৫৬) কর্তৃক অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার মামলা নং- ২৫/৩৩১, তারিখঃ ২৪/১১/২০২১ খ্রিঃ, ধারাঃ ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড- ১৮৬০ রুজু হয়। উক্ত ঘটনাটি দেশজুড়ে বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বেশ গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হলে সিআইডি ঘটনাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর  এর সার্বিক দিক নির্দেশনায় উক্ত হত্যার ঘটনাটি কেন এবং কিভাবে সংঘঠিত হয়েছে, ঘটনায় কে বা কারা জড়িতসহ বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ভিকটিমের পরিবার, ঘটনাস্থল ও আশপাশ এলাকার বিভিন্ন উৎস হতে সংগ্রহ করা হয়। পরবর্তীতে সংগৃহীত বিভিন্ন তথ্য ও উপপাত  বিচার বিশ্লেষণ করে জানা যায় যে, কবির মিয়া ছাতক বাস স্ট্যান্ডে ট্রান্সপোর্ট সংশ্লিষ্ট পেশার সাথে নিয়োজিত।

তার  ৬ মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে খুশি বেগম (১৫) সর্ব কনিষ্ঠ। সিলেট শহর এলাকার ইউসুফ নামীয় এক লন্ডন প্রবাসীর সাথে প্রায় ২ বছর পূর্বে পরিবারের সম্মতিতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভিকটিম খুশি বেগম (১৫) এর বিয়ে হয়। স্বামীর অবর্তমানে একই এলাকার মোঃ মহিউদ্দিন (২২) সাথে খুশি বেগমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মোঃ মহিউদ্দিন খারগাঁও হাফিজিয়া মাদ্রাসা হতে ২০১৮ সালে হেফজ্ পাশ করে দুই বছর বেকার ছিল। 

সমস্ত বিষয়াদি যাচাই বাছাই করে এই ক্লুলেস হত্যাকান্ডের সাথে মোঃ মহিউদ্দিনের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে এলআইসির একটি চৌকস টিম উক্ত হত্যাকান্ড সংঘঠনকারী আসামী- ১। মোঃ মহিউদ্দিন  (২২) পিতা- মৃত আজগর আলী, সাং- গৌরীপুর, থানা- ছাতক, জেলা- সুনামগঞ্জকে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন কেডিএস এলাকা হতে গ্রেফতার করে সিআইডি পুলিশ।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী স্বীকার করে যে, তার সাথে ভিকটিম খুশি বেগম (১৫) এর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বেশ কিছুদিন যাবৎ খুশি বেগম তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। মোঃ মহিউদ্দিন বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি পরিবার ও সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের কাছে প্রকাশ করার কথা বলে। তখন আসামী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গত ১৭/১১/২০২১ তারিখ রাতের বেলা ভিকটিম খুশি বেগমকে কৌশলে বাড়ী থেকে ডেকে পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতে নিয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

একুশে সংবাদ//বেলাল/র.ন

অপরাধ বিভাগের আরো খবর