সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

৪৬০কোটি টাকার মালিক কম্পিউটার অপারেটর নুরুল গ্রেফতার

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

দালালীর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া টেকনাফ বন্দরের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর নুরুল ইসলাম (৪১)’কে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আটক করেছে র‌্যাব।  সেসময় তার কাছ থেকে  জাল টাকা, বিদেশী মুদ্রা ও মাদক উদ্ধার।

র‌্যাব জানায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও র‌্যাবের যৌথ অভিযানে গত মধ্যরাতে ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দালালীর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া টেকনাফ বন্দরের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার অপারেটর মোঃ নুরুল ইসলাম (৪১) কে গ্রেফতার করা হয়। 

তার  পিতার নাম আব্দুল মোতালেব সে পশ্চিম কানাইনগর, ধুনিয়া, সদর, ভোলার বাসিন্দা।  উক্ত অভিযানে সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় জাল নোট ৩,৪৬,৫০০, মিয়ানমার মুদ্রা ৩,৮০,০০০, ইয়াবা ট্যাবলেট ৪,৪০০ পিস এবং নগদ ২,০১,১৬০ টাকা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত নুরুল ইসলাম তার অপরাধ সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করে। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় যে, সে ২০০১ সালে টেকনাফ স্থল বন্দরে চুক্তিভিত্তিক দৈনিক ১৩০ টাকা হারে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরী নেয়। 

বন্দরে কর্মরত থাকাকালীন তার অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে সে চোরাকারবারী, শুল্ক ফাঁকি, অবৈধ পণ্য খালাস, দালালি ইত্যাদির কৌশল রপ্ত করে। অতঃপর তার অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে সে বন্দরে বিভিন্ন রকম দালালীর সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়। এক পর্যায়ে একটি দালালী সিন্ডিকেট তৈরী করে। ২০০৯ সালে সে চাকুরী ছেড়ে দেয়। তারই আস্থাভাজন একজনকে উক্ত কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করে। কিন্তু সে দালালী সিন্ডিকেটটির নিয়ন্ত্রণ রেখে দেয়। এভাবে সে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।  
 
 নুরুল টেকনাফ বন্দর কেন্দ্রীক দালালী সিন্ডিকেটের অন্যতম মূলহোতা। তার সিন্ডিকেটের ১০-১৫ জন সদস্য রয়েছে। যারা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে দালালী কার্যক্রমগুলো করে থাকে। এই সিন্ডিকেটটি পণ্য খালাস, পরিবহন সিরিয়াল নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পথিমধ্যে অবৈধ মালামাল খালাসে সক্রিয় ছিল। সিন্ডিকেটের সহায়তায় পার্শ্ববর্তী দেশ হতে কাঠ, শুটকী মাছ, বরই আচার, মাছ ইত্যাদির আড়ালে অবৈধ পণ্য নিয়ে আসা হত। চক্রটির সদস্যরা টেকনাফ বন্দর, ট্রাক স্ট্যান্ড, বন্দর লেবার ও জাহাজের আগমন-বর্হিগমন নিয়ন্ত্রণ করত। 

সে চিহ্নিত মাদক কারবারীদের যোগসাজশ ছিল বলে সে জানায়। এছাড়া সে অন্যান্য অবৈধ পণ্যের কারবারের জন্য হুন্ডি সিন্ডিকেটের সাথে সমন্বয় এবং চতুরতার সাথে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েজ কারসাজী করত। অবৈধ আয়ের উৎসকে ধামাচাপা দিতে সে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে; তন্মধ্যে, এমএস আল নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এমএস মিফতাউল এন্টারপ্রাইজ, এমএস আলকা এন্টারপ্রাইজ, আলকা রিয়েল স্টেট লিমিটেড এবং এমএস কানিজ এন্টারপ্রাইজ অন্যতম। 

ইতোমধ্যে ঢাকা শহরে তার ৬ টি বাড়ি ও ১৩ টি প্লট ক্রয় করেছে। এছাড়াও সাভার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নামে/বেনামে সর্বমোট ৩৭ টি জায়গা/প্লট/বাগানবাড়ি/বাড়ি রয়েছে। তার অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের আনুমানিক মূল্য ৪৬০ কোটি টাকা। তার নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ১৯ টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। বর্তমানে সে জাহাজ শিল্প ও ঢাকার সন্নিকটে বিনোদন পার্কে বিনিয়োগ করছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


একুশে সংবাদ/উজ্জ্বল/আরিফ

অপরাধ বিভাগের আরো খবর