সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

কোটালীপাড়ায় প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন,বাড়িঘর ভাংচুর

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৩:৫০ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিজলবাড়ি বিনয় কৃষ্ণ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস সহ ৫ শিক্ষক কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ বুধবার সকালে বিনয় কৃষ্ণ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিদ্যালয়টির মাঠ থেকে শুরু হয়ে কালিগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় বিদ্যালয়ের মাঠে এসে শেষ হয়।

 

এরপর বিক্ষোভকারীরা প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসের উপর হামলাকারীদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। খবর পেয়ে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রনে আনে। এদিকে একই ঘটনায় দুপুর ১২ থেকে ১টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী স্থানীয় কালিগঞ্জ বাজারে কোটালীপাড়া উপজেলার সর্বস্থরের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীর ব্যানারে একটি মানববন্ধ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় শিক্ষক সরওয়ার হোসেন তালুকদার, নন্দ লাল বিশ্বাস , জগদীগ চন্দ্র হালদার, হাবিবুর রহমান মুকুল, নাসির উদ্দিন, রঞ্জন হাজরা, তাপস বাড়ৈ, শিক্ষার্থী বিউটি সমাদ্দার, মানিক রায় বক্তব্য রাখেন। বক্তারা প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসের উপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন। জানাগেছে, গত মঙ্গলবার বিনয় কৃষ্ণ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র পিতাশ হালদার স্কুল ড্রেস না পড়ে বিদ্যালয়ে আসলে প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস তাকে শাসন করেন।

এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে পিতাশ হালদার বিদ্যালয় ত্যাগ করে বাড়িতে চলে যায়। বিদ্যালয় ছুটির পরে বাড়ি ফেরার পথে ছাত্র পিতাশ ও তার পিতা পঙ্কশ হালদার লোকজন নিয়ে প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসের উপর হামলা চালায়। এ সময় বিদ্যালয়টির শিক্ষক কর্মচারীরা এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা তাদেরকেও মারধর করে।

এদের মধ্যে গুরুতর আহত প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস, শিক্ষক উত্তম অধিকারী, ল্যাব অপারেটর সুদেপ অধিকারী, কর্মচারী জয় সেন ও বুলেট দত্তকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র ভর্তি করা হয়েছে। বিদ্যালয়টির বাংলা বিষয়ের শিক্ষক স্বপন রায় বলেন, একজন প্রধান শিক্ষক ছাত্রকে শাসন কারণে এভাবে মারধরের শিকার হলেন। আমরা এ ২ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাথে সাথে হামলাকারীদের দৃৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।

এ বিষয়ে ছাত্র পিতাশ হালদারের পিতা পঙ্কশ হালদারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার পরে আমরা শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ছিলাম। তারপরেও আজ বুধবার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মিলে আমার ও আমার ভাইদের ৪টি বসতঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে। এ ঘটনায় আমি প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। হিজলবাড়ি গ্রামের কালিপদ হালদার বলেন, প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস সহ ৫জনের উপর হামলা চালিয়ে পিতাশ ও তার পিতা পঙ্কশ হালদার অপরাধ করেছে। পক্ষন্তরে পঙ্কশ হালদার ও তার ভাইদের বসতঘরে হামলা চালিয়ে যারা ভাংচুর করেছে তারাও অপরাধ করেছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এই দুই পক্ষেরই শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন বলেন, গত কাল মঙ্গলবারের বিষয়টি জানার সাথে সাথে আমি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে প্রধান শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস সহ অন্যান্য রোগীদের শারীরিক খোঁজখবর নিয়েছি। এটি সত্যিই খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাথে সাথে বুধবার পঙ্কশ হালদারের বসতঘরে যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোটালীপাড়া থানার ওসি মুহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, এলাকার পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমি কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

একুশে সংবাদ/এনএস

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর