সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

মদনে কৃষকের রহস্যজনক মৃত্যু অভিযোগের তীর পল্লী চিকিৎসকের দিকে

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:৪৯ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

নেত্রকোনার মদনে হারেছ মিয়া(৬০) নামের এক কৃষকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার(২২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার নায়েকপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক শাহজাহান খানের বাড়িতে মারা যায় সে। হারেছ মিয়া উপজেলার মাখনা গ্রামের মৃত পাতার আলীর ছেলে। ভুল চিকিৎসায় কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকায় নানান সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। 

নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে নিজের আমন জমিতে কীটনাশক স্প্রে করতে হাওরে যায় কৃষক হারেছ মিয়া। স্প্রে করে বাড়িতে এসে সকালের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারের লোকজন তাকে নায়েকপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক শাহজাহান খানের ফার্মেসিতে নিয়ে যান। সেখানে কৃষক হারেছ মিয়ার মুখে নল ঢুকিয়ে ওয়াশ করা চেষ্টা করেন পল্লী চিকিৎসক শাহজাহান খান। তার পেটের উপড় পা দিয়ে একাধিক বার চাপ দিলে মুখ দিয়ে ভাত বের হয়। ভাতের সাথে রক্ত বের হলে সেখানেই মারা যায় হারেছ মিয়া। পরে পরিবারের লোকজন তাকে দ্রæত মদন হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরহ চিকিসক শান্তুনু শাহা মৃত ঘোষণা করেন। 

এ দিকে হারেছ মিয়ার মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, শাহজাহান খান একজন পল্লী চিকিৎসক। কিন্তু তিনি নিজেকে মা ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখছেন। তার ভুল চিকিৎসায় কৃষক হারেছ মিয়া মারা গেছে। তার বিরুদ্ধে এলাকায় ভুল চিকিৎসার অগনিত অভিযোগ রয়েছে। 

নিহত কৃষক হারেছ মিয়ার স্ত্রী রওশন আক্তার বলেন, আমার স্বামী ধান ক্ষেতে কীটনাশক দিতে সকালে হাওরে যায়। হাওর থেকে এসে ভাত খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে নিয়ে নায়েকপুর গ্রামের শাহজাহান ডাক্তারের কাছে গেলে মুখ দিয়ে নল ঢুকিয়ে ওয়াশ করা হয়। শাহাজাহান ডাক্তার পেটের উপড় উঠে পা দিয়ে চাপ দিলে ভাত ও রক্ত বের হয় মুখ দিয়ে। তখন শরীর নাড়াছাড়া বন্ধ করে দিলে মদন হাসপাতালে নিয়ে আসি। আমরা গরীব মানুষ। এর বেশী কিছু বলতে পারবো না।   

মদন হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার শান্তুনু শাহা জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই হারেছ মিয়া মারা যান। পুলিশ আসছে তারাই বিষয়টি দেখবেন।

পল্লী চিকিৎসক শাহজাহান খান বলেন, মাখনা গ্রামের হারেছ মিয়া বিষ পান করে বুধবার সকালে আমার কাছে আসে। মুখ দিয়ে নল ঢুকিয়ে ওয়াশ করেছি। পেট ভর্তি ভাত থাকায় পুরোপুরি নল ঢুকানো সম্ভব হয়নি। পা দিয়ে পেটে চাপ দেওয়াও মুখ দিয়ে ভাত ও রক্ত বের হয়ে আসে। সে আমার ওখানে মারা গেলে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলি। এখন লোকমুখে শুনতেছি লাশ নাকি থানায় আছে। 

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) ফেরদৌস আলম বলেন, হারেছ মিয়ার লাশ ময়না তদন্তের জন্য বুধবার দুপুরে নেত্রকোনা মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

 

একুশে সংবাদ/মোঃ সাকের খান /আ

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর