সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

সমাজ কমিটির সভাপতি জয়নালের নেতৃত্বে চলছে দিনদুপুরে পাহাড় কাটা 

একুশে সংবাদ প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ৩১ জুলাই, ২০২১

কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ১নং ওয়ার্ডের পূর্ব কলাতলীস্থ চন্দ্রিমা হাউজিং সংলগ্ন বখতিয়ার ঘোনা এলাকায় কয়েকমাস আগে গঠন করা হয়েছে পাহাড়িকা সমাজ পরিচালনা কমিটি। এই সমাজের সভাপতি জয়নাল আবেদীন। তার নেতৃত্বে গেল সপ্তাহ দশ দিন ধরে চলছে দিনদুপুরে পাহাড় কাটা। আর তাতে খন্ড খন্ড করে প্লট তৈরি করে বিক্রি হচ্ছে প্রতিগন্ডা ৬০/৭০ হাজার টাকা করে। ইতোমধ্যে সেখানে তৈরি করা হয়েছে শতাধিক ঘর। এখনো পাহাড় কেটে জয়নালের নেতৃত্বে সেখানে ঘর তৈরি হচ্ছে দিনরাত। এতে তার সহযোগী হিসেবে রয়েছে ফোরকান ও জালাল।

সমাজপতি জয়নাল আবেদিন বখতিয়ার ঘোনা এলাকার আবদুল মান্নানের ছেলে। 

জানা গেছে, কলাতলী চন্দ্রিমার ঘোনাস্থ বখতিয়ার ঘোনা এলাকায় সরকারি  পাহাড়গুলো দখল ও বিক্রির প্রতিযোগিতা চলছে গত এক বছর ধরে। এর মধ্যে আব্দুল মজিদ, প্রবাসী নাছির, ইফতেকার উদ্দিন, মঞ্জুর আলম ও সালামত উল্লাহ বাবুলের নাম উঠে এসেছে। তাদের নামে সবাই খন্ড খন্ড ভাবে সরকারি পাহাড়গুলো বিক্রি করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এরপর চলছে পাহাড় কেটে স্থাপনা তৈরি। বর্তমানে বখতিয়ার ঘোনা এলাকায় ১৫টি স্থানে চলছে পাহাড় কর্তন। একই সাথে ২০টির অধিক জায়গায় পাহাড় কেটে তৈরি করা হচ্ছে ঘর।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি পাহাড় দখল, কর্তন এবং বিভিন্ন অপরাধ সাথে জড়িত এই জয়নাল আবেদিন। সে খুচরা ইয়াবা বিক্রেতা বলেও জানান তারা।সমাজের এই সভাপতির বিরুদ্ধে কটেজ থেকে পতিতাসহ আটকের অভিযোগও রয়েছে। তাছাড়া, সমাজ কমিটি বলে যারা ব্যানার দিয়েছে তারা সবাই সরকারি পাহাড় কাটার সাথে জড়িত। সবাই পাহাড় কেটে ঘরও তৈরি করেছে। মূলত পাহাড় দখল ও কর্তন করার জন্য সমাজ কমিটির নাম ব্যবহার করে অপরাধ আড়াল করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের কোনো অভিযান বা নজরদারী না থাকায় দিন দিন সরকারি পাহাড় দখলের পর কর্তন চলছে বখতিয়ার ঘোনায়। এরমধ্যে অধিকাংশ  রোহিঙ্গা নাগরিক। রয়েছে মোবাইল ছিনতাইকারী ও মাদক কারবারি। কয়েকজন সৈকতে ক্যামরাম্যানের আড়ালে মাদক কারবারি ও ছিনতাইয়ে জড়িত। 

পাহাড়িকা সমাজ কমিটির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বলেন, এখানে সবাই গরীব মানুষ। পাহাড়ে থাকে। প্রায় ১৪০ থেকে ১৪৫ পরিবারের মতো রয়েছে। সবাই পাহাড় কেটে ঘর তৈরি করেছে। আমিও পাহাড় কেটে ঘর করেছি। বর্তমানে যারা পাহাড় কেটে ঘর করেছে সবাই বিভিন্ন জনের দখলে থাকা পাহাড় থেকে এক গন্ডা বা দুই গন্ডা করে কিনেছি। আমি ইফতেকার উদ্দিনের কাছ থেকে নগদ টাকা দিয়ে পাহাড় কিনে সেখানে ঘর করেছি। 

কক্সবাজার ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, সরকারি পাহাড় দখল ও কর্তন খুবই অপরাধ। যদি কেউ দখল বা কর্তন করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। এতে আমি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো।

এ ব্যপারে সদর সহকারী কমিশনার ভুমি নু এমং মারমা বলেন, বর্তমানে জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কারনে মানুষ যখন মানবিক কাজে ব্যস্ত সেখানে কিছু অসৎলোক পাহাড় কাটছে এটা জঘন্য অপরাধ বিষয় নিয়ে দ্রুত আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের কলাতলী বিট অফিসার সোহেল রানা বলেন, চন্দ্রিমার ঘোনাস্থ বখতিয়ার ঘোনা এলাকায় কিছু জমি জেলা প্রশাসনের খাস খতিয়ানে আর কিছু বন বিভাগের। তবে বন বিভাগের জমিতে নতুন করে কোন ঘর উঠেনি আর পাহাড়ও কাটা হয়নি। যেগুলো পাহাড় কাটা হয়েছে বা হচ্ছে সব সরকারি খাস খতিয়ানের।

পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শেখ নাজমুল হুদা বলেন, সরকারি পাহাড় দখলকারী ও পাহাড় কর্তনে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। চন্দ্রিমার ঘোনা ও বখতিয়ার ঘোনা এলাকায় যারা পাহাড় কাটছে, দখল করে বিক্রি ও স্থাপনা করে যাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


একুশে সংবাদ/শাহাদত/প

সারাবাংলা বিভাগের আরো খবর